১০ দিন পর প্লাবিত গুহায় খোঁজ মিলল থাইল্যান্ড ফুটবল দলের, তবে উদ্ধার এখনও বহুদূর
দশদিন পর জীবিত অবস্থায় খোঁজ মিলল থাইল্যান্ডের প্লাবিত গুহায় আটকে পড়া ছেলেদের, কিন্তু তাদের উদ্ধার করাটা এখনও চ্যালেঞ্জিং।
একটি গুহা ঘুরে দেখতে গিয়ে হঠাত আসা বন্যায় আটকে পড়েছিল থাইল্যান্ডের বারো জন কিশোর ও তাদের ফুটবল কোচ। ১০ দিন ধরে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে গুহার ভিতরেই একটি অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় তাদের খোঁজ পেলেন উদ্ধারকারীরা। প্রত্যেকেই সুস্থ থাকলেও, বন্যায় গুহাটির যা অবস্থা, তাতে এখনই তাদের উদ্ধার করাটা সম্ভব হচ্ছে না। কোন পথে, কীভাবে তাদের সুস্থ অবস্থায় গুহার বাইরে আনা যায় তাই এখন উদ্ধারকারী দলের প্রধান ভাবনার বিষয়।
গত ২৩ জুন তারিখে মোট ১২ জন কিশোর, যাদের বয়স ১১ থেকে ১৬-র মধ্যে এবং তাদের বছর ২৫-এর ফুটবল কোচ অনুশালনের পর অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় ঘুরে দেখতে গিয়েছিলেন থাম লুয়াং কেভ কমপ্লেক্স। থাইল্যান্ডের উত্তরে মায়ানমার সীমান্তের কাছে জঙ্গলের মধ্যে এই গুহার অবস্থান। গুহাটির মধ্য দিয়ে একটি জলধারাও রয়েছে। ওই ১৩ জন গুহাটির ঘোরার সময়ই হঠাত প্রবল বৃষ্টিতে গুহার সেই জলধারার উচ্চতা বাড়তে থাকে। ডুবা যায় গুহার মুখ সহ ভিতরের অধিকাংশ অংশ। আটকে পড়েন তারা।
এই ঘটনা নিয়ে থাইল্যান্ড জুড়ে হইচই পড়ে। ওই কিশোরদের জন্য সারা দেশ প্রার্থনা করছিল। তাদের খোঁজে থাই নৌবাহিনীর ডুবুরিদের নিয়গ করা হয়। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ব্রিটিশ কেভ রেসকিউ কাউন্সিলের ডুবুরিরাও। কিন্তু এতদিন তাদের কোনও খোঁজই মিলছিল না। গুহার তৃতীয় কুঠুরিতে একটা বেশ উঁচু জায়গা আছে। নিমজ্জিত গুহায় সেই উঁচু এলাকায় তারা আশ্রয় নিতে পারে ভেবে এতদিন সেই এলাকাটিকেই নিশানা করেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু সোমবার রাতে লক্ষ্যে পৌঁছে, তারা দেখেন সেই এলাকাও জলের তলায় চলে গিয়েছে। এরপর তারা আরও গভীরে এগোন। ওই উঁচু এলাকা থেকে আরও ৪০০ মিটার দূরে খোঁজ মেলে আটকে পড়া ১৩ জনের।
তাদের খোঁজ পাওয়ার খবরে গোটা থাইল্যান্ডই উল্লসিত। এই ১৩ জনের জন্য দেশজোড়া উদ্বেগ ছিল। এমনকী গুহার বাইরে উপজাতীয় ধর্মায় নেতারা পূজোআচ্চাও করছিলেন। গুহার বাইরে উদ্ধারকারীদের ক্যাম্পে রয়েছেন আটকে পড়া কিশোরদের আত্মীয়রাও। তাদের খোঁজ মেলায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন তারাও। কিন্তু এখনই সব উদ্বেগ দূর হচ্ছে না। কারণ খোঁজ মিললেও এখনই উদ্ধার করাটা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল। একে গুহাটির অনেক জায়গা অত্যন্ত সংকীর্ণ এবং জলে কাদায় গুহাটির যা অবস্থা তাতে উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে।
বেশ কিছু বিকল্পের কথা আলোচিত হচ্ছে। ওই কিশোরদের ডাইভিং সরঞ্জামের ট্রেনিং দিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করার প্রস্তাব দিয়েছেন কেউ কেউ। গুবহায় আটকে পড়া কেউই শারীরিকভাবে অসুপস্থ না হয়ে পড়লেও তারা যতেষ্টই দুর্বল। উদ্ধারকারীরা তাদের হেলথ জেল দিয়ে এসেছেন। কিন্তু তারপরেও অতটা পথ তারা ডুবুরিরর পোশাকে সাঁতরে আসতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই কেউ কেউ বলছেন জল কিছুটা নামা অবধি অপেক্ষা করার কথা। তবে আপাতত তাদের যে সুস্থ অবস্থায় খোঁজ নিলেছে তাতেই খুশি গোটা থাইল্যান্ড।