ব্যান হওয়া চিনা অ্যাপ মোবাইলে ফিরবে কি! চিনকে শিক্ষা দিতে আটঘাট বেঁধে নামছে কেন্দ্র
ব্যান হওয়া চিনা অ্যাপ মোবাইলে ফিরবে কি! চিনকে শিক্ষা দিতে আটঘাট বেঁধে নামছে কেন্দ্র
দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় গতকালই ইউসি ব্রাউজার, টিকটক সহ ৫৯টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। পাশাপাশি গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের জেরে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে এই নিষেধাজ্ঞা বিশেষভাবে তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মহল। এমতাস্থায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কর্তৃক নিষিদ্ধ করা ৫৯টি চীনা অ্যাপের খুব তাড়াতাড়ি ভারতে ফেরা সম্ভব নয় বলে কেন্দ্র সরকারের তরফে মঙ্গলবার জানা গেল। বর্তমানে এই বিষয় পর্যালোচনার জন্য সরকারের তরফে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনও করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
কারা কারা থাকছেন পর্যালোচনা কমিটিতে ?
নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি তদন্তকারী দলের কাছে নিজ অবস্থান জানানোর জন্য অ্যাপ নির্মাতারা ৪৮ ঘন্টার সময় পাবেন। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত ওই তদন্তকারী দলে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, তথ্যপ্রযুক্তি, তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রক এবং ভারতীয় কম্পিউটার সংক্রান্ত জরুরি পরিষেবা দল(সিইআরটি-আইএন) ও বৈদ্যুতিন-তথ্য প্রযুক্তি(এমইআইটিওয়াই) বিভাগের অভিজ্ঞ কর্তারা। এই তদন্তকারী দল অ্যাপ নির্মাতাদের বক্তব্য ও সমস্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গোটা পরিস্থিতির বিচার করবেন বলে জানা যাচ্ছে। বিখ্যাত চাইনিজ ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকও নিষেদাজ্ঞার বিছনে আসল কারণ জানতে কেন্দ্রের দারস্থ হতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে।
তথ্য পাচারের অভিযোগ খারিজ করল অ্যাপ নির্মাতারা
এদিকে ইতিমধ্যেই একাধিক চিনা অ্যাপ গুলির বিরুদ্ধে তথ্য চুরি ও চিনে পাচারেরও অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকেয়। চিনা অ্যাপগুলির বিরুদ্ধে তথ্যের অনধিকার ব্যবহার এবং ভারতের সার্বভৌমত্ব নষ্টের মত যে গুরুতর অভিযোগগুলো আনা হয়েছে। যদিও এই সমস্ত অবিযোগই অস্বীকার করে টিকটক ইণ্ডিয়া। এই প্রসঙ্গে টিকটক ইণ্ডিয়ার প্রধান নিখিল গান্ধী একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন যে, প্রায় ১৪টি ভাষার সংযুক্তিকরণে টিকটক লক্ষাধিক মানুষের জীবনের একটি অঙ্গ। একইসাথে কোনও ব্যবহারকারীদেরই গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়নি অ্যাপের মাধ্যমে।
চিনা অ্যাপের নিষেধাজ্ঞায় পা মেলাল গুগল
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও এমইআইটিওয়াইয়ের নির্দেশে টেকজায়ান্ট গুগলও অ্যানড্রয়েড প্লে-স্টোর থেকে ইতিমধ্যে সরিয়ে ফেলেছে চিনা অ্যাপগুলিকে। এর অর্থ একটাই যে, ভারতীয় অ্যানড্রয়েড ব্যবহারকারীরা চাইলেও স্মার্টফোনে ডাউনলোড করতে পারবেন না এই চিনা অ্যাপগুলিকে। অন্যদিকে ভারতে অ্যাপলের আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে চিনা অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে মার্কিন সদর দপ্তরের সাথে আলোচনা চালাচ্ছে।
ফোনে অ্যাপ রেখে দিলেও বাধ সাধবে সিকিউরিটি প্যাচ
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় স্তর হিসেবে কাজ করবে ফোনের আপডেট। ফোন থেকে চিনা অ্যাপগুলি উড়িয়ে না দিলেও, ভবিষ্যতে ফোনের অপারেটিং সিস্টেমের সিকিউরিটি প্যাচ আপডেট করার সময়ে অ্যাপগুলি আপনা থেকেই উড়ে যাবে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এমইআইটিওয়াইয়ের পক্ষ থেকে তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রকের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে যাতে ভারতের যেকোনও ফোনে ভবিষ্যতে চিনা অ্যাপগুলি পুনরায় ইনস্টল করা সম্ভব না হয়।
ফোনে ইনস্টল থাকলেও ডেটা কানেকশন পাবে না চীনা অ্যাপগুলি
চীনে ফেসবুক ও গুগল বন্ধ করা হয় যে উপায়ে, ঠিক একই উপায়ে অবলম্বন করল ভারত। ভারতীয় টেলিকম বিভাগের পক্ষ থেকে সমস্ত ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার(আইএসপি)-দের কাছে এই চীনা অ্যাপগুলিতে ডেটা কানেকশন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে ভারতে পর্নোগ্রাফিক সাইটগুলি একই উপায়ে বন্ধ করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সূত্রের খবর অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী একই উপায় অবলম্বন করায় ওয়াটসঅ্যাপ মারফত ফোন করা যায় না।
করোনা টীকার ব্যবহার নিয়ে কড়া নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী