তেলাঙ্গানা নির্বাচনে টিআরএস-এর তুরুপের তাস কী ছিল! কোন গেমপ্ল্যানে মসনদের পথে কেসিআর-এর দল
দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিতে তেলাঙ্গানা রাজ্।য গঠনের পর্ব থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের বিধানসবা নির্বাচন, এই গোটা অধ্যায়েই প্রাসঙ্গিক নাম হিসাবে উঠে আসেন তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির সুপ্রিমো কে চন্দ্রশেখর রাও
দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিতে তেলাঙ্গানা রাজ্য গঠনের পর্ব থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের বিধানসবা নির্বাচন, এই গোটা অধ্যায়েই প্রাসঙ্গিক নাম হিসাবে উঠে আসেন তেলাঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির সুপ্রিমো কে চন্দ্রশেখর রাও বা কেআরএস। নির্বাচনের কিছুদিন আগে তাঁর মেয়ে বলেছিলেন, তেলাঙ্গানার মানুষের মনে কেআরএস-এর জন্য ভালোবাসার চোরাস্রোত বইছে। তেলাঙ্গানায় কংগ্রেসের মহাজোট থেকে শুরু করে বিজেপি-র রাজনৈতিক বিভিন্ন চাল, সমস্ত কিছুকে মাত দিয়ে শেষ হাসি হাসলেন রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কেআরএস, যিনি দ্বিতীয়বারের জন্য ফের একবার মসনদ দখলের পথে! দেখে নেওয়া যাক কোন তুরুপের তাস-এ তেলাঙ্গায় অস্তিত্ব কায়েম রাখলেন দক্ষিণের এই দাপুটে নেতা।
মন্ত্রিসভা ভাঙার স্ট্র্যাটেজি
নির্বাচনের ৯ মাস বাকি থাকতে সেখানে বিধানসভা ভেঙে দেন কে আরএস। অনেকেই মনে করেছিলেন এর ফলে বিজেপিকে সহজ রাস্তা তিনি দিয়ে দিয়েছিলেন । তবে , ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা তাঁর রাজ্যে বিজেপি ও কংগ্রেস বিরোধী হাওয়া প্রবল হওয়ায় তার সুযোগ নিয়ে আরও বেশি সংখ্যা গরিষ্ঠতায় ফিরে আসার নীতি নিয়েছিলেন এই তেলুগু রাজনীতিবিদ। ফলে, ২০১৯ নির্বাচনের আগে তেলাঙ্গানায় কেআরএস-এর জমি যেমন পোক্ত হয়, তেমনই লোকসভা নির্বাচনের পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বস্তির স্ট্র্যাটেজি নিয়েও তিনি এগোতে পারবেন। এই লক্ষ্যেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নেন কেসিআর। এমনই মত অনেকের।
মন্ত্রিসভার ভাঙ্গন ও বিরোধী ফ্যাক্টর
কেসিআর বেশ কয়েকদিন ধরেই বুঝতে পারেন যে তাঁর দলীয় বিধায়কদের বিরুদ্ধে রাজ্যে বিরোধীরা সরব হচ্ছেন দুর্নীতি ইস্যুতে। অনেক বিধায়ক দল ছেড়ে অন্যদলের দিকে ঝোঁকবারও চেষ্টা করছিলেন। এই সমস্ত আঁচ পেয়েই কেসিআর রাজ্যের মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন। এরপর জনতার বিশাল ভোট তিনি ফিরে আসায়, অন্যদলের দিকে ঝুঁকে পড়া বিধায়কদের কাছেও তিনি স্পষ্ট বার্তা দিতে পারছেন , যে তেলাঙ্গানায় কেসিআর ব্যাতীত রাজনৈতিক রাস্তা নেই।
সর্বসাধারণের সুরক্ষার একাধিক স্কিম
রাজ্যে একাধিক জনমোহিনী স্কিম নিয়ে আসেন কেসিআর। বিভিন্ন পেনশন স্কিম, কৃষক উন্নয়ন নীতি নিয়ে আলাদা আলাদা একাধিক প্রকল্প তিনি চালু করেন। জমি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির জন্য তিনি একাধিক নীতি নেন। ফলে রাজ্যের মানুষের কাছে ক্রমেই তিনি বেশ জনপ্রিয় হতে থাকেন।
তেলাঙ্গানা-কার্ড
চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি ও কংগ্রেস সহ একাধিক দলের মহাজোট হয়েছে তেলাঙ্গানায়। আসরে নামে বিজেপি-ও। কিন্তু তেলাঙ্গানা-আবেগকে নিয়ে কেসিআর-এর প্রতি মানুষের চোরা ভালোবাসার স্রোত ছিলই। কারণ তেলাঙ্গানা গঠনের সময় থেকেই কেসিআর এর লড়াইয়ের কথা বারবার সকলকে বিভিন্ন সভায় স্মরণ করাতে থাকেন টিআরএস কর্মীরা। বারবার টিআরএস তেলাঙ্গানা ইস্যুতে ভর করেই বোটব্যাঙ্ক খানিকটা জোরদার করে। এমনই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।