খাঁচায় বন্দি করতে চাওয়ার অপরাধ, ২২ কিমি ধাওয়া করে প্রতিশোধ নিতে এল বাঁদর
খাঁচায় বন্দি করতে চাওয়ার অপরাধ, ২২ কিমি ধাওয়া করে প্রতিশোধ নিতে এল বাঁদর
রামায়ণে ১০০ কিমির সমুদ্র পেরিয়ে লঙ্কায় হানা দিয়েছিল রামের বানরসেনা। সে রাম এখন নেই, কিন্তু বানর সেনারা রয়ে গিয়েছে৷ এবারেও দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটকের একটি গ্রামে শত্রুর বাড়িতে হানা দিতে ২২ কিমি দূরের জঙ্গল থেকে ফিরে এল বাঁদর৷ ওঁত পেতে বসে রইল শত্রুর খোঁজে৷ এরকম ঘটনায় হতবাক কর্ণাটকের চিকমাগলুর জেলার কোথিগিহার গ্রামের বাসিন্দারা।
এ কেমন বাঁদর!
কোথিগিহার গ্রামের আশেপাশে ঘুরে বেড়ানো একটি পাঁচ বছর বয়সী একটি পুরুষ বানর মানুষের কাছ থেকে জলখাবার ছিনিয়ে নিত। সম্প্রতি করোনাকাল পেরিয়ে স্কুলগুলি পুনরায় খোলার পর বাঁদরটি মোরারজি দেশাই স্কুলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। স্কুলগুলিতে জিনিসপত্র লুট করা শুরু করে। এরপরই স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁদরটিকে খাঁচায় পুরে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বনবিভাগের একটি দল একটি দল গ্রামে পৌঁছয়৷ দুর্বৃত্ত বানরকে আটকাতে তারা ফাঁদও পাতে। কিন্তু সেদিকে এগিয়ে যেতে একদমই ইচ্ছুক ছিল না বাঁদরটি৷
বাঁদর নিয়ে নাজেহাল বনকর্মীরাও!
এরপর বাঁদরটিকে ধরার জন্য স্থানীয় আরও কিছু লোকের সাহায্য চায় বনদফতর। বনদফতরের কর্মীদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেই মুশকিলে পড়ে জগদীশ নামের এক রিক্সাওয়ালা৷ সে বনদফতরের কর্মীদের সঙ্গে বাঁদর ধরতে গেলে হঠাৎ-ই বাঁদরটি তার উপর হামলা করে। বাঁদরের আঁচড় কামড়ে ভালোমতো আহত হন রিক্সাচালক জগদীশ৷ এরপর বাঁদরটি আরও বেশ কয়েকবার আক্রমণের চেষ্টা করে জগদীশকে, সে নিজের রিক্সার আড়ালে লুকিয়ে পড়লে রাগে বাঁদরটির রাগ গিয়ে পড়ে তার রিক্সায়, এবং প্রবল আক্রোশে সেটির সিট ছিঁড়ে ফেলে।
২২ কিমি পেরিয়ে বদলা নিতে ফিরল বাঁদর!
বেশ কিছুক্ষণের বনদফতর কর্মী ও স্থানীয়াদের সম্মলিত চেষ্টায় এরপর বাঁদরটিকে খাঁচা পুরে ২২ কিলোমিটার দূরে একটি জঙ্গলে ছেড়ে আসেন বনদফতরের কর্মীরা। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে কোথিগিহার গ্রামের। কিন্তু এখানেই নতুন চমকে দেওয়া মোড় নেয় ঘটনা! ২২ কিলোমিটার দূরের জঙ্গল থেকে বাঁদরটি আবারও ফিরে চলে আসে ওই গ্রামে। এবং জগদীশ রিক্সাওয়ালার বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি শুরু করে। গ্রামবাসীরা খবর দিলে আবার বাঁদরটিকে ধরে নিয়ে গিয়ে জঙ্গল ছেড়ে আসে বনদফতরের কর্মীরা! জগদীশ জানিয়েছেন এখনও বাঁদরের আতঙ্কে তিনি বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন!
কী বলছেন বনদফতরের কর্মীরা!
অন্যদিকে বনদফতরের কর্মীরা বলছেন, আমরা সত্যিই জানি না কেন একটি বাঁদর একজন মানুষকে এরকমভাবে টার্গেট বানাল। আমরা জানি না ওই রিক্সাওয়ালা আগে কখনও বাঁদরটিকে উতক্ত করেছিল কিনা! নাকি এটি বাঁদরটির কেবল একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া! কিন্তু এই প্রথম আমরা একটি বাঁনরকে এইরকম আচরণ করতে দেখলাম। যদিও বাঁদররা মানুষের ওপর হামলা করছে তা প্রায়ই শোনা যায় না।
প্রতীকী ছবি