যেভাবে আন্তর্জাতিক চাপে অভিনন্দন বর্তমানকে ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান!
যেভাবে আন্তর্জাতিক চাপে অভিনন্দন বর্তমানকে ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান!
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯। পুলওয়ামা হামলার ১২ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে তত দিনে। এরপরই ভোররাতে এক অভিযানে ভারত বুঝিয়ে দেয় যে জওয়ানদের বলিদান ব্যর্থ হবে না। চোখে চোখ রেখে পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে এয়ারস্ট্রাইক চালানো হয়। এর একদিন পরেই পাকিস্তানি হামলা রুখতে গিয়ে পাকিস্তানের হাতে ধরা পড়েন অভিনন্দন বর্তমান। তিনদিন তাঁকে হেফাজতে রেখেছিল পাকিস্তান। পরে কূটনৈতিক চাপে (পাকিস্তান অবশ্য বলছে শান্তির বার্তা দিতে) তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।
পাকিস্তানের হেফাজতে অভিনন্দন
বালাকোট অভিযানের একদিন পর, অর্থাৎ ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা নাগাদ ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন পাকিস্তান বায়ুসেনার ২৪টি বিমানের। তাতে ছিল ৮টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ-২১ বাইসন, সুখোই-৩০এমকেআই ও মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান পাল্টা ধাওয়া করে। পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ গুঁড়িয়ে দেন অভিনন্দন বর্তমান। তবে তাঁর বিমানকেও গুলি করে নামানো হয়।
অভিনন্দনের ভিডিও সামনে আনে পাকিস্তান
সেদিনই দুপুর ৩টে ৩০ মিনিট নাগাদ জানানো হয় যে ভারতীয় বায়ুসেনার একটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ও তার পাইলটের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পাকিস্তান এরপর দাবি করে, তাদের হেফাজতে রয়েছেন পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। সেদিনই সন্ধ্যায় অভিনন্দন বর্তমানের একটি ভিডিয়ো সামনে আসে। সেখানে পাকিস্তানি সেনার জেরার মুখে অভিনন্দনকে বলতে শোনা যায়, 'আমি এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার এক্তিয়ার রাখি না।' এরপর দেশ জুড়ে উইং কমান্ডরের সাহসিকতা বাহবা কুড়োতে থাকে।
পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়াতে থাকে ভারতের বিদেশমন্ত্রক
বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়, ভারতের আশা তাঁকে অক্ষত অবস্থায় তাড়াতাড়ি দেশে পাঠানো হবে। শুরু হয় কূটনৈতিক টানাপোড়েন। আন্তর্জাতিক আইনের কথা তুলে ধরে ভারত ক্রমশ পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে থাকে।
পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়িয়ে বিবৃতি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনামের হ্যানয় থেকে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'আমার মনে হয়, ভারত ও পাকিস্তান থেকে কিছু যুক্তিযুক্ত এবং আকর্ষণীয় খবর আসবে।' তারপরই অভিনন্দন বর্তমানের দেশে ফেরা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এই জল্পনা শুরু হতেই ইমরান খান ঘোষণা করেন যে ১ মার্চ ছেড়ে দেওয়া হবে অভিনন্দন বর্তমানকে।
চাপের মুখে অভিনন্দনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান
১ মার্চ বিকেলেই উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের হাতে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু, দু'বার হস্তান্তরের সময় বদল করে পাকিস্তান। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান শেষে ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ৯টা ২১ মিনিটে দেশের মাটিতে পা রাখেন উইং কমান্ডার।
ফের ককপিটে ফেরেন অভিনন্দন
পাকিস্তানের হেপাজত থেকে দেশে ফেরার তিনদিনের মাথায় ককপিটে ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। এর দীর্ঘ ৬ মাস পর ককপিটে ফেরেন অভিনন্দন বর্তমান। গতবছর ২ সেপ্টেম্বর সকালে বায়ুসেনার চিফ মার্শাল বি এস ধানোয়ার সঙ্গে মিগ-২১ ওড়ান তিনি।