সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যুবার্ষিকী: ঠিক কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে মৃত্যু তদন্ত, নীরব সিবিআই
ঠিক কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে মৃত্যু তদন্ত
এক বছর পূর্ণ হল বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর। তবে এটি খুন, আত্মহত্যা নাকি আত্মহত্যায় প্ররোচনা তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও ধারণা এখনও পর্যন্ত সিবিআই দিতে পারেনি। ২০২০ সালের ১৪ জুন গলায় দড়ি লাগানো অবস্থায় মুম্বইয়ের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল সুশান্তের। সুশান্তের মৃত্যু শুধু বলিউডকেই নয়, সারা দেশকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছিল। গত বছর বিহার পুলিশে দায়ের হয় এই ঘটনার অভিযোগ, পরে এই তদন্তভার চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে। কিন্তু সুশান্তের মৃত্যু রহস্য কোনদিকে মোড় নিল তা নিয়ে সিবিআই মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছে।
সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যুবার্ষিকী: অভিনেতার মৃত্যুতে শিল্পীদের আবেগ বাঁধ ভেঙেছিল
গত বছরের অগাস্টে তদন্তভার নেয় সিবিআই
গত বছরের অগাস্টে বিহার পুলিশের কাছ থেকে এই কেসের তদন্তভার আসে সিবিআইয়ের কাছে, এরপরই সিবিআই একাধিক ব্যক্তির বয়ান রেকর্ড করলেও এখনও পর্যন্ত সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর মামলা কোন দিকে গড়ালো তা নিয়ে কিছুই জানাতে পারেনি সিবিআই। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে এই কেস নিয়ে সিবিআইয়ের আধিকারিক ও মুখপাত্রকে বারংবার ফোন ও মেসেজ করলেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে গত বছরের অক্টোবরে এইমসের চিকিৎসকদের প্যানেল অভিনেতার ভিসেরা ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করে এটা জানিয়েছেন যে সুশান্তের মৃত্যুতে কোনও রহস্য নেই, এটি আত্মহত্যা। এইমসের পক্ষ থেকে সিবিআইকেও জানানো হয় যে অভিনেতার মৃত্যু আত্মহত্যার ফলে হয়েছে, এটা খুন নয়।
মুম্বই পুলিশের তদন্ত
ঠিক একবছর আগে ১৪ জুন মুম্বইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ। স্থানীয় বান্দ্রা পুলিশ দুর্ঘটনার মৃত্যু রিপোর্ট দায়ের করে এবং বলিউড তারকা সহ একাধিক প্রযোজক ও বিভিন্ন ব্যক্তিদের ব্যান রেকর্ড করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলা হয়। যদিও মুম্বই পুলিশ অভিনেতার মৃত্যুর তদন্ত করছিল, কিন্তু একমাস পর সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে রাজপুতের খুন হওয়ার বিভিন্ন তত্ত্ব সামনে আসতে শুরু করে। অভিযোগ ওঠে যে অভিনেতা ও তাঁর প্রাক্তন সহযোগী দিশা সালিয়ান, যাঁর মৃত্যু হয় ৮ জুন হয়, এই দুই মৃত্যুই একে-অপরের সঙ্গে যুক্ত।
সিবিআই–এনসিবি একযোগে তদন্ত
এর কিছুদিন পরই রাজপুতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে বিহার পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করেন সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। এরপরই সিবিআই এই মামলার তদন্তভার নেয় এবং রিয়া চক্রবর্তী সহ একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সিবিআইয়ের নিয়োগ করা এইমসের চিকিৎসকরাই জানান যে এই মৃত্যু আত্মহত্যা। আর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সি নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো রিয়া চক্রবর্তীর ফোন থেকে চ্যাট পুনরুদ্ধার করে দেখেন যে তিনি, তাঁর ভাই এবং অন্যান্যরা মিলে রাজপুতকে মাদক সরবরাহ করতেন। এইসিবি এরপরই এই মামলাকে সামনে রেখে বলিউডের মাদক চক্র ফাঁস করার সিদ্ধান্ত নেয়। যার জন্য বহু জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীকে এনসিবি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে। তবে এনসিবি রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর ভাইকে গ্রেফতার করে এবং এ বছর ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরি করে। এনসিবি এখনও এই কেসের তদন্ত করছে।
নীরব সিবিআই
সূত্রের খবর, সিবিআই যখন সুশান্ত সিং রাজপুতের মমামলা নিয়ে মৌনব্রত ধারণ করেছে তখন বিষয়টিকে একটু অন্যদিকে ঘোরাতে রাজপুত মামলায় এনসিবি বেশ কিছু গ্রেফতার করে। সম্প্রতি এনসিবির হাতে গ্রেফতার হয়েছে সুশান্তের ফ্ল্যাটমেট সিদ্ধার্থ পিঠানি, তবে মাদক কাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য। এ বছরের গোড়াতে সুপ্রিম কোর্টে সুশান্তের কেস নিয়ে সিবিআইয়ের অবস্থান সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। যদিও শীর্ষ আদালত এই আবেদনকে খুব একটা পাত্তা দেয়নি এবং আবেদনকারীকে হাইকোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।