করাচী থেকে টাটার হাত ধরেই প্রথম ওড়ে স্বপ্নের উড়ান! বিশ্বযুদ্ধে সাক্ষী থাকা এয়ার ইন্ডিয়ার ইতিহাস চমকে দেবে
টাটা গোষ্ঠী শেষমেশ কিনে নিল এয়ার ইন্ডিয়া। এদিন , এয়ার ইন্ডিয়া বিলগ্নীকরণের শেষ দিনে দরপত্র জমা দিয়ে কার্যত খেলা ঘুরিয়ে দেয় টাটা গোষ্ঠী। কয়েক দশক প্রাচীন ভারতের এই তাবড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সাফল্যের মুকুটে এয়ার ইন্ডিয়া আরও এ
টাটা গোষ্ঠী শেষমেশ কিনে নিল এয়ার ইন্ডিয়া। এদিন , এয়ার ইন্ডিয়া বিলগ্নীকরণের শেষ দিনে দরপত্র জমা দিয়ে কার্যত খেলা ঘুরিয়ে দেয় টাটা গোষ্ঠী। কয়েক দশক প্রাচীন ভারতের এই তাবড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সাফল্যের মুকুটে এয়ার ইন্ডিয়া আরও একটি সাফল্যের নামান্তর বলে মনে করছে ব্যবসায়িক মহল।
তবে ফের একবার টাটার কাছে এয়ার ইন্ডিয়া ফিরে আসতে প্রায় ৬৮ বছর লেগে গেল। সাল ১৯৫৩। যখন ভারত সরকার টাটা সন্সের কাছ থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকে কিনে নেয়।
কিন্তু নতুন করে ফের একবার এয়ার ইন্ডিয়া টাটার হাতে আসতে লেগে গেল প্রায় ৬৮ বছর। কিন্তু সেই সময়ে কেমন ছিল পরিস্থিতি।
1932 সালে প্রথম তৈরি হয় এয়ার ইন্ডিয়া
1932 সালে টাটা এয়ার সার্ভিসেসের হাত ধরে তৈরি হয় এয়ার ইন্ডিয়া। যদিও পরবর্তীকালে নাম বদলে যায়। তৈরি হয় টাটা এয়ার লাইন্স। জি আর ডি টাটার হাত ধরে এই এয়ারলাইন্সের প্রথম পথ চলা শুরু হয়। এপ্রিল, ১৯৩২ সাল। Imperial Airways এর জন্যে মেল নিয়ে যাওয়ার জন্যে contract হাতে পায়। আর এরপরেই টাটা সন্স সিঙ্গল ইঞ্জিন বিমানের মাধ্যমে প্রথম নিজেদের অ্যাভিয়েশন গ্রুপ তৈরি করে। ১৫ অক্টোবর ১৯৩২ সালে প্রথম টাটা করাচি থেকে বোম্বের জন্যে একটি এয়ার মেল বিমান উড়িয়ে ছিল। ওই এয়ারক্রাফট মাদ্রাজ পর্যন্ত গিয়েছিল। ওই বিমানের পাইলট ছিলেন পূর্বের রয়েল ফোর্সের একজন পাইলট Nevill Vintcent ওই বিমানের পাইলট ছিলেন। উনি জে আর ডি টাটার ভালো বন্ধু ছিলেন। সংস্থা সাপ্তাহিক এয়ার মেল সার্ভিস শুরু করেছিল। যেটি কিনা করাচি থেকে মাদ্রাজের মধ্যে চলাফেরা করত। এবং অহমেদাবাদ থেকে মুম্বইয়ের মধ্যে চলাচল করেছিল। আর মেল চলাচলের মধ্যে টাটা অ্যাভিয়েশন একটা বড় লাভের মুখোমুখি হয়। 2,60,000 কিলোমিটার বিমান ওড়ানো হয়। তৎকালীন সময়ে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছিল।
টাটা এয়ারলাইন্স নাম দেওয়া হয়
ধীরে ধীরে যাত্রী পরিষেবার দিকে নজর দেন টাটা। এয়ারলাইন্স একেবারে ছোট সিটের Miles Merlin এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রথম ডমেস্টিক বিমান পরিষেবা শুরু হয়। বম্বে থেকে ত্রিবন্দমের মধ্যে যাতায়াত করতে থাকে ছোট বিমানগুলি। তবে ১৯৩৮ সালে বদল হয়ে যায় নামের। নাম বদলে করা হয় টাটা এয়ারলাইন্স। ধীরে ধীরে টাটা এয়ারলাইন্সের ব্যপ্তি বাড়ছিল। ১৮৩৮ সালে ভারত ছাড়িয়ে কলম্বো এবং দিল্লির মধ্যে চলতে শুরু করল বিমান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এয়ারলাইন্স রয়েল ফোর্সের যাতায়াত সহ একাধিক বিষয়ে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, রয়েল এয়ারফোর্সের বিমানগুলিকে রক্ষনাবেক্ষনেও সাহায্য করে টাটা।
১৯৫৩ সালে সরকার মালিকানা নেয়
১৯৫৩ সালে ভারত সরকার এয়ার কর্পরেশন আইন পাশ করে। এবং টাটা সন্সের কাছ থেকে এয়ারলাইন্সের মালিকানা কিনে নেয়। কিন্তু সরকার কিনে নিলেও জে আর ডি টাটা ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসাবেই কাজ করে গিয়েছেন। কিন্তু সরকার নেওয়ার পর ফের একবার নাম বদলে যায়। নাম বদলে করা হয় এয়ার ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশানাল লিমিটেড।
এয়ার ইন্ডিয়াতে আসে প্রথম বোয়িং
১৯৬০ সাল, ২১ ফেব্রুয়ারি। এয়ার ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশানাল প্রথম বোয়িং 707-420 যুক্ত হয়। এরপর এয়ারলাইন্স ১৪ মে ১৯৬০ সালে প্রথম ইউ ইয়র্ক পর্যন্ত বিমান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফের একবার বদল ঘটে নামে। ১৯৬২ সালের ৮ জুন এয়ারলাইনের নাম শুধু ইয়ার ইন্ডিয়া করে দেয়। এবং ১১ জুন ১৯৬২ সালে এয়ার ইন্ডিয়া বিশ্বের প্রথম all jet airline হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটায়।
২০০০ সালে ইন্ডার ইন্ডিয়া সাংঘাই, চিনের মধ্যেও পরিষেবা শুরু করে। যদিও পরবর্তীকালে ২০০৭ সালে ইয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স মিশে যায়।
২০১৭ সালে প্রথম বেসরকারিকরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়
এরপর ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও ২০১৮ সালে এয়ার ইন্ডিয়াকে লাভজনক অবস্থাতে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়। যদিও সেই চেষ্টা বৃথা যায়। সরকার গত বছর disinvestment প্রক্রিয়া ফের একবার শুরু করে দেয়। বলে রাখা প্রয়োজন এয়ার ইন্ডিয়ার 38,366.39 কোটি টাকা ধার রয়েছে।