বিভ্রান্তি দূর করতে আরোগ্য সেতু অ্যাপ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নয়া কী বিজ্ঞপ্তি জারি হল
আরোগ্য সেতু অ্যাপ নিয়ে ক্রমশঃ মানুষের মনে সন্দেহ দানা বাঁধছে। এই অ্যাপ আদৌও করোনা সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হচ্ছে নাকি দেশবাসীর ওপর নজরদারি রাখতে তা নিয়েই দ্বিধা–ধন্দ তৈরি হচ্ছে। এর ওপর আবার বিরোধীদের উস্কানিমূলক মন্তব্য আরও দেশবাসির মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে আরোগ্য সেতু সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে অরোগ্য সেতুর মাধ্যমে কিভাবে মানুষের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা ব্যবহার ও শেয়ার করা হয়। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সমাজসেবী ও বিশেষজ্ঞরা আরোগ্য সেতুর গোপনীয়তা নিয়ে এবং কিভাবে এই অ্যাপটি কাজ করে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, এর পাশাপাশি অ্যাপটি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ও কোথায় তথ্য সংগ্রহ করে রাখা তাও জিজ্জাসা করা হয়েছিল সরকারকে। কেন্দ্র এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।

এই অ্যাপ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি
সোমবার তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ‘আরোগ্য সেতু ডেটা অ্যাক্সেস অ্যান্ড নলেজ শেয়ারিং প্রটোকল, ২০২০', নামে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে যে ব্যবহারকারী এই অ্যাপের মাধ্যমে নিজের স্বাস্থ্যের অবস্থান জানতে পারবেন এবং তা সরকারের সঙ্গে শেয়ার করবেন, এছাড়াও এই অ্যাপ ব্যবহারকারীর আশেপাশে কোনও করোনা রোগী রয়েছে কিনা তাও জানান দেবে। সরকার ব্যবহারকারীর কোনও গোপন তথ্য জানতে চাইছে না বরং তাঁদের ব্যক্তিগত পরিসর ও তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। এটি কেবলমাত্র করোনার প্রকোপ কমানোর জন্যই তৈরি হয়েছে।

তথ্য মজুত থাকবে ১৮০দিন
নীতি আয়োগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে আরোগ্য সেতুতে তথ্য মজুত থাকবে ১৮০ দিন। উল্লেখযোগ্যভাবে তা অসংক্রমণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ৪৫ দিন ও সংক্রমিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বর্তমানে ৬০ দিন তথ্য মজুত থাকবে। ব্যবহারকারি চাইলে তথ্য মুছে ফেলার জন্য সরকারকে অনুরোধ করতে পারেন। নাম, মোবাইল নম্বর, বয়স, লিঙ্গ, পেশা বা বাইরে সফরের অভিজ্ঞতা, এই সব তথ্য অ্যাপ থেকে মুছে যেতেও পারে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এনআইসির মাধ্যমে সংগৃহীত জনতাত্ত্বিক তথ্য নিয়মানুসারে অ্যাপেই থাকবে যতক্ষণ না ব্যবহারকারি তা মুছে ফেলার অনুরোধ জানাচ্ছে সরকারকে, এই অনুরোধের কমপক্ষে ৩০ দিনের মধ্যে তথ্য মুছে দেওয়া হবে।'
সরকারিভাবে জানানো হয়েছে আরোগ্য অ্যাপ নিয়ে সমালোচনা তীব্র হওয়ার কারণেই এই নিয়ম তৈরি করা হয়। মাই গভমেন্টের সিইও অভিষেক সিং বলেন, ‘ব্যবহারকারীর তথ্য অ্যাপে সুরক্ষিত এবং ৯৮ মিলিয়ন মানুষ এটি ডাউনলোড করেছে, ১২ হাজার মানুষের তথ্য সার্ভারে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।' গোপনীয়তা লঙ্ঘনের উদ্বেগকে দূর করবে নতুন এই বিজ্ঞপ্তি, জানিয়েছেন তিনি।

এনআইসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তথ্য সংগ্রহের
আরোগ্য সেতু অ্যাপের জন্য জাতীয় তথ্য কেন্দ্রকে (এনআইসি) তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র আরও স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে এই তথ্য শুধুমাত্র সংক্রমিত ব্যক্তি বা সংক্রমণ হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে বা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে এমন ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য সরকারের যে কোনও দপ্তর বা মন্ত্রকের সঙ্গে ভাগ করা যেতে পারে, এমনকি সরকারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দরকারের জন্য এই তথ্য তৃতীয় পার্টির সঙ্গেও শেয়ার করা যায়। মন্ত্রক সূত্রে আরও বলা হয়েছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী অ্যাপ তৈরির ৬ মাসের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। প্রয়োজনে আরও আগেও পর্যালোচনা করতে পারবে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে অ্যাপের নিয়ম ৬ মাসের জন্যই কার্যকর করা হয়েছে।

ই–পাসের ব্যবস্থা আরোগ্য সেতুতে
মূলতঃ করোনা আক্রান্তদের সনাক্ত করতে তৈরি হয়েছিল এই অরোগ্য সেতু অ্যাপ, যেখানে টেলিমেডিসিন ও কাজের জন্য সফর বাধ্যতামূলকের জন্য এখন ই-পাস দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

ঋণ মেটাতে দিল্লির ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা বিক্রি করবেন অনিল অম্বানি