দিল্লি হিংসা রুখতে 'তিয়েনআনমেন স্কোয়ার' সমাধানের প্রস্তাব তথাগতর!
শনিবার শুরু হয় দিল্লিতে সিএএ সমর্থক ও বিরোধী পক্ষের সংঘর্ষ। এরপর বুধবার পরিস্থিতির এতটা অবনতি হয় যে রাজধানীতে সেনা নামানোর পক্ষে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির হিংসা রুখতে এক সমাধানের প্রস্তাব করলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়।
দিল্লির হিংসা নিয়ে বিতর্কিত টুইট তথাগতর
তথাগত রায় প্রায়ই খবরের শিরোনামে থাকেন নিজের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে। দিল্লি হিংসার পরিস্থিতিতেও নিজের সেই স্বভাব থেকে সরে আসেননি তথাগত। এদিন দিল্লির হিংসা নিয়ে এক টুইট বার্তায় তথাগত লেখেন, '১৯৮৮ সালে বেজিংয়ের তিয়েনানমেন স্কোয়ার মনে আছে? যে ভাবে ডেঙ জিয়াওপিং সেই বিক্ষোভকে ঠেকিয়েছিলেন? আমার মনে হয়, সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই আমাদের উত্তর-পূর্ব দিল্লির চলমান অশান্ত পরিস্থিতিকে শান্ত করা উচিত। আমি নিশ্চিত যে বাকি কমরেডরাও আমার সঙ্গে একমত হবেন।' পরে টুইটটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে তা ডিলিট করে দেন তথাগত।
কী ঘটেছিল তিয়েনানমেন স্কয়ারে?
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে গণতন্ত্রের দাবিতে চিনের বেজিংয়ের তিয়েনানমেন স্কয়ার কয়েক সপ্তাহ ধরে দখলে রেখেছিল কয়েকশো বিক্ষোভকারী। সেখানে অংশ নিয়েছিল ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে বহু কারখানা শ্রমিক। এরপর ওই গণঅভ্যুত্থান ঠেকাতে ৪ জুন চিনের নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে হামলা চালায়। বলা হয় ওই হামলায় শত শত বিক্ষোভকারী প্রাণ হারায়।
'ট্রাম্পের সফর বামপন্থী ও ইসলামপন্থীদের মুখে ডিমের আঘাত'
তথাগত রয় টুইটে আরও লিখেছিলেন, 'উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে এই অশান্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সফরকে বিঘ্নিত করতে শুরু হয়েছিল। তবে ট্রাম্প ৩৭০ ধারা, তিন তালাকের উপর নিষেধাজ্ঞা বা সিএএ-র মতো ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুল নেয় কোনও কথা বলেননি। এটা বামপন্থী ও ইসলামপন্থীদের মুখে ডিমের আঘাত।'
৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে দিল্লিতে
এদিকে গত চার দিনের হিংসায় এখনও পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে দিল্লিতে। বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না দিল্লিতে। এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের মধ্যে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য স্পেশাল সেল, ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং অর্থনৈতিক অপরাধ শাখার (ইডাব্লু) তরফ থেকে প্রায় ৩৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেওয়া হয় শুট অ্যাট সাইটের নির্দেশ। বিশেষ পুলিশ কমিশনার পদে নিয়োগ করা হয় এসএন শ্রীবাস্তবকে।
দিল্লির যেখানে যেখানে অশান্তি
মূলত, দিল্লির মৌজপুর, বাবরপুর, কবিরনগর, পশ্চিম জ্যোতি নগর, গোকুলপুরীর গলিতে এই হিংসার ছবি নজরে পড়েছে বারবার। দিল্লির হিংসা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ পুলিশ। এই নিয়ে প্রকাশ্যে দিল্লি পুলিশকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট।
হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে দিল্লি পুলিশ
দিল্লি হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখেও পড়ে দিল্লি পুলিশ। হাইকোর্টের প্রশ্ন, উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা সত্ত্বেও কেন তিনজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করেনি দিল্লি পুলিশ। হাইকোর্ট বলে, 'এই নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে যত দেরি হবে তত পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে চলে যাবে। এই নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের না হলে তা ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে।'