মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানোর দাবি জানিয়ে করা আবেদন খারিজ সুপ্রিমকোর্টে
সিএএ-র বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারা পরিচালিত গণভোট চেয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর জেরে অনেকেই প্রশ্ন তোলে যে একজন সাংবিধানিক পদে থাকা নেতা এভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ চাইতে পারেন কি না। মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবি অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে এরপর সুপ্রিমকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক সাংবাদিক। তবে সেই আবেদনকে খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে আজ তাঁকে হাইকোর্টে যেতে বলেন।
কী বলে শীর্ষ আদালত?
প্রধান বিচাপরতি আবেদনকারীকে বলেন, 'আমরা অস্বীকার করছি না যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আপনি আগে এই আবেদনটি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।' আবেদনে দাবি করা হয় যে, ভারতের সংবিধানের তৃতীয় তফসিল অনুযায়ী শপথ নেওয়া মুখ্যমন্ত্রী কখনই দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিতে পারেন না। তবে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়ে সেটি করেছিলেন মমতা। এবং এই কারণেই আবেদনকারীর দাবি ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারিত করুক।
যেই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক
কলকাতায় রানি রাসমণি রোডে সিএএ বিরোধী এক জনসভা থেকে কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বুকের পাটা থাকলে একটা ভোট হোক। সারা দেশে গণভোট হোক সিএএ ও এনআরসি নিয়ে। সরকার করবে না, রাষ্ট্রসংঘ করবে। রাষ্ট্রসংঘ, মানবাধিকার কমিশন, আর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি হোক। আমরা চাই, তারা ভারতবর্ষে গণভোট করুক। দেখা যাক এই আইন কতজন মানছেন আর কতজন মানছেন না।'
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন রাজ্যপাল
সিএএ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নজরদারিতে গণভোটের দাবি জানানোয় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় টুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন, 'আমাদের প্রতিষ্ঠাতাদের নাম করে তাঁর কাছে আবেদন করছি, নিজে যা শপথ নিয়েছেন, সেই মতো আচরণ করুন আর নিজের বক্তব্য ফিরিয়ে নিন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নেত্রী হিসেবে এমন মন্তব্যের দ্বারা তিনি মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারেন না।'
বিতর্ক এড়াতে ব্যখ্যা দেন মমতা
পরে বিতর্ক এড়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'গণভোট নয়, জনমত সমীক্ষা চেয়েছিলাম। রাষ্ট্রসংঘ, মানবাধিকার কমিশনের কথা বলেছিলাম কারণ ওরা নিরপেক্ষ সংস্থা।' তিনি আরও বলেছিলেন, 'উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থান থেকে কেরালা, তামিলনাড়ু, অসমের সবাই নাগরিক। হঠাৎ করে তাহলে বিজেপি-র মাদুলি পরে প্রমাণ করতে হবে যে নাগরিক কি না।'