প্রকাশিত হল অসমের সংশোধিত নাগরিক পঞ্জি, জেনে নিন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
আজই প্রকাশিত হয়েছে অসমের নাগরিকপঞ্জির সংশোধিত তালিকা। অশান্তির আশঙ্কায় আগে থেকেই রাজ্যের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আজই প্রকাশিত হয়েছে অসমের নাগরিকপঞ্জির সংশোধিত তালিকা। অশান্তির আশঙ্কায় আগে থেকেই রাজ্যের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। ৫১ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি।
এনআরসি নিয়ে উত্তেজনা
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথম এনআরসির খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। তারপর থেকে এই নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়। গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে সেই প্রতিবাদ আন্দোলন। মোদীর বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী রাজনৈতিক দল। কিন্তু তাতেও দমেনি মোদী সরকার এনআরসি তালিকা প্রকাশ নিয়ে বিরোধিতার পরেও চূড়ান্ত তািলকা প্রকাশিত হল।
এনআরসি কী
১৯৮৫ সালে এই নাগরিক পঞ্জি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। সেই মর্মে অল অসম স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। ঠিক হয় ১৯৫১ সালের নিরিখে প্রকাশিত হবে এই তালিকা। দেশ ভাগের পর অসমে অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতেই এই এনআরসি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। কিন্তু তারপরে আর সেটা বাস্তবািয়ত হয়নি। ফের মোদী ক্ষমতায় আসার পর সেটি চালু করে। সেকারণেই এনআরসি নিয়ে যখন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা, তখন বিজেপি জানিয়েছিল এটা তৈরি করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী।
কারা থাকতে পারবেন এই তালিকায়
ফের বড় পরীক্ষার মুখে অসমের বাসিন্দারা। এই এনআরসি তালিকাই ঠিক করে দেবে তাঁরা দেশের বৈধ নাগরিক কিনা। ১৯৫১ সালে যাঁদের নাম এনআরসির তালিকায় উঠেছিল বা ১৯৭১ সালর ২৪ মার্চ পর্যন্ত যাঁদের নাম ভোটার তালিকায় িছল তাঁরাই এই এনআরসিতে জায়গা পাবেন। সেটা প্রমান করতে অসমের স্থায়ী ঠিকানা, পাসপোর্ট, সরকারি লাইসেন্স, এলআইসি পলিসি, জমি এবং ভাড়ার নথি, সরকারি কর্মী হিসেবে শংসাপত্র, ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্ট নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র, এলাকার বাসন্দা হওয়ার আদালত অনুমোদিত শংসাপত্র।
কী করে দেখবেন এনআরসি তালিকায় নাম
আজই প্রকাশিত হচ্ছে অসমের এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। অফ লাইনে সেই তালিকায় নাম আছে কিনা জানতে হলে নিকটবর্তী এনআরসি সেবাকেন্দ্রে যেতে হবে। সপ্তাহে প্রতি কর্মদিবসে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে সেখানে গিয়ে নিজের নাম দেখে আসতে হবে।
আর অনলাইনে দেখতে হলে যেতে হবে এনআরসির ওয়েবসাইট, www.nrcassam.nic.in or www.assam.mygov.in
সেখানে গিয়ে ক্লিক করতে হবে ফাইনাল এনআরসি স্টেটাস জানার জন্য। সেখানে যাওয়ার জন্য অ্যাপলিকেশন রেফারেন্স নম্বর দিলেই দেখা যাবে নাম।
তালিকায় নাম না থাকলে কী হবে
এনআরসিতে নাম না থাকলেই যে তাঁকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে এমন নয়। নিজের নাগরিকত্ব প্রমানে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে নিজের আবেদন জানাতে পারবেন। এনআরসি তালিকায় নাম না থাকলেই যে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে তা নয়। যতক্ষণ না ফরেনার্স ট্রাইবুনাল তাঁকে বিদেশি বলে ঘোষণা করছে ততক্ষণ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না।
আজই চরম সিদ্ধান্ত এমন মেনে নেওয়ার কোনও কথা নেই। তালিকা প্রকাশের ১২০ দিনের মধ্যে ফের আবেদন করতে পারবেন তাঁরা। ২০১৯ সালের ৩১ িডসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এনআরসি-তে নাম না থাকার বিষয়টি নিয়ে ট্রাইবুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন জানাতে পারবেন বাসিন্দারা।