তৃণমূল নীরবে বাড়ছে ত্রিপুরায়, মানুষের বিজেপি-ভীতি দূর করতে এবার মহামিছিলের ডাক
ভোট আসছে, কিন্তু মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। তাঁরা বিরোধী দল করবে কি, বিরোধী দলের কথা বলতেও ভয় পাচ্ছে। মানুষের সেই ভয় দূর করে গণতন্ত্রের আওয়াজ তুলতে এবার ফের ত্রিপুরার পথে নামতে চলেছে তৃণমূল।
ভোট আসছে, কিন্তু মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। তাঁরা বিরোধী দল করবে কি, বিরোধী দলের কথা বলতেও ভয় পাচ্ছে। মানুষের সেই ভয় দূর করে গণতন্ত্রের আওয়াজ তুলতে এবার ফের ত্রিপুরার পথে নামতে চলেছে তৃণমূল। শুক্রবার তিন শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের দলবদলের পর সোমবার তৃণমূল মিছিল করার প্রস্তুতি শুরু করেছে।
এই মিছিল হবে ত্রিপুরার রাজধানী শহর আগরতলায়। রাজ্যের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষকে নিয়ে এই মিছিলে হাঁটবেন তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। ত্রিপুরার ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সংসদ সুস্মিতা দেবের নেতৃত্বে মিছিল হবে। থাকবেন তৃণমূলে ফিরে আসা সুবল ভৌমিক থেকে শুরু করে ত্রিপুরার বর্তমান নেতা-নেত্রীরা।
এই মিছিলে অন্যতম ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে নিয়োগ দুর্নীতি ও আইন-শৃঙ্খলা সমস্যা। বিধানসভা নির্বাচনের আরে তিনমাসও দেরি নেই। তাই সব দলই চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কালবিলম্ব না করে তৃণমূল কংগ্রেসও ময়দানে নেমে পড়েছে। তাঁরা দলীয় সংগঠন বাড়ানোর কাজও শুরু করে দিয়েছে।
তৃণমূল এখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছোটো ছোটো সভার উপর বিশেষ জোর দিয়েছে। তার মধ্যে যোগদান পর্বও চলছে। শুক্রবারই তেলিয়ামোড়ায় সিপিএম ও বিজেপি ছেড়ে তিন শতাধিক কর্মী-সমর্থক যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এদিনই বনমালিপুরে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি হল বনমালিপুর কংগ্রেসের ব্লক ওয়ার্কিং কমিটির সভাপতি শ্রীচণ্ডী ভট্টাচার্যের যোগদানে। এর আগে পূজন বিশ্বাসের ত্রিপুরা ডেমোক্রেটিক পার্টি মিশে গিয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে।
ত্রিপুরা তৃণমূলের ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাগত জানান কংগ্রেস ছেড়ে আসা চণ্ডী ভট্টাচার্যকে। একইসঙ্গে সিপিএম ও বিজেপি ছেড়ে আসা ৩০০ কর্মী-সদস্যকেও স্বাগত জানান। রাজীব সিপিআইএম এবং বিজেপি থেকে ৩০০ জন সদস্য আজ যোগ দিলেন আমাদের সঙ্গে। সকলকে দলে আন্তরিকভাবে স্বাগত। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুস্মিতা দেব, তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন পূজন বিশ্বাস, খোয়াই জেলার কনভেনর অশোক দাশগুপ্ত প্রমুখ।
এবার তৃণমূল আগরতলায় মিছিলের ডাক দিয়েছেন। তৃণমূল যে উপনির্বাচনে হেরে বসে যায়নি। তাঁরা যে ফের শক্তি সঞ্চয় করে বৃহত্তর পার্টিতে পরিণত হয়েছে, তার প্রদর্শন হবে মিছিলে। আগামীদিনে ত্রিপুরায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে তাঁরা বৃহত্তর লড়াই চালিয়ে যাবে। কোনও শক্তিই তাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছে ত্রিপুরা নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, এদিন যোগদানকারীদের তৃণমূলে যোগদানে বাধা দেওয়া হয়। তবু সেই বাধা অতিক্রম করে তিন শতাধিক কর্মী-সমর্থন তৃণমূলের সভায় এসে যোগদান করেন।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মানুষ আমাদের সঙ্গে আসতে চায়। কিন্তু তাণরা ভয়ে কিছু বলতে পারছে না। ত্রিপুরার অবস্থা এতই ভয়ানক যে সবাই আতঙ্কে রয়েছে। এই অবস্থায় আমরা মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছি। তাই ছোটো ছোটো সভা ও জনসংযোগে জোর দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়লেও তৃণমূল যে ফের ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তার প্রমাণ এই যোগদান ও মিছিলের প্রস্তুতি।
একুশে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূলের নজর পড়েছে ত্রিপুরায়। দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরায় রাজ্যের একাধিক নেতা কাজ করে চলেছেন। আর সেই কাজের ফল এবার হাতেনাতে মিলছে বলে জানান তৃণমূলের নেতারা। কংগ্রেসকে ভেঙে ত্রিপুরায় তৃণমূল বাড়তে শুরু করেছিল। এখনও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। তৃণমূলের দাবি, এখন ত্রিপুরার মানুষ তৃণমূলের দিকে আসতে শুরু করেছে।