ফাঁসিকাঠ প্রস্তুত, শুধু নেই ফাঁসুড়ে, দেশজুড়ে চলছে তার খোঁজ
নির্ভয়া গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় চারজন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি পবন কুমারকে গোপনভাবে মন্ডোলি জেল থেকে তিহার জেলে পাঠানো হল। অপর তিন আসামিদের ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ চালু করা হল। চার ভয়ঙ্কর অপরাধীকে ফাঁসি দেওয়ার দিন আর খুব বেশি দূরে নয় বলে মনে করা হচ্ছে।
তিহার জেলের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, 'পবন কুমার গুপ্তা মান্ডোলি জেল থেকে তিহার জেলে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে আমরা চারটি আসামির মধ্যে যোগাযোগ নিষিদ্ধ করে দিয়েছি। এর আগে তিহার কারাগারে দায়ের করা মামলায় তিন আসামি দিনের বেলা নিজেদের মধ্যে কথা বলতেন।’ যদিও এখনও মৃত্যুদণ্ড কবে হবে তার নির্দেশ আসেনি কিন্তু তিহার জেল কর্তৃপক্ষ চার আসামিকে ফাঁসি দেওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সূত্রের খবর, 'তিহার জেলের ফাঁসিঘরটিকে পরিস্কার করা হচ্ছে। ফাঁসিকাঠ মেরামতি করছে তিহারের বন্দিরা। ফাঁসিঘরে সবসময়ই কোনও না কোনও কার্যকলাপ চলছে এবং সেখানে নিরাপত্তাও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যার ইঙ্গিত খুব শীঘ্রই কিছু ঘটতে চলেছে।’ জঙ্গি আফজল গুরুর ফাঁসির পর ওই ঘরটির নিরাপত্তায় দু’জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা ছিল কিন্তু এখন ওই ফাঁসিঘরের নিরাপত্তায় রয়েছে তামিলনাড়ু বিশেষ পুলিশ বাহিনীর পুলিশ। এর পাশাপাশি, শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরাও ফাঁসিঘরের নিরাপত্তা দেখতে আসেন প্রায়ই। সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, 'ফাঁসিঘরের নিরাপত্তাই শুধু বাড়ানো হয়নি লিভারের জংটিও পরিষ্কার করা হয়েছে। জেল কর্তৃপক্ষ লিভারটি ঠিকমতো কাজ করছে কি না তাও খতিয়ে দেখেছে।’
জানা গিয়েছে, ফাঁসিঘরের আলোটিকেও মেরামতি করে পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে। জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আসামিদের ফাঁসি দেওয়ার জন্য শুধু একজন ফাঁসুড়ের অভাব রয়েছে। তিহার জেলের প্রাক্তন আইনি পরামর্শদাতা সুনীল গুপ্তা বলেন, '২০১৩ সালে আফজল গুরুর ফাঁসির সময় ফাঁসুড়ের খুব একটা প্রয়োজন ছিল না। একজন অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মীও লিভার টানতে পারেন এবং ফাঁসি দিতে পারেন। কিন্তু ২০১৮ সালের দিল্লি জেল ম্যানুয়াল অনুযায়ী এটি করা যাবে না। এখন প্রশিক্ষিত ফাঁসুড়ে দরকার ফাঁসি দেওয়ার জন্য।’ যেহেতু এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয় তাই তিহার জেল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। সূত্রের খবর, তিহার জেল কর্তৃপক্ষ দেশের সব জেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানার চেষ্টা করছে যে তাদের কাছে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত ফাঁসুড়ে আছে কিনা।