টিএনপিসিবি-এর নির্দেশে বাতি নিভল তুতিকোরিনের স্টারলাইট কপার স্মেলটার কারখানার
তামিলনাড়ু পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (টিএনপিসিবি)-এর চেয়ারম্যান অবিলম্বে স্টারলাইটের এই কারখানাটি বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি কারখানাটির বিদ্যুৎ পরিষেবাও বব্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাতি নিভে গেল থুদুকুড়ি বা তুতিকোরিনের স্টারলাইট কপার স্মেলটার প্ল্যান্ট-এর। বুধবারই তামিলনাড়ু পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (টিএনপিসিবি)-এর চেয়ারম্যান অবিলম্বে স্টারলাইটের এই কারখানাটি বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি কারখানাটির বিদ্যুৎ পরিষেবাও বব্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সূত্রের খবর বৃহস্পতিবার ভোর সোয়া পাঁচটাতেই স্টারলাইট কপারের এই ইউনিটটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
টিএনপিসিবি অর্ডারে বলা হয়েছে গত ১৮ - ১৯ মে তারিখে তাদের কর্মকর্তারা কারখানাটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছেন, 'ইউনিটটি তার উৎপাদন ফের শুরু করার জন্য কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।'
এরপরই, তিরুনেলভেলির জয়েন্ট চিফ এনভায়র্নমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সুপারিশ করেন। তারপর টিএনপিসিবি জল (দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৩১এ ধারা এবং বায়ু (দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৩৩এ ধারা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ এবং কারখানা বন্ধের এই আদেশ জারি করেছে।
তুতিকোরিনের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই কারখানার কারণে এলাকায় বড় আকারের দূষণ ছড়াচ্ছে। আশপাশের অন্তত ১৮টি গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে এ অঞ্চলে একসঙ্গে কয়েকশ' মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাদের প্রত্যেকেরই মধ্যেই শ্বাসকষ্ট, বমি-বমি ভাব এবং গলা সংক্রমণের মতো উপস্বর্গ দেখা গিয়েছিল। সাধারণত বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে এরকম লক্ষণ দেখা যায়। এই অসুস্থতার ঠিক আগ দিয়েই কারখানা থেকে গ্যাস লিক করার অভিযোগও উঠেছিল।
দূষণ নিয়ন্ত্রণের নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগে এই কারখানাটি বন্ধ করার আদেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল, শেষ পর্যন্ত ফের কারখানাটিকে চালু করার অনুমতি দেয়। এই একই বছরে আরেকটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সারা বছরের অতিরিক্ত দূষণের জন্য স্টারলাইট কারখানাকে ১০০ কোটি টাকার জরিমানাও করেছিল। যদিও স্টারলাইট বরাবরই দাবি করেছে তারা দূষণ নিয়ন্ত্রণের নিয়ম অনুসরণ করে।
উল্লেখ্য থুদুকুড়িতে গত দুই দিনে পুলিশের গুলিতে ১১ জন বিক্ষোভকারী মারা যান। বুধবার সন্ধ্যায়, তামিলনাড়ুর সরকার একটি জরুরী 'পাবলিক এমার্জেন্সী' ঘোষণা করেছে। তুতিকোরিন, তিরুনেলভেলি ও কন্ন্যাকুমারী জেলায় ৫ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
বুধবারই মাদ্রাজ হাইকোর্ট তুতিকোরিনে স্টারলাইট-এর দ্বিতীয় কপার কারখানা নির্মাণের কাজ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল। আগামী ২৩ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্মাণ কাজে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে আদালত জানিয়েছে। তার মধ্যে স্টারলাইট সংস্থাকে পরিবেশগত অনুমোদন আদায় করতে হবে।