মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে জামিন, ছাড়া পেলেন ভীমা কোরেগাঁওয়ের অন্যতম অভিযুক্ত ভারভারা রাও
অবশেষে জামিনে মুক্ত হলেন ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অভিযুক্ত আন্দোলনকারী তথা কবি অশীতিপর ভারভারা রাও। বুধবার মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। জামিন মঞ্জুর করার সময় বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানান যে তিনি যেন কোনওভাবেই তাঁর স্বাধীনতার অপব্যবহার না করেন।
৮৩ বছরের ভারভারা রাও তাঁর স্থায়ী মেডিক্যাল জামিনের পিটিশন বম্বে হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যাওয়ার পর তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ভারভারা রাও মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে অন্তর্বতীকালিন জামিনে ছিলেন এবং তাঁর ১২ জুলাই আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল। তবে সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ১২ জুলাইয়ের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় ভারভারা রাওয়ের। বুধবার বিচারপতি ইউইউ ললিতের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে।
সেই সঙ্গে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছে। জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে জানিয়েছে, 'গত এক বছরে আবেদনকারীর শারীরিক অবস্থার এমন কোনও উন্নতি হয়নি, যার নিরিখে তাঁর জামিনের আর্জি মঞ্জুরের ক্ষেত্রে আপত্তি তোলা যেতে পারে। এই মামলার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর শারীরিক অবস্থার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে। তাছাড়া যে অভিযোগের নিরিখে আবেদনকারীকে আটকে রাখা হয়েছে, সেই অভিযোগের চার্জশিট দাখিল হয়নি। সুতরাং, ভারভারা রাও মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে জামিন পাওয়ার অধিকারী। পাশাপাশি তিনি আডা়ই বছর কারাবাসে কাটিয়েছেন। তার নিরিখেও এই জামিনের আবেদন যুক্তিযুক্ত। তাছাড়া অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হলেও কী অভিযোগে চার্জগঠন তার কোনও উল্লেখ নেই। এটা রীতিমতো বিস্ময়ের।'
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুনেতে এলগার পরিষদের কনক্লেভে উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখার অভিযোগ ওঠে ভারভারা রাও, মানবাধিকার কর্মী স্ট্যান স্বামীদের বিরুদ্ধে। যার ফলস্বরূপ পশ্চিম মহারাষ্ট্র শহরের প্রত্যন্ত জায়গা কোরেগাঁও-ভীমা ওয়ার মেমোরিয়ালের কাছে হিংসাত্মক ঘটনার সূত্রপাত হয়। পুনে পুলিশ সেই সময় দাবী করেছিল যে এই কনক্লেভ বা সম্মেলন যাঁরা আয়োজন করেছিলেন তাঁদের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগ রয়েছে। পরে এই মামলার তদন্তভার নেয় এনআইএ। ২০১৮ সালের ২৮ অগাস্ট রাওয়ের হায়দরাবাদের বাড়ি থেকে এনআইএ তাঁকে গ্রেফতার করে এবং তাঁর মামলাটি এতদিন বিচারাধীন ছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধি ও বেইআইনি কর্যকলাপের একাধিক ধারায় রাওয়ের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি পুনে পুলিশ মামলা দায়ের করে। এই মামলায় আর এক অভিযুক্ত স্ট্যান স্বামীর কারাগারেই মৃত্যু হয়।