১৪০০ কিমি রাস্তা স্কুটিতে অতিক্রম করে নেল্লোর থেকে তেলেঙ্গানায় ছেলেকে ফিরিয়ে আনলেন মা
১৪০০ কিমি রাস্তা স্কুটিতে অতিক্রম করে নেল্লোর থেকে তেলেঙ্গানায় ছেলেকে ফিরিয়ে আনলেন মা
তিন দিন ধরে স্কুটি চালিয়ে, ১৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনলেন মা। লকডাউন পরিস্থিতিতে পারিবারিক বন্ধনের আরও এক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হল। অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরে আটকে পড়েছিল সদ্যতরুণ সন্তান। লকডাউনের জেরে সমস্ত কিছু স্তব্ধ, ফলে বাড়ি ফেরারও উপায় নেই। তেলেঙ্গানার বাড়িতে বসে অসহায় পরিবার। অবশেষে স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মা। ঘরে ফিরিয়ে আনেন ছেলেকে।
১৪০০ কিমি পেরিয়ে ছেলেকে ফিরিয়ে আনেন শিক্ষিকা মা
সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এমনিতেই লকডাউন পরিস্থিতিতে শ্রমিকরা দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার ছবিতে ভরে গিয়েছে। কোনও গাড়ি-বাস-ট্রেন কিছুই চলছে না। এরকম অবস্থায় নিজের সন্তানের জন্য আকুল হযে ওঠা খুব স্বাভাবিক এক মায়ের জন্য। তেলেঙ্গানার নিজামাবাদের বাসিন্দা ৫০ বছরের শিক্ষিকা সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তাঁর দু'চাকার বাহনে করেই নেল্লোরে তাঁর কিশোর ছেলেকে আনতে যাবেন। লকডাউনের কারণে সে ওখানেই আটকে রয়েছে। মহারাষ্ট্র-তেলেঙ্গানা সীমান্তের ছোট শহরের বাসিন্দা রাজিয়া বেগম, পেশায় শিক্ষিকা, সোমবার সকালে তাঁর সফর শুরু করেন। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে তিনি তাঁর স্কুটিতে করে অন্ধ্রপ্রদেশ-তামিলনাড়ু সীমান্তের নেল্লোরে পৌঁছে যান। তিনি এরপর তাঁর ১৭ বছরের ছেলে মহম্মদ নিজামুদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি চলে আসেন।
মায়ের দায়িত্ব পালন করেন রাজিয়া
তিনদিনের সফরে রাজিয়া বেগম স্কুটিতে করে ১৪০০ কিমি রাস্তা অতিক্রম করেন। ১৫ বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সিঙ্গল মাদারের দায়িত্ব সারছেন রাজিয়া। তাঁর ছেলে নিজামুদ্দিন হায়দরাবাদে মেডিক্যাল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং নেল্লোরে তার বন্ধুর অসুস্থ বাবাকে সাহায্য করতে গিয়ে লকডাউনের জন্য সেখানেই আটকে পড়ে। লকডাউনের খবর শোনার পর নিজামুদ্দিনের মা বোধনের এসিপি জয়পাল রেড্ডিকে রাজি করিয়ে তাঁর কাছ থেকে কার্ফু ছাড়পত্র জোগাড় করেন। ব্যাগে কিছু খাবার ভরে নিয়ে রাজিয়া নেল্লোর থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।
পুলিশি সহায়তা সফরকালে
তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক চেকপোস্টে তাঁকে দাঁড় করায় পুলিশ। তবে তাঁকে হেনস্থা না করে বরং পুলিশ আশ্রয় ও সফরের সময় সহযোগিতা করেছেন। একা মায়ের এই অসম সাহসি কাজের কথা জেনে এবং ছেলের প্রতি এই ভালবাসার কথা ভেবে প্রশংসা উপচে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সকলেই বাহবা দিচ্ছেন তাঁকে।
পর্যাপ্ত পিপিই নেই, করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর আগেই প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করেছিলেন বাঙালি চিকিৎসক