আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে নেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা! সংসদে বলল কেন্দ্র, সুপ্রিম চাপেই সুর বদল?
আন্দোলনরত কৃষদের বিরুদ্ধে নেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা! সংসদে বলল কেন্দ্র, সুপ্রিম চাপেই সুর বদল?
সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল খোদ সুপ্রিম কোর্ট। ব্রিটিশ আমলের এই আইনের বর্তমানে কতটা প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়ে বিভিন্ন মহলে। এমতবস্থায় এবার দিল্লির আন্দোলনরত কৃষকদের বড় স্বস্তি দিল কেন্দ্র সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এদিন সংসদে জানানো হয়। এখনও পর্যন্ত আন্দোলনরত কোনও কৃষকের বিরুদ্ধেই বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) মামলা করেনি পুলিশ।
হয়নি কোনও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা
যদিও চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লা অভিযান হোক বা হরিয়ানায় বিজেপি নেতার গাড়ির কাঁচ ভাঙা, প্রতিক্ষেত্রেই শোনা যায় একাধিক কৃষক নেতা ও সহ শতাধিক কৃষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে হরিয়ানা ও দিল্লি পুলিশ। সেই সময় এই বিষয়ে বিস্তর চাপানৌতর হলেও বিশেষ উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি কেন্দ্রকে।
সুপ্রিম চাপে কেন্দ্র
এদিকে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও এই আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কিছুদিন আগেই প্রশ্ন তোলেন প্রদান বিচারপতি এন ভি রমনা। এমনকী বিরোধী কণ্ঠস্বর দমাতে এই আইনের অপব্যবহার হচ্ছে বলেও সতর্ক করেন তিনি। আর তারপরেই ইউএপিএ নিয়ে সাবধানী পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্র সরকার। সূত্রের খবর, গত ১১ জুলাইয়ের একটি ঘটনায় দুই কৃষক নেতা হরিচরণ সিং এবং প্রহ্লাদ সিং সহ শতাধিক কৃষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে বিজেপি শাসিত হরিয়ানার পুলিশ। যদিও বর্তমানে এই তথ্য ভিত্তিহীন বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র।
কি বলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
এদিকে সম্প্রতি কৃষকদের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা নিয়ে রাজ্যসভায় জানতে চান সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বম। তাঁরই উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান, ২০২০ থেকে ২০ জুলাই, ২০২১ পর্যন্ত কৃষক বিক্ষোভের ঘটনায় দিল্লি পুলিশ ১৮৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা সবাই এখন জামিনে মুক্ত। অন্যদিকে নিত্যানন্দ রাই আরও জানান, "দিল্লি পুলিশের তথ্য মতে, প্রতিবাদী কৃষকদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত কোনো মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ বা অন্য কোনো সন্ত্রাসবিরোধী আইন যেমন ইউএপিএ-এর বিধান প্রয়োগ করা হয়নি।"
নভেম্বরের শেষ থেকেই দিল্লি সীমান্তে একটানা আন্দোলনে কৃষকরা
এদিকে কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে নভেম্বরের শেষ থেকেই দিল্লি সীমান্তে একটানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যের কৃষকরা। আর তার জেরেই মাঝে মাঝে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে টিকরি, সিংঘু, গাজী বর্ডার। এমনকী সম্প্রতি সংসদের বাদল অধিবেশ চলাকালীন সময়েও যতন্তমন্তরে বিক্ষোভ সামিল হয়েছেন দিল্লির প্রতিবাদী কৃষকেরা।