সমকামী যৌনতা কি অপরাধ বলেই গণ্য হবে, বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক রায়দান
আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তারপরই আসতে পারে এক ঐতিহাসিক রায়। যার অপেক্ষায় রয়েছে গোটা দেশ।
আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তারপরই আসতে পারে এক ঐতিহাসিক রায়। যার অপেক্ষায় রয়েছে গোটা দেশ। কারণ ভারতীয় দণ্ডবিধি-তে আদৌ ৩৭৭-এর কোনও দরকার আছে কি না তা নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। দীর্ঘদিন ধরেই ৩৭৭ নম্বর ধারাকে বাতিল করার দাবি তুলেছে সমকামীরা। ১৭ জুলাই শীর্ষ আদালত ৩৭৭ নিয়ে তার চূড়ান্ত রায়দান স্থগিত রাখে। তখনই জানানো হয়েছিল যে এই নিয়ে ৬ সেপ্টম্বর চূড়ান্ত রায় দেওয়া হবে।
৩৭৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে কেউ একই লিঙ্গের মধ্যে যদি যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে তা অপরাধ। ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই আইন-এর যৌক্তিকতা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক চলেছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সুপ্রিম কোর্টের উপরে ছেড়ে দিয়েছে। শীর্ষ আদালতও বুঝিয়ে দিয়েছে ৩৭৭-এ সমকামী সম্পর্ককে যে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছে তা বর্তমান সময়ে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই সমকামীদের আশা শীর্ষ আদালত ৩৭৭-কে নির্মূল করার পক্ষেই রায় দেবে।
শীর্ষ আদালতের মতে এরকমটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে সমকামীদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক না থাকলে সমাজে কোনও অপরাধ সংঘটি হবে না। আরও জানানো হয়েছে যে, সমকামীদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক যদি মেনে নেওয়া না যায় তাহলে সমাজের কলঙ্ক ও বঞ্চনা চলতেই থাকবে। এমনকী যদি ৩৭৭-কে রেখেও দেওয়া হয় তাহলেও সমস্ত দিক থেকেই এতে বলা অপরাধ-এর প্রয়োজনীয়তাকে বিচার করতে হবে।
২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট ৩৭৭ ধারা থেকে অপরাধ-কে নিমূর্ল করার পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু ২০১৩ সালে সুরেশকুমার কৌশল বনাম নাজ ফাউন্ডেশনের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। চলতি বছরের মে মাসে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির এলজিবিটি-দের প্রাক্তনীদের অ্যাসোসিয়েশন ৩৭৭ বাতিল করতে মামলা করে। অবশ্য এর আগেই ২৭এপ্রিল হামসফর ট্রাস্টের অশোক রাও কাভি এবং আরিফ জাফর ৩৭৭ ধারা-র বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেছিলেন।
ভারতীয় দণ্ডবিধির৩৭৭-ধারায় বলা হয়েছে যে প্রকৃতির সৃষ্টির বিরুদ্ধে গিয়ে যে পুরুষ বা রমণী নিজস্ব লিঙ্গে তৃপ্তিদায়ক যৌন সম্পর্কস্থাপন করবে অথবা পশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে লিপ্ত হবে তাহলে তা অস্বাভাবিক অপরাধ বলে গণ্য় হবে এবং ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড-সহ আর্থিক জরিমানা করা হবে।