নিজের পছন্দের ছেলে বা মেয়েকে বিয়ে করা সাংবিধানিক অধিকার, রায় কর্নাটক হাইকোর্টের
নিজের পছন্দের ছেলে বা মেয়েকে বিয়ে করা সাংবিধানিক অধিকার
পছন্দের পাত্র–পাত্রীকে বিয়ে করার অনুমতি দিল কর্নাটক হাইকোর্ট। সম্প্রতি হাইকোর্টের পক্ষ থেকে এক মহিলা উন্নয়ন সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে ছেড়ে দেওয়া হোক, যিনি তাঁর জীবনে কি সিদ্ধান্ত নেবেন তার জন্য যথেষ্ট যোগ্য। বেঙ্গালুরুর জনৈক বাসিন্দার পেশ করা হেবিয়াস কর্পাস পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বক্তব্য হাইকোর্টের।
নিজের পছন্দের কাউকে বিয়ে করা মৌলিক অধিকার
হাইকোর্ট জানিয়েছে, এটা সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যাপার যে, যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির নিজের পছন্দের ছেলে বা মেয়েকে বিয়ের অধিকারকে ভারতের সংবিধান মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, বর্ণ বা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যে কোনও ব্যক্তি তাঁদের দু'জনের ব্যক্তিগত সম্পর্কের সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাধীনতাকে কেউ অসম্মান করতে পারবেন না।' এই একই ধরনের পর্যবেক্ষণ করেছে এলাহাবাদ ও দিল্লি হাইকোর্টও।
হেবিয়াস কর্পাস আবেদন
বিচারপতি এ সুজাতা ও শচিন শঙ্কর মাগাদুমের বেঞ্চ এই রায় দেন। প্রসঙ্গত, গত ২৭ নভেম্বর ওয়াজিদ খান নামে এক ব্যক্তি হেবিয়াস কর্পাসের মাধ্যমে আবেদন করে তাঁর বান্ধবী রামিয়া জিকে গৃহ বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। বহু বিজেপি শাসিত রাজ্য যখন লাভ জিহাদ বা বিয়ের নামে ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করতে উদ্যোগী হয়েছে, সেখানে কর্নাটক হাইকোর্টের এই রায় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বিএস ইয়েদুরাপ্পা শাসিত খোদ কর্নাটক সরকার লাভ জিহাদের বিপক্ষে। গেরুয়া শিবিরে এই য়নযন্ত্রকারি ‘লাভ জিহাদ'-এর অর্থ হল মুসলিম ছেলের সঙ্গে হিন্দু মেযের বিয়ের পর জোর করে মেয়েটিকে ধর্মান্তকরণ করা হয়।
বিয়ের বিপক্ষে পরিবার
ওয়াজিদ ও রামিয়া এক সংস্থায় কাজ করেন এবং একে-অপরের সঙ্গে বিয়ে করতে চান। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে বিরোধিতা করায় তা সমস্যার মুখে পড়েছে। স্থানীয় পুলিশ ২৭ নভেম্বর রামিয়াকে আদালতে পেশ করলে তিনি জানান যে তাঁর অভিভাবকরা ওয়াজিদের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হোক, চান না, তাঁর ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করছেন তাঁরা। অপরদিকে এই বিয়েতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই বলে জানান ওয়াজিদের মা। রামিয়া বেঞ্চকে জানান, জনোদয় স্বান্তনা কেন্দ্র নামে বিতর্ক নিরসন কমিটির কাছে নালিশ দায়ের করার পর থেকে তিনি একটি এনজিও-তে থাকছেন। ওই কমিটি তৈরি করেছে রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তর। রামিয়ার অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
একই ধরনের রায় দিল্লি–এলাহাবাদ হাইকোর্টের
প্রসঙ্গত, অতি সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্ট ও দিল্লি হাইকোর্টও একই ধরনের রায় ঘোষণা করে। এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছিল, যে ধর্মাচরণই করুন না কেন, একজন ব্যক্তির নিজের পছন্দের কারও সঙ্গে থাকার পূর্ণ অধিকার আছে, এটা জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারের সঙ্গে মৌলিক ভাবে সংযুক্ত, অবিচ্ছেদ্য।
দূষিত শহরগুলিতে বাজি বিক্রি ও ফাটানো বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা এনজিটির