কোভিড প্যারোলে মুক্তি ৩,৪৬৮ জন বন্দী নিখোঁজ, খোঁজ শুরু করল তিহার জেল কর্তৃপক্ষ
কোভিড প্যারোলে মুক্তি ৩,৪৬৮ জন বন্দী নিখোঁজ, খোঁজ শুরু করল তিহার জেল কর্তৃপক্ষ
গত বছর করোনা ভাইরাস মহামারির জন্য তিহার জেল থেকে প্যারোলে ছাড়া হয়েছিল ৬,৭৪০ জন বন্দীকে। যার মধ্যে নিখোঁজ ৩,৪৬৮ জন বন্দী। জেল কর্তৃপক্ষ এখন এইসব বন্দীদের খোঁজার জন্য দিল্লি পুলিশের সহায়তা চাইছে।
করোনার কারণে বন্দীদের মুক্তি
জানা গিয়েছে, অধিকাংশ বন্দী এবং বিচারাধীন বন্দী এইচআইভি, ক্যান্সার, কিডনি বিকল, হেপাটাইসিস বি ও সি, হাঁপানি ও যক্ষ্মা রোগে ভুগছিল। এইসব বন্দীদেরই গতবছর জেল থেকে ছাড়া হয় সংশোধনাগারে করোনা রোগ বৃদ্ধির কারণে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ সংশোধনাগার হল তিহার, এখানে একসঙ্গে ১০,০২৬জন বন্দী একসঙ্গে থাকতে পারেন।
তিনটে জেল থেকে ছাড়া হয় ১,১৮৪ জনকে
সূত্রের খবর, যাদেরকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে দিল্লির তিনটি কারাগার তিহার, মাণ্ডোলি ও রোহিনী থেকে ১,১৮৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। জেল সূত্র বলেছে, 'এই বন্দীদের সাধারণত আট সপ্তাহের জন্য ছাড়া হয়েছিল, পরে তা সময় সময় বাড়ানো হয়। এই বন্দীদের ৭ ফেব্রুয়ারি ও ৬ মার্চের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল। কিন্তু ১,১৮৪ জনের মধ্যে ১১২ জন নিখোঁজ। যখন জেল কর্তৃপক্ষ ওই বন্দীদের পরিবার থেকে তাদের বিষয়ে জানতে চায়, তারাও জানিয়েছে যে বন্দীরা কেউই তাদের বাড়িতে উপস্থিত নেই।'
অন্তর্বতী জামিনে মুক্তি ৫,৫৫৬ জন
অন্তর্বতী জামিনে ৫,৫৫৬ জন বিচারাধানী বন্দীদের মধ্যে ফেরৎ এসেছে মাত্র ২,২০০ জন। তিহার জেল সূত্রের খবর, 'আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার কথা ছিল এ বছর ৬ মার্চ থেকে এবং তাদের মার্চের শেষের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল।' প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবের পরে জেলগুলি দোষী সাব্যস্ত ও বিচারাধানী কয়েদিদের মুক্তির মানদণ্ড নির্ধারণের জন্য সমস্ত রাজ্যে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করেছিল। এই নির্দেশকে অনুসরণ করে রাজ্যগুলি বন্দীদের ৩০-৬০ দিনের জন্য জামিনে মুক্তি দেয়।
দিল্লি কমিটির বিবৃতি
দিল্লিতে এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি হিমা কোহলি। এই কমিটিতে রয়েছেন দিল্লি সরকারের মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র) ও অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সত্য গোপাল এবং তিহার জেলের ডিরেক্টর সন্দীপ গোয়েল। নিখোঁজ বন্দীদের বিষয়ে ডিজি গোয়েল বলেন, 'আমরা বিচারাধীন ও দোষী সাব্যস্ত বন্দীদের (যারা আত্মসমর্পণ করেনি) তালিকা দিল্লি পুলিশের কাছে দিয়েছি। কিছু কিছু বিচারাধীন বন্দী এখনও ফিরছে এবং কেউ কেউ আদালত থেকে নিয়মিত জামিন পেয়েছিল, যা নির্ণয় করা হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণ তিহার জেলে
অন্যদিকে তিহার জেল কর্তৃপক্ষের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী বুধবার এই জেলে ৬৭টি সক্রিয় করোনা কেস সনাক্ত হয়েছে বন্দী ও জেল কর্মীদের মধ্যে। জেল কর্মীদের মধ্যে আবার রয়েছে জেল সুপারিনটেন্ডেন্ট এ ২ জন জেলের চিকিৎসক। তিহার জেলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'বর্তমানে তিহারে ২০ হাজার বন্দী রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৭৪ জন বন্দী ও ৩০০ জন কর্মীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। গত সপ্তাহে তিহার জেল কর্তৃপক্ষ বন্দীদের সঙ্গে তাদের পরিবারের সাক্ষাত বাতিল করে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত। এর কারণ হল দিল্লিতে হু হু করে করোনা কেস বাড়ছে।'