‘সমালোচনা দমনের চেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের!’ প্রশান্ত ভূষণের মামলা প্রত্যাহারের আর্জি ১৩১ বিদ্বজ্জনের
টুইট বিতর্কের জেরে গত সপ্তাহেই বিশিষ্ঠ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে নোটিশ পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যেই দু’টি টুইট করার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছে বলে জানা যাচ্ছে। এবার শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধেই সরব হতে দেখা গেল সমাজের বিশিষ্টজনদের একাংশকে। শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কোনও নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সমালোচনার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তারা।

প্রশান্ত ভূষণের পাশে দাঁড়িয়ে বিবৃতি প্রকাশ সমাজের ১৩১ জন বিশিষ্টজনের
সম্প্রতি প্রশান্ত ভূষণের পাশে দাঁড়িয়ে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করতে দেখা যায় সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুর এবং দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এ পি শাহকে। সমাজের বিভিন্ন মহলের খ্যাতনামা ১৩১ জন ব্যক্তিবর্গের সই সহ ওই বিবৃতি সোমবারই তাঁরা প্রকাশ্যে আনেন। প্রশান্ত ভূষণ মামলা সহ যেখানে সাম্প্রতিককালে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক পদক্ষেপেরও সমালোচনা করা হয়।

সমালোচনা দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট
এই বিবৃতিতেই সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান পদক্ষেপে ‘সমালোচনা দমনের চেষ্টা চালানোর' অভিযোগ করেছেন সমাজের বিশিষ্টজনেরা। এদিকে ২টি ট্যুইট করার কারণে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয় বলে জানা যায়। এরমধ্যে একটি ট্যুইটে বিগত ৬ বছরে ভারতের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য ৪ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে দায়ী করা করেন প্রশান্ত। আরেকটি ট্যুইটে সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদেরও সমালোচনা করা হয়। তারপরেই নড়ে চড়ে বসতে দেখা যায় সুপ্রিম কোর্টকে ।

২৭ জুন ও ২৯ জুন পরপর দুটি টুইটে সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনায় প্রশান্ত
গত ২৭ জুন ও ২৯ জুন পরপর দু'টি টুইট করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। প্রথম দিনের টুইটে প্রশান্ত ভূষণ লেখেন, "ঘোষিত ভাবে জরুরি অবস্থা জারি না করে গত ছ' বছরে ভারতে কী ভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে।" এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই ওই টুইট বার্তায় সুপ্রিম কোর্ট ও প্রাক্তণ বিচারপতিদের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। পাশাপাশি ২৯শে জুনের টুইটে মাস্ক ও হেলমেট ছাড়া বর্তমান প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের হার্লে ডেভিডসন বাইকে চড়ার ছবি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রশান্ত ভূষণ।

প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের আর্জি
বর্তমানে এই ঘটনার পরেই সুপ্রিম কোর্টের রোষানলে পরেন প্রশান্ত। বিচারপতি অরুন মিশ্র, বিচারপতি বিআর গবাই ও বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি চলছে বলে জানা যাচ্ছে। বর্তমানে এই মামলা প্রসঙ্গেই প্রশান্ত ভূষণের পাশে দাঁড়ান বিদ্বজনেরা। তাদের তরফে সদ্য প্রকাশিত বিবৃতিতে ন্যায় বিচারের স্বার্থে ও সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা বজায় রাখতে এই কেস তুলে নেওয়ারও আবেদন জানানো হয়।

সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে আলোচনার পরিসর সর্বদা উন্মুক্ত হওয়া উচিত, মত বিশিষ্টজনদের
পাশাপাশি বিবৃতিতে আরও বলা হয়, " কোনও দেশের সুপ্রিম কোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলোচনার পরিসর সর্বদা উন্মুক্ত থাকা উচিত। আদালত অবমাননার শাস্তি বা কড়া পদক্ষের ভয় ছাড়া জনগণ যাতে এই আলোচনায় অংশ নিতে পারে সেটা দেখার দায়িত্বও সুপ্রিম কোর্টের।" এদিকে বিচারপতি লোকুর ও শাহ ছাড়াও বরিষ্ঠ আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার, সি ইউ সিং, গোপাল শঙ্করনারায়ণন, সঞ্জয় হেগদে, ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, ওয়াজাহাট হাবিবুল্লাহ, লেখিকা অরুন্ধতী রায়, এবং স্বরাজ ভারতের যোগেন্দ্র যাদবও এই বিবৃতে সই করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। অগামী ৫ই অগাস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানী রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।

অযোধ্যায় ভূমি পুজোর দিন নতুন পোশাকে সেজে উঠবেন রাম লালা, কেমন হবে সেই রূপ জেনে নিন