নির্বাচনী বুথ, বিয়ের লজেই করোনা টিকাকরণ? কী ইঙ্গিত দিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক?
নির্বাচনী বুথ থেকে বিয়ের লজ, কোভিড টিকাকরণে ব্যবহৃত হতে পারে সবকিছুই
করোনার সম্ভাব্য প্রতিষেধক হিসেবে ইতিমধ্যেই সর্বশেষ ট্রায়ালের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে বেশ কয়েকটি করোনা ভ্যাকসিন। তালিকায় আছে বেশ কিছু দেশীয় টিকাও। এমতাবস্থায় এবার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকাকরণের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকও। এমনকী আগামী বছরের প্রথম ৬ মাসের মধ্যে প্রায় ৩০ কোটি ভারতবাসীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যেও এগোচ্ছে কেন্দ্র। এমনকী টিকারণের সম্ভাব্য স্থান হিসাবে নির্বাচনী বুথ, বিয়ের লজগুলিকেই বেছে নিতে পারে কেন্দ্র, মিলছে এমনওএ ইঙ্গিত।
টিকাকরণের ঠিক কী কৌশল নিচ্ছে কেন্দ্র ?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সূত্রে জানা গেছে, বাছাই করা স্থানগুলিতে একযোগে কমপক্ষে ১০০ জনের টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হতে পারে। পাশাপাশি প্রত্যেক সাইটে কমপক্ষে ৩টি ঘর থাকবে এবং সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকাকরণ চলবে। সরকারি টিকাকরণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিকের মতে, "টিকাকরণের প্রার্থী বাছাই ও ভ্যাকসিন সরবরাহের সুবিধার উপর ভিত্তি করে সাইট বাছা হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষেত্রে ভোটার লিস্ট দেখে নির্বাচনী বুথগুলিকে টিকাকরণ কেন্দ্রে রুপান্তর করা হবে।"
কোন কোন জায়গায় হতে পারে টিকাকরণের কেন্দ্র?
ইতিমধ্যে কেন্দ্রের তরফে টিকাকরণের নির্দেশিকাও পেয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকগুলি। কেন্দ্রের গাইডলাইন মেনেই স্কুল, কলেজ ও কমিউনিটি হলগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশাসনিক সূত্রে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক আধিকারিকের বক্তব্য, "সবরকমের শর্তের ভিত্তিতে পুরসভা অফিস, পঞ্চায়েত ভবন, বিয়ের লজ, হাসপাতাল, রেল হাসপাতাল, প্যারামিলিটারি ক্যাম্প এবং অন্যান্য সরকারি ভবনকে বিচার করে টিকাকরণের কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়া হবে।"
টিকাকরণের ক্ষেত্রে দরকার বিশেষ ভাবনা
টিকাকরণের কৌশলের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কলকাতার জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ প্রান্তর চক্রবর্তী জানান, "পোলিং বুথ বা হাসপাতালে টিকাকরণ কেন্দ্র চালুর পরিকল্পনা ভালো। তবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়কে ভাগে ভাগে ভেঙে দিলে সমস্যা কমবে, বজায় থাকবে শারীরিক দূরত্ব।" সূত্রের খবর, টিকাকরণ কেন্দ্র বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এলাকাবিশেষে কোমরবিডিটির আধিক্য ও বয়সের অনুপাত অনুসারে প্রায় ১০.৩ লক্ষ নির্বাচনী বুথকে বেছে নিতে পারেব স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
সরকারি-বেসরকারি সংস্থার মিলিত প্রয়াসে টিকাকরণ
স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, টিকাকরণ কেন্দ্রে কমপক্ষে তিনটি ঘর দরকার। প্রথম ঘরে সইসাবুদ ও প্রাথমিক পরীক্ষা হবে, দ্বিতীয় ঘরে টিকাকরণ ও তৃতীয় ঘরে টিকা নেওয়ার পর আধঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে প্রার্থীদের। তৃতীয় ঘরে চিকিৎসকরা টিকা পরবর্তী শারীরিক অবস্থা যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করবেন। রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মতে, সরকারি স্থানগুলি ছাড়াও প্রায় ১০০-এর বেশি স্বাস্থ্যকর্মীযুক্ত বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিও টিকাকরণ কেন্দ্রে পরিণত হবে। যদিও প্রত্যন্ত স্থান ও মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে 'মোবাইল ক্যাম্প' করার কথা ভাবা হলেও তা কতটা সুরক্ষিত হবে, সে বিষয়ে সন্দেহ থাকছে।
কৃষি আইনের প্রতিটি ধারা নিয়ে হবে আলোচনা, কৃষক বনাম কেন্দ্র সংঘাতে নয়া মোড়