মৃত্যুর আগেই কাশ্মীরে বাঙালি শ্রমিকদের উপর হামলার ছক কষেছিল এই জঙ্গি
মঙ্গলবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলায় জঙ্গি হামলায় নিহত হন বাংলার পাঁচ শ্রমিক। সেই হামলার মূলে ছিলেন হিজবুল মুজাহিদিন-এর কমান্ডর এজাজ মালিক। তবে শ্রমিকদের উপর হালমা চলার আগের দিনই নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে নিহত হয়েছিল এজাজ। সোমবার অনন্তনাগের বিজবেহরাতে ট্রাকচালক নারায়ণ দত্তকে মারতে গিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর ঘেরাটোপে আটকে গিয়েছিল সে। সেখানেই সেনার গুলিতে মারা যায়। তবে মরে যাওয়ার আগেই বাঙালি শ্রমিকদের মৃত্যুর রূপরেখা তৈরি করে গিয়েছিল সে।

২০১৮ সালে হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ এজাজের
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের হয়ে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু করে এজাজ মালিক। সে আদতে কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার বাসিদন্দা ছিল বলে জানা গেছে। সোমবার এক অ-কাশ্মীরি ট্রাকচালককে মারতে যায় এজাজ। সেই সময় নিকটবর্তী এলাকাতেই টহল দিচ্ছিল পুলিশ ও সিআরপিএফের একটি দল। ট্রাকচালকের উপর গুলি চলতে শুনে তারা ঘটনাস্থানে এসে এজাজকে ঘিরে ফেলে। এজাজের সঙ্গে আরও দুই জন জঙ্গি ছিল। নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে এজাজ মারা গেলেও, সেই দুই জন সেখান থেকে পালাতে সমর্থ হয়।

এলাকায় বেশ প্রভাব ছিল এজাজের
এজাজ মারা যাওয়ার পর তার দেহ নিতে কেউ আসছে না দেখে প্রথমে নিরাপত্তাবাহিনীর গোয়েন্দারা ভেবেছিল যে সে পাকিস্তানি। ত্রাল, অবন্তীপোরা ও অনন্তনাগের পুলিশ রেকর্ডে এজাজের বিষয়ে কিছু ছিল না। তবে কুপওয়ারা এলাকাতে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে সত্যিটা। জানা যায়, সেই এলাকায় বেশ প্রভাব ছিল এজাজের।

মঙ্গলবার জঙ্গিদের গুলিতে মারা যায় ৫ বাঙালি শ্রমিক
এদিকে মঙ্গলবার একটি জঙ্গি হামলায় মারা যায় কাশ্মীরে কর্মরত ৫ বাঙালি শ্রমিক। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান যে এই হামলার পিছনেও মূল মাথা ছিল এই এজাজ। মঙ্গলবার রাতে একটি বাড়িতে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে চার জঙ্গি। সেই বাড়িতে ৭জন বাঙালি শ্রমিক থাকত। তাদের মধ্যে একজন শ্রমিক খাবার আনতে যাওয়ায় সে বেঁচে যায়। বাড়িতে থাকা বাকি ৬ জন শিকার হয় সেই হামলার। এদের মধ্যে পাঁচজন মারা জান জঙ্গিদের গুলিতে। একজনের অবস্থা গুরুতর। জখম সেই শ্রমিকের চিকিৎসা চলছে। ৫ অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১১ জন অ-কাশ্মীরি শ্রমিককে মারে জঙ্গিরা।