আজমেরে ভিখারিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, এটিএম কার্ড!
জয়পুর, ৪ অক্টোবর : রাজস্থানের খোয়াজা মইনুদ্দিন চিস্তির দরগার বাইরে সুরু গলিতে রোদ ভিক্ষা করে দিন গুজরান করেন পাপ্পু সিং। প্রতিদিন বিকেল ৫টার মধ্যে যেকরেই হোক ২০০ টাকা নগদ জোগাড় করতেই হয় তাঁকে। তাহলে তিনি তা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ফেলতে পারেন। [ভিক্ষে করে ব্যাঙ্ক ব্যালান্স ১০ কোটি টাকা]
এক দশক হল পাপ্পুর দুটো পা নেই। বিহারের বাসিন্দা পাপ্পু রুজির টানে বহুদিন আগে আজমের শহরে চলে আসে। দরগায় এসে সে আশীর্বাদ নেবে ভেবেছিল। তবে সকলে মিলে ধরে বসিয়ে দিল ভিক্ষা করতে। তখন খানিক রাগ হয়েছিল। তবে পরে পাপ্পু ভাবলেন, হয়ত ভগবান এমনই চাইছেন। [জন্ম থেকে 'পার্লে জি' বিস্কুট ছাড়া আর কিছুই মুখে তোলেনি এই অষ্টাদশী!]
ব্যস, তারপর থেকেই দরগার বাইরে ভিক্ষাবৃত্তি করেই দিন গুজরান করছেন পাপ্পু। প্রতিদিন ২০০ টাকা করে তিনি ব্যাঙ্কে জমা করেন। গত দু'মাসে কত জমিয়েছেন সেটাও বলে দিতে পারেন নির্দ্বিধায়। [আমাজনে 'ফুটন্ত নদী'-র সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা]
আসলে পাপ্পুর ভিখারি হয়েও ব্যাঙ্কে টাকা জমানোর বিষয়টিও হয়েছে অদ্ভুতভাবেই। কয়েকমাস আগে এক নেশাখোর এসে পাপ্পুকে ব্লেড দিয়ে হামলা করে তার থেকে সমস্ত টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে এক সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে এসে পাপ্পুকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাহায্য করেন। [স্ত্রীকে ছেড়ে 'প্রেমে পাগল' শাশুড়িকে বিয়ে করল এক যুবক]
এখন শুধু পাপ্পুই নন, অন্য ভিখারিরাও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা জমাতে শুরু করেছেন। রাজা ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম ত্রিপুরার বাসিন্দা। এরাও এই দরগার বাইরে বসেন ভিক্ষা করতে। তাদের আধার কার্ডও রয়েছে। এছাড়া ব্যাঙ্কে দুজনের যৌথ অ্যাকাউন্টও রয়েছে। নাসিমা খানু নামে এক বৃদ্ধা ভিখারিনীর এটিএম কার্ড পর্যন্ত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
দরগায় যারা আসেন তারা প্রত্যেকেই কম বেশি দান করেন। দিনে গড়ে ৩০০ টাকা করে তাই আয় হয় পাপ্পু, রাজাদের। তবে উৎসবের দিনে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। বেশিরভাগ লোকই খুচরো পয়সা দেন। সেই টাকা স্থানীয় রফিক খানের দোকানে ভাঙিয়ে ১০০ টাকার নোট নিয়ে নেন পাপুরা। তারপরে তা ফেলে দেন ব্যাঙ্কে। আর এভাবেই রোজনামচা কাটে খোয়াজা মইনুদ্দিন চিস্তির বাইরের ভিক্ষুকদের।