রাহুল তোপ দাগছেন, মোদী জবাব দিচ্ছেন, কিন্তু অনিল কী করছেন, জানুন তাহলে
লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। এতে সশরীরে নেই অনিল আম্বানি। কিন্তু, তিনি -ই রয়েছেন। বছর খানেক আগে থেকে সেই যে রাফলে চুক্তিতে তাঁকে নিয়ে নাড়াঘাটা শুরু হয়েছে তা এখনও চলছে।
লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। এতে সশরীরে নেই অনিল আম্বানি। কিন্তু, তিনি -ই রয়েছেন। বছর খানেক আগে থেকে সেই যে রাফলে চুক্তিতে তাঁকে নিয়ে নাড়াঘাটা শুরু হয়েছে তা এখনও চলছে। লোকসভা নির্বাচনের দিন যত এগোবে ততই যে তাঁকে নিয়ে চর্চা বাড়়বে তা বিলক্ষণ জানেন অনিল আম্বানি। রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ মোদী বিরোধী সব নেতাই তাঁর মণ্ডুপাত করবেন সেটাও ভালো করে বোঝেন অনিল আম্বানি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দলের অমিত শাহর সকলেই দেশ ও দেশবাসীদের চেষ্টা করছেন যে রাফালে চুক্তিতে যুদ্ধ বিমান বানানোর বরাত যা অনিল আম্বানির সংস্থা পেয়েছে তা নিয়ম মেনেই। তাতেও কি থামবে বিতর্ক? মনে হয় না। এহেন অনিল আম্বানির যখন অবস্থা তখন তিনি কোথায়? জানা গেল সংসদ অধিবেশনের শেষদিনে রাজধানী দিল্লির বুকেই অধিকাংশ সময়টা কাটিয়েছেন আম্বানি সাম্রাজ্যেরে ছোট রাজকুমার। দিনের অর্ধেকটা সময়ই কেটেছে সুপ্রিম কোর্টের অলিন্দে আর বিচারপতিদের এজলাসে। কারণ, এদিনই এরিকসনের দায়ের করা মামলায় রায় ঘোষণার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টের।
যদিও, এদিন আর রায় শোনায়নি সুপ্রিম কোর্ট। এরিকসন এবং রিলায়েন্স কমিউনিকেশন লিমিটেডের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনে দুই বিচারপতি-কে নিয়ে তৈরি বেঞ্চ। কিন্তু রায় ঘোষণা আপাতত স্থগিত রাখেন বিচারপতি রোহিংটন নরিম্যান এবং বিচারপতি বিনীত সরণ। অনিল আম্বানির সংস্থা আর কম-এর কাছে ৫৫০ কোটি টাকা পাওনা এরিকসনের। এই অর্থ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মেটাতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু, অনিল আম্বানি তা মেটাননি। এরিকসনের পক্ষে সওয়ালকারী আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে আদালতকে জানান ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অর্থ মেটানোর কথা থাকলেও তা করেনি আর কম। এমনকী, সেপ্টেম্বরের পরও কয়েক মাস ধরে কিছুই বলা হয়নি। তারপরও বকেয়া অর্থ ফেরতের কোনও আগ্রহই দেখায়নি আর কম। এটা আদালতের নির্দেশের আবমাননা।
Supreme Court reserves its judgement on a contempt plea filed against Reliance Communication (RCom) chairman Anil Ambani by Ericsson India over not clearing its dues of Rs 550 crore; Anil Ambani leaves from the Supreme Court, Delhi pic.twitter.com/JhwfHQfbvj
— ANI (@ANI) February 13, 2019
[আরও পড়ুন:'মহাজোটে পা বাড়াবেন না', বিদায়ী ভাষণে সতর্ক করলেন মোদী]
উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের আইনজীবী মুকুল রোহাতগি জানান, রিলায়েন্স জিও -কে স্পেকট্রাম বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর কম। এই স্পেকট্রাম বিক্রি করেই এরিকসনের বকেয়া যে মেটানো হবে তা আগেও জানানো হয়েছে। কিন্তু, স্পেকট্রাম বিক্রির জন্য় যে প্রয়োজনীয় অনুমতি টেলিকমিউনিকেশন মন্ত্রক থেকে পাওয়ার কথা ছিল তা এখনও আসেনি। এই নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট এলেই আর কম তাদের স্পেকট্রাম রিলায়েন্স জিও-কে বিক্রি করতে পারবে। এখান থেকে ৭৮০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। ফলে এরিকসনের বকেয়া মেটাতে কোনও বাধা থাকবে না। সেই সঙ্গে রোহাতগি উল্লেখ করেন য়ে আর কম কোনও ব্যক্তি মালিকানাধিন সংস্থা নয়। এটা শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত একটি সংস্থা। সুতরাং, আদালত অবমাননায় অনিল আম্বানিকে কাঠগড়ায় তোলার কোনও মানে নেই। শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত কোনও সংস্থার কোনও এক ব্যক্তি বিশেষ এই ধরনের বকেয়া মেটানোর কাজ করেন না।
[আরও পড়ুন: মোদীর মেয়াদ ফুরনোর দিনে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের বার্তা, রাবণ কটাক্ষে বিঁধলেন মমতা]
দুই পক্ষের আইনজীবী-র বক্তব্য শুনে এজলাস ছাড়েন দুই বিচারপতি। এদিন তাঁরা কোনও রায় দেননি। যদিও সুপ্রিম কোর্ট থেকে বেরনোর সময় অনিল আম্বানিকে যথেষ্টই চিন্তামগ্ন দেখায়। রিলায়েন্স কমিউনিকেশন-এই দেনার দায় নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিতর্কে জড়িয়েছেন অনিল আম্বানি। এদিন নিয়ে পরপর দু'দিন তিনি দিল্লি-তে রয়েছেন। রিলায়েন্স কমিউনিকেশনকে আর্থিক অনাদায়ে পড়া সংস্থার তালিকায় ঢোকানোর জন্য চেষ্টা করে চলেছেন অনিল। তবে, আদালত অবমাননা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয় সেটাই এখন দেখার।
[আরও পড়ুন: মুলায়মের আশীর্বাদ মোদীকে, শুনে কী বললেন প্রধানমন্ত্রী ]