কৃষি বিল কৃষকদের স্বার্থেই ছিল, গুরুত্ব বোঝানো যায়নি, বিল বাতিল করে লিখল মোদী সরকার
কৃষি বিল কৃষকদের স্বার্থেই ছিল, গুরুত্ব বোঝানো যায়নি, বিল বাতিল করে লিখল মোদী সরকার
কৃষকদের ভালোর জন্যই আনা হয়েছিল কৃষি আইন। গোটা দেশের নয়, কিছু সংখ্যক কৃষক এর বিরোধিতা করে আন্দোলনে নেমেছিলেন। কৃষি আইনের গুরুত্ব বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনই পেশ হল তিনটি কৃষি আইন বাতিলের প্রস্তাব। সেই প্রস্তাবেই আক্ষেপের সুরে কৃষি আইনের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করল কেন্দ্রীয় সরকার।
শীতকালীন অধিবেশনের প্রথমদিনই সংসদে পেশ করা হয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের এই প্রস্তাব৷ দেশের কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর স্বাক্ষরিত প্রস্তাবপত্রটিতে প্রত্যাহারের উদ্দেশ্য তথা কারণ হিসেবে একাধিক কথা বলা হয়। তার মধ্যেই পঞ্চম কারণ হিসেবে লেখা হয়, ' যদিও মাত্র কিছু সংখ্যক কৃষকই এই আইনের বিরোধিতা করছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছে কৃষকদের এই আইনের গুরুত্ব বোঝাতে৷ একাধিক বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে, নানাবিধ মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ফসলের বর্তমান বিনিময় পদ্ধতি কৃষকদের কাছ থেকে কেড়ে না নিয়ে নতুন পদ্ধতির কথা বলা হয়েছিল। এমনকি, কৃষকরা যাতে তাঁদের ফসলের আরও বেশি দাম পেতে পারেন, তার বন্দোবস্ত করেছিল সরকার। যদিও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই আইনে স্থগিত রাখা হয়েছিল। কোভিড মহামারি চলাকালীন কৃষকরা গোটাদেশের চাহিদা পূরণ করেছেন। এই বছর আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করছি। সেই অমৃত মহোৎসবে আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের রাস্তায় চলতে চাই৷'
যদিও সরকারের এই দাবি নতুন কিছু নয়। এর আগে ১৯ নভেম্বর যখন তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখনও বলেছিলেন, এই আইনের গুরুত্ব কৃষকদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে তাঁর সরকার। মোদীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা শোনা গিয়েছিল কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতের কথাতেও। তিনি আবার এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিভাজনের রাজনীতি দেখতে পেয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, এই ধরণের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করতে চাইছেন।
কলকাতা পুর-নির্বাচনে নিচুতলার কর্মীদের উপরেই ভরসা বঙ্গ বিজেপির, প্রার্থী তালিকায় গুরুত্ব মহিলাদের
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি আইন প্রত্যাহার করলেও আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরছেন না কৃষকরা। কিছুদিন আগেই সংযুক্ত কৃষক মোর্চার নেতা রাকেশ টিকায়েত জানান, এমএসপি সহ অন্যান্য দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। এই মর্মে কিছুদিন আগে দিল্লির সিঙ্ঘু, টিকরি, গাজিপুর সীমান্তে জড়োও হয়েছিলেন তাঁরা। এই মর্মে গত শুক্রবার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ৪০টি কৃষক সংগঠনের সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের এক অংশ দাবি করেন আগামী বছর (২০২৩ সালে) পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই কৃষি বিল সরিয়েছে মোদী সরকার৷ কিন্তু কৃষিবিল বাতিলের দিনেও মহারাষ্ট্রে কৃষক মহাপঞ্চায়েত থেকে কৃষক নেতার আওয়াজ তুললেন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে৷ সোমবার মহারাষ্ট্রের সভা থেকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে বিজেপিকে পরাজিত করার দাবি তোলেন কৃষক সংগঠনের নেতারা৷ এর আগেও রাকেশ টিকায়েত সহ একাধিক নেতার বক্তব্যে কড়া মোদী বিরোধিতা পাওয়া গিয়েছে৷ এখন দেখার এটাই যে কৃষি বিল বাতিল হলেও তা আদপে মোদীর দলকে আগামী নির্বাচনগুলিতে কোনও বাড়তি সুবিধা দেয় কিনা!