এই তিন মানদণ্ডের ওপর মোদী সরকার রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিন বরাদ্দ করে থাকে
রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিন বরাদ্দ
রোগের বোঝা অনুযায়ী টিকাকরণ কর্মসূচিতে কোন রাজ্য কতটা সাফল্য পেল, তার ওপর নির্ভর করছে আগামী ১ মে নতুন পর্যায়ের টিকাকরণে কোন রাজ্য কতটা ভ্যাকসিন পেতে পারে কেন্দ্র সরকারের থেকে। তবে রাজ্যগুলির জন্য একটি মানদণ্ড রয়েছে, সেটা যদি তারা হারিয়ে ফেলে তা হলে কেন্দ্রের থেকে আশা করা বৃথা, আর তা হয় ভ্যাকসিন নষ্ট করা যাবে না কোনওভাবে।
ভ্যাকসিন বরাদ্দের পদ্ধতি
বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভুষণ বলেন, 'যেমনটি আমরা এখন করছি ভারত সরকার তার অংশ থেকে রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিন বরাদ্দ করছে। ১৫ দিন সময় পর ভ্যাকসিন বরাদ্দ করা হয়। তার আগে রাজ্যকে জানাতে হবে যে আগামী ১৫ দিনের জন্য তাদের কতটা ভ্যাকসিনের প্রয়োজন রয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'রাজ্যে কেমন টিকাকরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে এই ভ্যাকসিন বরাদ্দ করা হয়, এটি একটি রাজ্যের সাতদিনের গড় শতকরার ওপর নির্ভর করে। দ্বিতীয়টি হল, রাজ্যে ঠিক কতটা সংক্রমণ হয়েছে, রাজ্যের মোট সক্রিয় করোনা সংখ্যা দেখার পর ভ্যাকসিন বরাদ্দ করা হয়।' তিনি এরপর এও জানান যে তৃতীয়ত সরকার দেখে কোন রাজ্যে কতটা ভ্যাকসিন অপচয় হয়েছে। এটা যদিও নেতিবাচক মানদণ্ড। যে রাজ্যে যত বেশি ভ্যাকসিন নষ্ট, তারা তত কম ভ্যাকসিন পাবে।
ভ্যাকসিন বরাদ্দের মানদণ্ড
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশে কোভিড টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করে কেন্দ্র জানিয়েছে যে উচ্চ করোনার বোঝাযুক্ত জেলাগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে। তবে এই প্রথমবারের মতো এই রাজ্যগুলিতে ভ্যাকসিন বরাদ্দের মানদণ্ড হবে। নতুন পর্যায়ের কোভিড টিকাকরণ কর্মসূচিতে দেশের সব প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেওয়া হবে। এটি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের সরবরাহের ৫০ শতাংশ রাজ্য সরকারগুলিকে ও খোলা বাজারে পূর্ব-ঘোষিত মূল্যে ছাড়তে হবে। এর মধ্যে জনসন অ্যান্ড জনসন, ফাইজার ও মর্ডানা আমদানি করা হবে তাও রয়েছে। তবে তার অর্থ এই নয় যে এই ভ্যাকসিন আপনার বাড়ির কাছের ওষুধের দোকানে পাবেন। রাজ্য সরকারগুলি ছাড়াও কেবলমাত্র বেসরকারী হাসপাতালগুলিতে সংস্থাগুলির কাছ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হবে। এছাড়াও কেন্দ্র সরকার নিজস্ব প্রচেষ্টার মাধ্যমে অগ্রাধিকার জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি সুবিধায় বিনামূল্যে টিকাকরণ এবং রাজ্যে ভ্যাকসিন বরাদ্দ করার বিষয়টির ওপর নজর রাখছে।
সব ভ্যাকসিনের ৫০ শতাংশ রাখবে সরকার
১৯ এপ্রিল ঘোষিত নতুন বিধি অনুসারে, উৎপাদিত সমস্ত ভ্যাকসিনের প্রায় ৫০ শতাংশ ভারত সরকার তার ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত রাখবে। এই পদ্ধতির অধীনে বেসরকারি হাসপাতালে সরকারের নেতৃত্বাধীন ভর্তুকি টিকা শেষ হবে। সরকার অবশ্য বেসরকারী সুযোগ-সুবিধার দ্বারা নির্ধারিত হারের প্রতি নজর রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পরবর্তী টিকাকরণের জন্য নাম নথিভুক্তের পদ্ধতি একই রয়েছে। কোউইন পোর্টালেই নাম নথিভুক্ত করা যাবে। কোউইনে সব কেন্দ্রে প্রত্যেক টিকার মূল্য ও ভ্যাকসিনের মজুত কোউইনে জানাতে হবে। এখনও পর্যন্ত পুরো টিকাকরণ পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে পরিচালনা করছে কেন্দ্র সরকার। টিকাকরণ কর্মসূচি জোর কদমে ভারতে এগিয়ে চলেছে, আর এই সময় দেশে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের মহামারিতে দৈনিক ২ লক্ষ করে করোনা কেস সনাক্ত হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই দেশে দৈনিক ৩ লক্ষের মতো করোনা কেস সনাক্ত হয়। দ্বিতীয় ওয়েভের মহামারি যুব সম্প্রদায়কে বেশি করে আক্রান্ত করছে বলে জানা গিয়েছে।
ভ্যাকসিনের মূল্য
কোভিশিল্ডের উৎপাদনকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) ভ্যাকসিনের মূল্য ঘোষণা করেছে, রাজ্যের ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা প্রতি ডোজ ও কেন্দ্রের জন্য ৬০০ টাকা প্রতি ডোজ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কিনতে হবে। কেন্দ্র সরকার ১৫০ টাকা প্রতি ডোজের মূল্যে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছে।