কীভাবে করোনা সংক্রমণের হার কমাতে কাজ করেছে রাজস্থান সরকার
কীভাবে করোনা সংক্রমণের হার কমাতে কাজ করেছে রাজস্থান সরকার
বর্তমানে দেশের মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনাময় রাজ্য রাজস্থানে গত ১০দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে কোভিড–১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। জানা গিয়েছে, গত ১৫ জুলাই একদিনে এ রাজ্যে সর্বোচ্চ ৮৬৬টি নতুন আক্রান্ত ধরা পড়েছে। চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকেই এ রাজ্যে প্রতিদিন ৫০০ জনের বেশি নতুন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।
রাজস্থানে সংক্রমণের বৃদ্ধি কম
তবে রাজস্থানে সংক্রমণের তীব্রতা সত্ত্বেও রাজ্য প্রশংসনীয় কাজ করেছে, যে কারণে দেশের অন্যান্য বড় রাজ্যের তুলনায় সংক্রমণের বৃদ্ধি এখানে অনেকটাই কম। দেশে মোট করোনা ভাইরাস সংখ্যার তালিকায় রাজস্থান এখনও দশ নম্বরেই রয়েছে। অথচ এ রাজ্য জনসংখ্যার দিক দিয়ে দিল্লি, গুজরাত, তেলঙ্গানা ও কর্নাটকের থেকে অনেক এগিয়ে এবং এখন কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যাও এই রাজ্যগুলি থেকে অনেক কম। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত এমনকী কর্নাটকও (সাধরণত রাজ্যের রাজধানী) হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে, কিন্তু রাজস্থানে সেটা দেখা যায়নি, শুধুমাত্র রাজ্যের ২টি বড় শহর ছাড়া।
প্রতি দশ লক্ষ জনসংখ্যায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম
দেশের ২৫টি রাজ্যের মধ্যে রাজস্থানের একটি জেলাও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি (কেস ভিত্তিক)। ৪,২২৩টি আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে যোধপুর রাজস্থানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হিসাবে পরিচিত হয়, এরপর জয়পুর (৪,১২৭), ভারতপুর (২,০০৪), পালি (১,৬৯২) ও আলওয়ার (১,৪৯২)। এমনকী যদি প্রতি দশ লক্ষ হিসাবেও ধরা হয়, তাহলেও রাজস্থানে প্রতি মিলিয়ান জনসংখ্যায় ৩৪৪টি কেস ধরা পড়ে, যা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ক্লাস্টার হিসাবে পিচিত হয়।
রাজ্যে হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে টেস্ট
রাজস্থানের প্রশংসাসূচক কাজটি হল রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে টেস্ট করানো হচ্ছে যার ফলে এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত পজিটিভ আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই নিম্নগামী। রাজস্থানে ১.১ মিলিয়ন টেস্ট হয়, যদিও তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের তুলনায় কম। এমনকী প্রতি দশ লক্ষ জনসংখ্যায় টেস্টের ক্ষেত্রে রাজস্থানে ১৪,৫০০টি টেস্ট হয়, যা দিল্লি (৩৭,২০০), অন্ধ্র প্রদেশ (২৩,৩০০) ও তামিলনাড়ু (২২,৯০০) বাদে অন্যান্য প্রধান শহরগুলির চেয়ে বেশি। অন্যদিকে রাজস্থানকে অন্যান্য রাজ্যর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে প্রতি দশ লক্ষ জনসংখ্যায় গুজরাতে ৭,২০০, পশ্চিমবঙ্গে ৬,৭০০, মধ্যপ্রদেশে ৬,৬০০, উত্তরপ্রদেশে ৫,৩০০ ও বিহারে ২,৮০০টি টেস্ট হয়। সাধারণ টেস্ট বেড়ে যাওয়ার ফলে তা সনাক্ত, ট্র্যাক ও মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে উল্লেখযোগ্যভাবে এবং এটা একেবারেই আশ্চর্যজনক নয় যে ভারতের মধ্যে রাজস্থান পজিটিভ কেসের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রাজ্য অন্যান্য রাজ্যের তুলনায়। এটি জাতীয় পজিটিভ হার ৭.৬৭%-এর তুলনায় তিনগুণ কম।
রাজ্যে সুস্থতার হার বেশি ও মৃত্যুর হার কম
সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেই নয় রাজস্থান সরকার করোনা রোগীর সুস্থতার হার বৃদ্ধিতেও যথেষ্টও প্রয়াস দেখিয়েছে। রোগীদের সুস্থতা মোট আক্রান্তের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ (৭৩.৭৭%) রাজ্যে পুনরুদ্ধার হয়েছে। আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে এ রাজ্য কোভিড-১৯ মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করতেও সফল হয়েছে। রাজস্থানে মোট করোনা রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা ৫৩৪। জাতীয় মৃত্যুর হার ২.৫৬ শতাংশের চেয়েও রাজস্থানে মৃত্যুর হার কম ২.০২ শতাংশ। অন্যান্য রাজ্য উত্তরপ্রদেশ (২.৪৫%), পশ্চিমবঙ্গ (২.৯%), মধ্যপ্রদেশ (৩.৪৭%), মহারাষ্ট্র (৩.৯৬%), গুজরাত (৪.৬৬%) সহ অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে রাজস্থানে মৃত্যুর হার কম। রাজস্থানে একমাত্র জয়পুরে সর্বোচ্চ মৃত্যু ১৭৯ জন দেখা গিয়েছে, এরপর রয়েছে যোধপুর (৬৫), ভরতপুর (৪৩) ও কোটা (২৭)।
করোনার বিরুদ্ধে লড়তে মুম্বইয়ের রাস্তায় অভিনব অটো-রিক্সা, চালকের প্রশংসায় নেটিজেন মহল