আমাকে খুন করে টুকরো টুকরো করে দেবে, পুলিশে আফতাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা
আমাকে খুন করে টুকরো টুকরো করে দেবে, পুলিশে আফতাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা
শ্রদ্ধা ওয়াকারকে তাঁর লিভ ইন পার্টনার আফতাব পুনওয়ালা শ্বাসরোধ করে খুন করে। তারপর শ্রদ্ধার শরীর ৩৫টি টুকরো করে। সেই টুকরোগুলোকে দিল্লির একটি জঙ্গলে ফেলে আসে। আশ্চর্যের বিষয়, এই ধরনের আশঙ্কা শ্রদ্ধার দুই বছর আগেই হয়েছিল। তিনি মহারাষ্ট্রের ভাসাইয়ের তিলুঞ্জে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্তকারী আধিকারিকেরা মঙ্গলবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা
শ্রদ্ধা ওয়াকার পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়ছিলেন, তাঁকে আফতাব পুনমওয়ালা মারধর করেন। আফতাবের পরিবার শ্রদ্ধাকে মারধরের কথা জানত বলেই অভিযোগে শ্রদ্ধা লিখেছিলেন। স্থানীয় পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পরে পুলিশের কাছে আর একটা বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর ও আফতাবের মধ্যে আর কোনও সমস্যা নেই। আফতাবের বাবা-মায়ের সঙ্গে আলোচনার পর তাঁদের সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। তিনি পুলিশকে আফতাবের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ইতিমধ্যে আফতাবের বাবা-মা ও শ্রদ্ধার এক বন্ধু করণ বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন। দিল্লি পুলিশ তাঁদের বয়ান রেকর্ড করার জন্য তলব পাঠিয়েছে।
আফতাবের মারে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শ্রদ্ধা
দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, শ্রদ্ধা তাঁর বন্ধু করণকে হোয়াটস অ্যাপে আফতাব পুনওয়ালার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর করণকে হোয়াটল অ্যাপ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন, তাঁকে আফতাব পুনওয়ালা মারধর করেন। শ্রদ্ধা তাঁর নিজের একটা ছবি হোয়াটস অ্যাপে বন্ধু করণকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে শ্রদ্ধার সারা মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এই ঘটনার পর শ্রদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাত দিন পর তিনি হাসপাতাল থেকে মুক্তি পান।
শ্বাসরোধ করে হত্যার হুমকি আফতাবের
শ্রদ্ধা তাঁর বন্ধু করণকে হোয়াটস অ্যাপে বলেন, আজকে আমাকে আফতাব শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল। সে আমাকে সব সময় ভয় দেখায়। সে আমাকে খুন করে দেবে বলে ব্ল্যাক মেইল করে। আফতাব আমাকে ছয় মাস ধরে মারধর করছে। কিন্তু এতদিন আমার পুলিশের কাছে যাওয়ার সাহস ছিল না। সে আমাকে হুমকি দিয়েছিল, পুলিশের কাছে গেলেই আমাকে মেরে ফেলবে।
মারধরের পরেও সম্পর্কে ছিলেন শ্রদ্ধা
একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে শ্রদ্ধার সঙ্গে আফতাবের পরিচয় হয়। ২০১৯ সালে তাঁরা পারস্পরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০২০ সালে তিনি বন্ধুকে নিজের আতঙ্কের কথা বলেছিলেন। কিন্তু এত মারধরের পরেও শ্রদ্ধা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যায়নি। বরং ২০২২ সালে তাঁরা কল সেন্টারের একটি চাকরি নিয়ে দিল্লিতে চলে যান। দিল্লি যাওয়ার চার দিনের মধ্যেই যে ভাবে আফতাব শ্রদ্ধাকে হুমকি দিত, সেই ভাবেই হত্যা করে। আফতাব শ্রদ্ধাকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারপর তার শরীরের ৩৫টি টুকরো করে। শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁর পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। কারণ তাঁরা এই সম্পর্কটা মেনে নিতে পারেননি।