সম্মতি দেননি মমতা, মোদীর আশ্বাসেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে সংশয় কাটছে না হাসিনার
তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিতে সম্মতি দেননি মমতা। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আশ্বাস সত্ত্বেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে সংশয় যাচ্ছে না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
কলকাতা ও নয়াদিল্লি, ১০ এপ্রিল : তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিতে সম্মতি দেননি মমতা। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আশ্বাস সত্ত্বেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে সংশয় যাচ্ছে না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। নয়াদিল্লিতে প্রকাশ্যেই সেই অভিব্যক্তির প্রকাশ করলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, মোদী তাঁকে আশ্বস্ত করলেও, মমতা রাজি না হলে তিস্তা চুক্তি সম্ভব নয়।
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন, তাও মেনে নেওয়া সম্ভব নয় হাসিনার পক্ষে। মোদীও ভাবছেন, কীভাবে জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে কেঁচে গণ্ডুষ করা যায়। মমতার চালে হাসিনার পাশাপাশি মোদীও তাই বেশ চাপে।
হাসিনার সফরের শেষ দিনে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গেল, তিস্তা নিয়ে নতুন করে শুরু হল স্নায়ুর লড়াই। মমতার প্রস্তাব মেনে তিস্তাকে ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে নতুন করে মমতার তোর্সা-ফর্মুলা উঠে আসবে কি না, তা ভবিষ্যৎই বলবে। তিস্তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে, আর স্পষ্ট করে বললে, দুই বাংলার মধ্যে দড়ি টানাটানি ছিল। কিন্তু তোর্সা নিয়ে তেমন কোনও দাবি উত্থাপন হয়নি কোনওদিনও। কোনওদিনও দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও হয়নি তোর্সা নিয়ে।
মমতা এমনও প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তিস্তা ছেড়ে তোর্সা বা অন্যান্য ছোট নদীর জলবণ্টন নিয়েও তার আপত্তি নেই। যেমন জলঢাকা বা ধরলা নদীর জলবণ্টন নিয়েও আলোচনা করা যেতে পারে। তোর্সার নাম না থাকলেও এই দুই নদীর নাম ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বিবৃতিতে রয়েছে। এক্ষেত্রে তোর্সার নাম উল্লেখ করে মমতা জল মাপতে চাইলেন।
তোর্সার উৎপত্তি চিনে। চিন থেকে ভুটান হয়ে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে কালাজানি নদীতে মিশেছে। তারপর কালাজানি নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করে যমুনায় মেশে। এমতবস্থায় তিস্তা নিয়ে সম্মতি না দেওয়ায়, মোদী কিংবা হাসিনা উভয়েই মনে করছেন মমতা পদ্মা-গঙ্গা ব্যারাজ নিয়েও মমতা আপত্তি করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সাল থকে জলবণ্টন নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চাপানউতোর চলছে। নানা সময়ে এই চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু বারবারই নানা কারণে তা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। এর আগেও ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে প্রস্তাবতি ঢাকা সফরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাতিল করেছিলেন এই চুক্তির বিরোধিত করে।