সিবিআই-এর গৃহযুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা, নিস্কলঙ্ক কি প্রমাণ হবেন অলোক ভার্মা
সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ল সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে চলা তদন্তের রিপোর্ট। সেন্ট্রাল ভিজিল্য়ান্স কমিশনের এই তদন্ত রিপোর্ট একটি মুখ বন্ধ খামে করে শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ল সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে চলা তদন্তের রিপোর্ট। সেন্ট্রাল ভিজিল্য়ান্স কমিশনের এই তদন্ত রিপোর্ট একটি মুখ বন্ধ খামে করে শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে, এই রিপোর্ট-এ কী রয়েছে তা এদিন প্রকাশ্যে জানায়নি আদালত। শুক্রবার এই নিয়ে শুনানি হবে।
সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এই তদন্ত চলছিল। সিভিসি-র এই তদন্তে নেতৃত্ব দেন প্রাক্তন বিচারপতি এ কে পট্টনায়েক। সুত্রের খবর তদন্তে অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে তেমন কোনও শক্তিশালী তথ্য-প্রমাণ মেলেনি। ফলে, অলোক বার্মার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার ঘুষ নেওয়ার যে অভিযোগে সিভিসি তদন্ত শুরু করেছিল তাতে তাঁর ক্লিনচিট পাওয়া একপ্রকার নিশ্চিত বলেই এই সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
সিবিআই-এর সেকেন্ড ইন কমান্ড রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে অলোক বার্মা-র নির্দেশে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ আস্থানা-কে এরপর চরম বিতর্ক শুরু হয়। এরই মধ্যে আস্থানা ঘনিষ্ট এক সিবিআই ডিএসপি-কেও গ্রেফতার করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দুই শীর্ষস্থানীয় এই কর্তার এমন ঠান্ডা লড়াইয়ে প্রবল উত্তেজনাও শুরু হয়। মোদী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও এই ইস্যুতে অলোক বার্মার হয়ে সওয়াল করে। ২৩ অক্টোবর সিবিআই প্রধান অলোক বার্মা-কে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। তার আগের রাতেই অলোক বার্মার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে সিভিসি। অলোক বার্মাও এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এই মামলায় অলোক বার্মা-কে ছুটি রাখার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিলেও, সিভিসি-র তদন্তে নজর রাখার জন্য প্রাক্তন বিচারপতি এ কে পট্টনায়েক নিয়োগ করেছিলেন।
শুক্রবারই অলোক বার্মার বিরুদ্ধে তাদের তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করে ফেলেছিল সিভিসি। সূত্রে যা খবর তাতে অলোক বার্মার বিরুদ্ধে যে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তার কার্যত কোনও প্রমাণই মেলেনি। এই তদন্তে সিবিআই-এর স্পেশাল ডিরেক্টর এবং অলোক বার্মার পরে সিবিআই-এর দ্বিতীয় কর্তা রাকেশ আস্থানার একটি রিভিউ রিপোর্ট-কে মূলত ভিত্তি করা হয়েছিল। অলোক বার্মার বিরুদ্ধে ২৪ আগাস্ট এই রিপোর্টটি ক্যাবিনেট সচিবের কাছে জমা করেছিলেন রাকেশ আস্থানা। তাঁর অভিযোগ ছিল সতীশ বাবু সানা নামে হায়দরাবাদের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন আলোক বার্মা। এই সতীশ বাবু আবার মাংসের রফতানি ব্যবসায় যুক্ত থাকা মইন কুরেশি-র সঙ্গেও একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত। অলোক বার্মা সতীশ বাবুকে সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্ত করে দেওয়ার আশ্বাস নাকি দিয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: 'নিউটন' ছবিটি দেখেছেন কি, তাহলে চিনে নিন বাস্তবজীবনের এই সব নিউটনদের ]
আস্থানার এই অভিযোগের ২ মাস পর আস্থানা এবং সিবিআই ডিএসপি দেবেন্দ্র কুমার, মনোজ প্রসাদ ও সোমেস প্রসাদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়। এর আগে ৪ অক্টোবর সতীশ বাবু একটি অভিযোগ দায়ের করে অভিযোগ করেন যে প্রসাদের নির্দেশেই তাঁকে ৩কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল। আর এই ঘুষ দিতে হয়েছিল আস্থানার নামে। ১৫ অক্টোবর এই অভিযোগের বিরুদ্ধে সিবিআই আস্থানা এবং বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল।
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য লোকসভা! এবার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনে ভাঙন ধরালেন মুকুল]
এই এফআইআর দায়েরের পরই আস্থানা পাল্টা অলোক বার্মার বিরুদ্ধে ময়দানে নামেন। যার জেরে তাঁর অলোক বার্মা ও আস্থানা দু'জনকেই ছুটি-তে যেতে হয়।