ধর্ষণের মামলায় ‘দুই আঙুলের’ পরীক্ষার তীব্র নিন্দা, নিষিদ্ধ করল সুপ্রিম কোর্ট
ধর্ষণের মামলায় দুই আঙুলের পরীক্ষা বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট
সোমবার ধর্ষণের ক্ষেত্রে দুই আঙুলের পরীক্ষা নিষিদ্ধ করল সুপ্রিম কোর্ট। সতর্ক করে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, যাঁরা এই পরীক্ষা করবেন, অসভ্য আচরণের জন্য তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে। এটি একটি অবৈজ্ঞানিক পরীক্ষা বলেও সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে।
একটি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় রায় দিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, নির্যাতিতার যৌন ইতিহাসের প্রমাণ মামলার উপাদান হয়। এটা দুঃখজনক যে, এই ধরনের পরীক্ষা আজও হয়। সুপ্রিম কোর্ট সতর্ক করে বলেন, দুই আঙুলের পরীক্ষা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যে কেউ এই পরীক্ষা করলে তাঁকে অসদআচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করতে হবে। ধর্ষণ থেকে বেঁচে যাওয়া মহিলার পরীক্ষা করা অবৈজ্ঞানিক। মহিলার বিরুদ্ধে যৌন পীড়নের বার্তা বহন করে এই ধরনের পরীক্ষা।
ধর্ষণ ও খুনের মামলায় হাইকোর্ট অভিযুক্তকে খালাস দেয়। হাইকোর্টের রায়কে বাতিল করে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অভিযুক্তকে সুপ্রিম কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই পরীক্ষাটি অসংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল পরীক্ষা করাটি ঠিক নয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গবেষণায় জানান গিয়েছে, দুই আঙুলের পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখা নেই। কি্ন্তু তারপরেও নির্যাতিতাদের এই পরীক্ষা করা হতো।
নির্যাতিতারা এমনিতে মানসিক ও শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত থাকে। তারপর এই ধরনের পরীক্ষা নতুন করে মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়। অনেক ক্ষেত্রেই নির্যাতিতারা এই পরীক্ষাকে যৌন হেনস্তা বলেই মনে করেছেন। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, এটি অনেক পুরনো দিনের পদ্ধতি। বার বার প্রমাণিত হয়েছে, এই পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখা নেই। তারপরেও এই ধরনের পরীক্ষা দুঃখজনক।
দুই আঙুলের পরীক্ষা হল একটি অবৈজ্ঞানিক পরীক্ষা। এখানে নির্যাতিতার যোনিপথে দুটো আঙুল প্রবেশ করানো হয়। এর মাধ্যমে যোনিপথে পেশিগুলোর শিথিলতা পরিমাপ করা হয়। অনেকক্ষেত্রে এইভাবে কুমারীত্ব নির্ধারন করা হয়। একটি পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা, কোনও মহিলা যৌনভাবে সক্রিয় হলে, তাদের যৌন হেনস্তা কম হয়। বিভিন্ন বিচার ও গবেষণায় বার বার এই পরীক্ষার সমালোচনা করা হয়েছে। তবে এই পরীক্ষাকে এখনও অবধি বাতিল করা হয়নি বলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি চন্দ্রচূর বাতিল করেন। শুধু তাই নয়, যিনি এই পরীক্ষা করবেন, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সুপ্রিম কোর্ট জানায়।
ইডির ডাকে সাড়া দিলেন সুকন্যা, ২ নভেম্বর দিল্লিতে হাজিরা দেবেন অনুব্রত কন্যা