হিন্দুদের 'সংখ্যালঘু' ঘোষণার ক্ষমতা রাজ্যেরও রয়েছে, হলফনামায় সুপ্রিমকোর্টকে জানাল কেন্দ্র
হিন্দুদের 'সংখ্যালঘু' ঘোষণার ক্ষমতা রাজ্যেরও রয়েছে হলফনামায় সুপ্রিমকোর্টকে জানাল কেন্দ্র
রাজ্য স্তরে সংখ্যালঘুদের চিহ্নিত করার প্রশ্নটি রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল। এই প্রশ্নে তাই রাজ্যগুলি ও কেন্দ্র প্রথমে দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল। এবার অবশেষে নীরবতা ভেঙেছে কেন্দ্র। শীর্ষ আদালতে দাখিল করা একটি হলফনামায় কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়কমন্ত্রক বলেছে, রাজ্য সরকারগুলিও একটি ধর্মীয় বা ভাষাগত সম্প্রদায়কে রাজ্যের মধ্যে 'সংখ্যালঘু সম্প্রদায়' হিসাবে ঘোষণা করতে পারে।'
আদমশুমারি বলছে, দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশি বাস করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষরা। কিন্তু সেখানে একইসঙ্গে দেখা যাচ্ছে, এমন একাধিক রাজ্য রয়েছে যেখানে হিন্দুরাই সংখ্যালঘু। সেই সমস্ত রাজ্যের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু আসলে কারা? এই নিয়েই কেন্দ্রীয় সরকারের কোর্টে বল ঠেলেছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এবার এই প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল কেন্দ্র।
বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি করেছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। অশ্বিনী আবেদন করেছিলেন, দেশে সংখ্যালঘু কে, তা যেন স্থির করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চায় আদালত। এই মর্মে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুমন্ত্রক জানিয়েছে, শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্যও কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়কে সংখ্যালঘু বলে ঘোষণা করতে পারবে।
ভারতে সফরের আগেই করোনা আক্রান্ত ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী, পিছতে পারে সফর
২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে আবেদন করেন অশ্বিনী উপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছিলেন, অরুণাচল প্রদেশ, অসম, গোয়া, মনিপুর, লাক্ষাদ্বীপ, কেরল, মেঘালয়, মিজোরাম, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্পগুলি যথাযথভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। এর পাশাপাশি ১৯৯২ সালের সংখ্যালঘু আইনের ২(সি) ধারা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেন অশ্বিনী৷ এই ধারা অনুযায়ী, কেন্দ্রের হাতে সম্পূর্ণ অধিকার আছে কে বা কারা সংখ্যালঘু, তা নির্নয় করার৷ প্রধান বিচারপতি এস বোবদের বেঞ্চে এই শুনানি হয়। বোবদে ছাড়াও বিচারপতির আসনে ছিলেন বোপান্না ও রামাসুব্রাহ্মণ্যম।
অশ্বিনীর দাবি ছিল, যারা প্রকৃত সংখ্যালঘু, তারাই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির সুবিধা লাভ করছেন না। কারণ সঠিকভাবে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে না। এই মর্মে কেন্দ্র জানিয়েছে, জিউস, বাহাইসম এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা কাশ্মীর, মনিপুর সহ একাধিক রাজ্যে প্রকৃত সংখ্যালঘু। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা নিজেদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে পারেন না। কারণ সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদাভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করতেই পারে৷ এই প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের উদাহরণও দিয়েছে কেন্দ্র। ২০১৬ সালে মহারাষ্ট সরকার ইহুদিদের সংখ্যালঘু বলে চিহ্নিত করেছিল। কর্নাটক সরকার হিন্দি, উর্দু, তামিল, তেলেগু, মালয়লম, কোংকানি, গুজরাটিকে সংখ্যালঘু ভাষা বলে চিহ্নিত করে৷ কাজেই এক্ষেত্রে সংখ্যালঘু নির্ণয় করার অধিকার রাজ্যের হাতে রয়েছেই।'