সারা দেশ ৭ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৭ শতাংশ, দাবি সরকারি সমীক্ষায়
সাড়া দেশ ৭ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৭ শতাংশ, দাবি সরকারি সমীক্ষায়
শনিবার জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর কর্তৃক প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে দেশে সাত বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে সাক্ষরতার হার ছিল প্রায় ৭৭.৭ শতাংশ।
দেশে মোট সাক্ষরতার পরিমাণ
জাতীয় নমুনা জরিপের এই পরিসংখ্যানে দেখা যায় গ্রামাঞ্চলে এই হার ছিল প্রায় ৭৩.৫ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে তা ছিল প্রায় ৮৭.৭ শতাংশ। সমীক্ষায় আরও প্রমাণিত হয়েছে যে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০.৬ শতাংশ ব্যক্তি গ্রাম থেকে মাধ্যমিক বা তার থেকে উচ্চতর স্তরের শিক্ষাগ্রহণ করেছেন, পাশাপাশি শহরাঞ্চলে পড়াশোনা করেছেন ৫৭.৫ শতাংশ মানুষ।
ওই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ভারতে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে সর্বসাকুল্যে মাত্র ১০.৬ শতাংশ ব্যক্তি স্নাতক বা স্নাতক পরবর্তী উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। যেখানে গ্রামে সেই হার ৫.৭ শতাংশ এবং শহরে ২১.৭ শতাংশ।
৩ থেকে ২৫ বছরের মানুষের মধ্যে সাক্ষরতার হার
৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩.৬ শতাংশ মানুষ কখনও শিক্ষা গ্রহণের জন্য নামই নথিভুক্ত করেনি বলেও জানা যায় এই সমীক্ষায়। এই বয়স সীমার ৪২.৫ শতাংশ মানুষ জীবনের কোনও এক পর্যায়ে শিক্ষাক্ষেত্রে নাম নথিভুক্ত করলেও বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শত হস্ত দূরে। যদিও এর মধ্যে ৪৩.৯ শতাংশ ব্যক্তি বর্তমানে পড়াশোনার সাথে যুক্ত বলেও জানা যাচ্ছে।
দেশে মহিলাদের সাক্ষরতার হার
ওই জরিপে আরও দেখা যাচ্ছে এই ক্ষেত্রে মধ্যে ১৬.৬ শতাংশ মহিলা প্রাথমিক স্তরের শিক্ষায় কখনও তাদের নামই নথিভুক্ত করেনি। যদিও ৪২.২ শতাংশ মহিলা জীবনের কোনও এক পর্যায়ে নাম নথিভুক্ত করলেও বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত নন। অন্যদিকে চমকপ্রদ ভাবে শিক্ষাব্যবস্থার তৃণমূল স্তরে মহিলাদের শিক্ষা গ্রহণের হার প্রায় ১০১.২ শতাংশ বলে জানা গেছে ওই সমীক্ষা মারফত।
প্রাথমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের হার
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সারা দেশে নারী পুরুষ নির্বিশেষে শিক্ষা গ্রহণের হার ৮৬.১ শতাংশ ছিল বলে জানা গেছে। যেখানে প্রাথমিক বা নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলে শিক্ষা গ্রহণের হার ৮৯ শতাংশ এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে এই হার ৭২.২ শতাংশের কাছাকাছি।
জেনারেল কোর্স বনাম কারিগরি শিক্ষা
অন্যদিকে দেশের প্রায় ৯৬.১ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ কোর্স করছেন এবং মাত্র ৩.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি বা পেশাদার কোর্সের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের এই শিক্ষা বিষয়ক সমীক্ষায়। তার মধ্যে ৯৫.৫ শতাংশ ছাত্র জেনারেল কোর্স করছেন এবং ৪.৫ শতাংশ ছাত্র পেশাদার কোর্সের সঙ্গে যুক্ত। মেয়েদের মধ্যে এই হার যথাক্রমে ৯৬.৯ শতাংশ ও ৩.১ শতাংশ।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে গ্রামের প্রায় ১৫.৭ শতাংশ এবং শহরের প্রায় ৯.১ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরণের বৃত্তি বা স্কলারশিপ পেয়েছেন। পাশাপাশি গ্রামের প্রায় ৫৪.২ শতাংশ ছাত্র এবং শহরের প্রায় ২৩.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী বিনামূল্যে বা ভর্তুকি যুক্ত পাঠ্যপুস্তক পেয়েছেন।
দেশে কম্পিউটার সাক্ষরতার হার
কেন্দ্র সরকারের এই সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে গ্রামীণ অঞ্চলে ৫ বছর বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ৯.৯ শতাংশ ব্যক্তি কম্পিউটার ব্যবহার করতে সক্ষম। পাশাপাশি ১৩ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ। একইসাথে সমীক্ষাটি চালানোর ৩০ দিনের পূর্বে তাদের মধ্যে ১০.০৮ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে পাঁচ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে, ৩২.৪ শতাংশ মানুষ কম্পিউটার চালাতে এবং ৩৩.৩ শতাংশ ব্যক্তি কম্পিউটারের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সাবলীল বলে জানা গেছে।
এই সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি(আইসিটি) ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে গ্রামীণ পরিবারগুলির প্রায় ৪.৪ শতাংশ এবং শহুরে পরিবার গুলির ২৩.৪ শতাংশের ঘরে কম্পিউটার রয়েছে। একইসাথে প্রায় ১৪.৯ শতাংশ গ্রামীণ পরিবার এবং ৪২ শতাংশ শহুরে পরিবার ইন্টারনেটের সুবিধা ভোগ করে।