সোমবারই শেষ বিহারে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনী প্রচার, অন্তিম অস্ত্রে শান শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের
সোমবারই শেষ বিহারে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনী প্রচার
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের প্রচার সোমবার সন্ধ্যায় শেষ হবে। এ বছরের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রয়েছে এনডিএ, বিজেপি ও জনতা দল (একতা), অন্যদিকে রয়েছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), কংগ্রেস ও বাম দল সমন্বয়ে গঠিত 'মহাগাঁটবন্ধন’। বিহারে মূলত এই দুই রাজনৈতিক দলেরই লড়াই।
সোমবার শেষ প্রচার
প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনের প্রচার শেষ হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সহ উভয় জোটের শীর্ষ নেতারা ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য শেষবারের মতো প্রচেষ্টা করবেন। তাঁদের জনসভার বক্তব্য, ভোটারদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতটা সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছে এবার তা দেখার। জানা গিয়েছে, বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, লোক জনশক্তি দলের (এলজেপি) প্রধান চিরাগ পাসওয়ানের মতো বেশ কিছু বড় নেতাদের তাঁদের দল ও জোট প্রার্থীদের হয়ে সোমবার শেষ জনসভা করার কথা রয়েছে।
তিনটি পর্যায়ে নির্বাচন
বিহারের ১৬টি জেলার ৭১টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে ২৮ অক্টোবর এবং তার জন্য ৩১ হাজার পোলিং স্টেশন গড়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনে ২,১৪,৬,৯৬০ জন ভোটার ১,০৬৬ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। নকশাল-প্রভাবিত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, ৩টি পর্যায়ে ভোট হবে, ২৮ অক্টোবর, ৩ নভেম্বর ও ৭ নভেম্বর এবং ১০ নভেম্বর ভোটের ফল জানা যাবে।
ইস্তেহার প্রকাশ
শেষ সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলি তাদের ইস্তেহার প্রকাশ করে এবং বিরোধী দলগুলিকে তীক্ষ্ণভাবে হামলা করে সেখানে। একদিকে যেমন বিজেপি ও জেডি (ইউ) আরজেডি শাসিত আগের সরকারকে ‘জঙ্গল রাজ' বলে অ্যাখা দেয়, অন্যদিকে আরজেডি নেতারা নির্বাচনের আগে ১০ লক্ষ যুবকদের কর্মসংস্থানের আস্থা দেন। এনডিএ-এর প্রাক্তন জোটসঙ্গী এলজেপির প্রধান চিরাগ পাসওয়ান এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী নীতীশ কুমারকে ‘মোদীর হনুমান' বলে সম্বোধন করেন, কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনের জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন। তেজস্বী যাদবও মুখ্যমন্ত্রীকে ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত' হওয়ার জন্য নিয়মিত আক্রমণ ও বিদ্রূপ করে চলেছেন।
নরেন্দ্র মোদী ও রাহুল গান্ধীর ভোট প্রচার
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারে আরজেডি ও তাদের জোটসঙ্গীদের তীব্র আক্রমণ করে এনডিএ সরকারের সফলতাকে তুলে ধরেছেন এ রাজ্যে। যার মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি ও তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন অন্যতম। তবে চুপ ছিলেন না কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। তিনিও ভোটের প্রচারে এসে দেশের বেকারত্ব, পূর্ব লাদাখে হওয়া চিন-ভারত সংঘর্ষ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এনডিও সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে এ রাজ্যের মানুষ বহুদিন ধরে বদলের অপেক্ষায় রয়েছেন এবং সরকার নির্বাচিত শিল্পপতিদের সুবিধার্থে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
বিহারের রাজনীতি
বিহারে বিজেপি জোট বেঁধেছে জেডিইউয়ের সঙ্গে যাতে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে সরকারে আসতে পারে তারা। এনডিএর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে নামছে আরজেডি, কংগ্রেস ও বাম দল সমন্বয়ে গঠিত দল। প্রসঙগত, ২০১৫ সালে নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছিলেন মহাগাঁটবন্ধনের, সেই সময় এনডিএ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল জেডিইউ। যদিও ২০১৭ সালে নীতীশ ফের এনডিএতে ফিরে আসেন। ২০১৫ সালে আরজেডি ও জেডিইউ যৌথভাবে মহাগাঁটবন্ধনের অংশ হিসাবে ভোটে লড়ে এবং ২৪৩টির মধ্যে ১৭৮টি কেন্দ্র দখল করে। কিন্তু এই নির্বাচনের ২০ মাস পর আরজেডি ও জেডিইউয়ের মধ্যে বিভিন্ন মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায় মহাগাঁটবন্ধন থেকে বেড়িয়ে আসে জেডিইউ এবং ২০১৭ সালে এনডিএর সঙ্গে ফের জোট বাঁধতে দেখা যায়।
ধারাল অস্ত্রের কোপ কোচবিহারের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাকে! এক হামলাকারীকে গণপিটুনি