ভোট দেওয়া শুধু সাংবিধানিক অধিকার নয়, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার, প্রতিক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের
ভোট দেওয়া শুধু সাংবিধানিক অধিকার নয়, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার, প্রতিক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের
সু্প্রিম কোর্টে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে তর্ক শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সংবিধানিক বেঞ্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে অস্বচ্ছতার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতি কে এম জোসেফ ভোটার অধিকার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করেন।
ভোট দেওয়া নাগরিকদের মৌলিক অধিকার
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি কে এম জোসেফ বলেন, ভোটার আধিকার দেশের কোনও নাগরিকের শুধুমাত্র সাংবিধানিক অধিকার নয়। এটি দেশের প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। বিচারপতির এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেন নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী। এই পরিস্থিতি বিচারপতি কে এম জোসেফ আইনজীবীকে ভারতীয় সংবিধানের ৩৬ নম্বর অনুচ্ছেদ পড়ে শোনাতে বলেন। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী সংবিধানের ৩৬ নম্বর অনুচ্ছেদ পড়ে শোনান।
অযোগ্য ঘোষণা করলেও ভোট দানের অধিকার থাকে
সুপ্রিম কোর্টের সংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতি কে এম জোসেফ বলেন, সংবিধানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকরা সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য উপযুক্ত হবেন। প্রথমে সংবিধান অনুসারে ২১ বছরের পর থেকে ভারতীয় নাগরিকরা ভোটদানের জন্য উপযুক্ত হতেন। পরে সেই বয়স কমিয়ে ১৮ বছর করা হয়েছে। আইনসভার দ্বারা কোনও ব্যক্তি অযোগ্য হলে, তাঁর ভোট দানের অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। সুপ্রিম কোর্টের সংবিধানিক বেঞ্চ ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে অস্বচ্ছতা
ইতিমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সরাসরি তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রশ্ন করেন, যদি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, সেক্ষেত্রে তিনি কি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবেন না। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ব্যবস্থাটা ভেঙে যাবে বলে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের তরফে মন্তব্য করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনকে সব সময় নিরপেক্ষ থাকতে হবে। তা না হলে, ভারতের গণতন্ত্রের ওপর প্রভাব পড়বে।
সুপ্রিম কোর্টে অস্বস্তি কেন্দ্রের
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রশ্ন করেন, এত তাড়াহুড়ো করে কেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হল। সমস্ত নথি দেখার পর সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মূলত আইনমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নামের তালিকা পাঠায়। প্রধানমন্ত্রী সেখান থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বেছে নেন। কেন্দ্রের পেশ করা নথিতে দেখা গিয়েছে, ১৮ নভেম্বর আইনমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে চার জনের নাম প্রধান নির্বাচন কমিশনার জন্য পাঠান। সেই দিনই প্রধানমন্ত্রী একজনকে বেছে নেন। সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, যেদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হল, সেই দিনই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়। অথচ মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এই পদটি ফাঁকা ছিল। কিন্তু সেই পদ পূরণ করার জন্য কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।