স্ত্রীকে 'কালো কালুটি' বলায় আদালত বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দিল, বিস্তারিত জানুন
স্ত্রীর গায়ের রঙ নিয়ে কটু মন্তব্য করায় একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার পক্ষে রায় দিয়েছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।
বাইরের লোকেদের সামনেই তাঁকে 'কালো' বলে অপমান করতেন স্বামী। সেইসঙ্গে সময়মতো খাবার তৈরি করে দিতে না পারা নিয়েও সইতে হত গঞ্জনা। তাই আদালতে হরিয়ানার মহেন্দ্র গড়ের এক মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেছিলেন। বুধবার পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্ট তাঁর সেই আবেদন মেনে নিয়েছে। আদালত বলেছে, স্বামীর কাছ থেকে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের কারণেই তিনি স্বামীর থেকে আলাদা থাকতে বাধ্য হয়েছেন। তাই তার বিচ্ছেদের আবেদন গ্রহন করা হল।
এদিন হাইকোর্টে ওই মহিলার আইনজীবি জে পি শর্মা জানান, 'আবেদনকারীকে 'কালি কালুটি' বলে অপমান করা হত। সেইসঙ্গে খাবার তৈরি না করা নিয়ে তাঁকে বিদ্রুপ করা হত। এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তিনি বাপের বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হন। এরপর তাঁর বাবা শ্বশুর বাড়ির লোকেদের ডেকে বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা ছেলের অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।'
এর আগে মহেন্দ্রগড়ের নিম্ম আদালতেও আবেদন করেছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু তখন তাঁর আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছিল। এদিন আদালত পর্যবেক্ষণে জানায় 'স্ত্রী প্রমাণ করতে পেরেছেন, শ্বশুর বাড়িতে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্য়বহার করা হত বলেই তাঁকে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হয়। নথিভূক্ত করার জন্য যে সব প্রমাণ তিনি পেশ করেছেন তাতে এটা স্পষ্ট হয়েছে আবেদনকারীকে মানসিক ও শারীরিক নিষ্ঠুরতা সহ্য করতে হয়েছে।' এরপরই বিচারপতি এম এম এস বেদী ও বিচারপতি গুরবিন্দর সিং গিলের ডিভিশন বেঞ্চ, নিম্ন আদালতের রায়টি বাতিল করে ওই মহিলার আবেদন মেনে নিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের আদেশ দেয়। আদালত আরও জানায়, ওই মহিলা আদালতে যে এফিডেভিট পেশ করেছেন তাতেই নিষ্ঠুরতার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। যখন কোন মহিলা শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে গিয়ে উঠতে বাধ্য হয়, তখন কী পরিস্থিতিতে তাঁকে শ্বশুরবাড়ি ছাড়তে হল, তা খুঁজে বের করাটা একটা আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে। বর্তমান মামলার ক্ষেত্রে, নিষ্ঠুর ব্যবহারের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।