রাজীব গান্ধীর খুনিদের মুক্তির সিদ্ধান্ত তামিলনাড়ু সরকারের, ক্ষুব্ধ রাহুল
১৯৯১ সালের ২১ মে এলএলটিই-র আত্মঘাতী বোমায় তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে নিহত হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। পুলিশি অভিযানে ধরাও পড়ে অভিযুক্তরা। মোট ২৬ জনকে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনজন অর্থাৎ মুরুগন, শান্তন ও পেররীবালনের ফাঁসির সাজা বহাল থাকে। ২০০৩ সালে তারা প্রাণভিক্ষার আবেদন জানায় রাষ্ট্রপতির কাছে। কিন্তু, ১১ বছর ধরেও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাষ্ট্রপতি ভবন। শেষ পর্যন্ত তারা সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায়। গতকাল শীর্ষ আদালত তাদের ফাঁসির সাজা মকুব করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। বিচারপতিরা বলেন, দু'দশক জেলে কাটাতে হয়েছে। রোজই ভেবেছে ফাঁসি হয়ে যাবে, কিন্তু ফাঁসি হয়নি। এই অমানুষিক অবস্থার অবসান ঘটানো দরকার। সরকার যখন এতদিনেও ওদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, তখন মৃত্যুদণ্ড মকুব করা হল।
এরপরই ডিএমকে, এমডিএমকে, সিপিআই, সিপিএম রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানায়, তাদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। জয়ললিতা বলেছেন, দু'দশক ধরে ওরা জেলে পচছে। এবার মানবিকতার খাতিরে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
জয়ললিতার চরম বিরোধী বলে পরিচিত এমডিএমকে নেতা ভাইকো পর্যন্ত বলেছেন, "আমি ম্যাডাম জয়ললিতার এই সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানাই। তামিলনাড়ুর লাখ লাখ মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখে উনি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।" বিরোধী দল ডিএমকে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি হয়ে এদিন মিছিল বের করে।
এদের ছেড়ে দেওয়া কি ঠিক হচ্ছে? জয়ললিতার বক্তব্য, এরা বিচারাধীন বন্দি নয়। জেলে ভালো আচরণ করেছে। ভালোভাবে থেকেছে। তাই রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে এদের মুক্তির ব্যবস্থা করবেন। তবে কেন্দ্রকে বলা হয়েছে, বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে ওদের এক্ষুণি ছেড়ে দিতে। নইলে রাজ্য সরকারই তিনদিন পর মুক্তি দেবে।
এদিকে, তামিলনাড়ু সরকারের এই সিদ্ধান্তে তরজা শুরু হয়েছে। রাহুল গান্ধী বলেছেন, "আমি ফাঁসির বিরুদ্ধে। ওদের ফাঁসি দিলে আমার বাবা ফিরে আসবে না জানি। তবে, জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটা ঠিক নয়। দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে যদি মারার পর কেউ মুক্ত হয়ে যায়, তা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কী হবে?" কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, এ ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।