অসন্তুষ্ট সেনা নিয়ে করোনা লড়াই সম্ভব নয়, চিকিৎসকদের বেতন সমস্যা নিয়ে কড়া বার্তা সুপ্রিমকোর্টের
দিল্লির কস্তুরবা হাসপাতালে রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা গণ ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। বিগত তিন মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় উত্তর দিল্লির কস্তুরবা হাসপাতালের চিকিৎসকরা গণ ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৬ জুনের মধ্যে বেতন না পেলে, চিকিৎসকরা ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
বেতন সমস্যা নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে মামলা
এই পরিস্থিতিতে এই বিষয়টি গড়ায় সুপ্রিমকোর্টে। এই মামলার প্রেক্ষিতে শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের সাফ বক্তব্য, দেশ এই করোনা পরিস্থিতিতে অশন্তোষে ভোগা সৈনিকদেন নিয়ে চলতে পারে না। কোভিড ১৯-র বিরুদ্ধে যুদ্ধে চিকিৎসকদের ওপর অনায্য ব্যবহার চলছে বলেও এদিন আদালত জানায়।
সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছে শীর্ষ আদালত
স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের বকেয়া বেতন নিয়ে কোনও গণ্ডগোলে ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত এদিন বলে, 'যুদ্ধের সময় সেনাদের অখুশি রাখা উচিত না, একটু বেশি উদ্যেগী হন, একটু বেশি সামর্থ্য ব্যয় করুন, ওঁদের মনোমালিন্য দূর করে করুন।' এই সমস্যা মেটাতে সরকার নিজের থেকে উদ্যোগ নিক, এমনটাই বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টের।
দিল্লির পরিস্থিতি শোচনীয়
এদিন সুপ্রিমকোর্ট দিল্লি সরকারকে তোপ দেগে আরও বলে, 'দিল্লির পরিস্থিতি শোচনীয়, ভয়ঙ্কর এবং উদ্বেগের। সেখানকার হাসপাতালগুলোর পরিস্থিতিও অত্যন্ত খারাপ, এমনকী মৃতদেহগুলোকেও ঠিকভাবে রাখা হচ্ছে না। রোগীদের পরিবারকেও মৃত্যুর খবর ঠিকমতো জানানো হচ্ছে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো পরিবারও শেষকৃত্যে অংশ নিতে পারেনি।'
চিকিৎসকদের অভিযোগ
এক চিকিৎসকের দায়ের করা পিটিশনের শুনানিতে এই মত তুলে ধরেছে সুপ্রিমকোর্ট। অভিযোগ, একাধিক জায়গায় চিকিৎসকরা বেতন পাচ্ছেন না, তাঁরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কারণ কোথাও বেতন দেরিতে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও বেতন কম দেওয়া হচ্ছে। আবার কোথাও অনেক মাস ধরে বেতন দেওযাই হচ্ছে না।
করোনা সম্পর্কিত সুরক্ষা বিধি মানা হচ্ছে না
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের ৭ থেকে ১৪ দিনের কাজের পরে হোটেল ও গেস্ট হাউসে আলাদা করে থাকার ব্যবস্থা করার বিষয়টি নিয়ে আদালতে পিটিশন দেয় আরুশি জৈন৷ তিনি অভিযোগ করেন, তাদের হোটেলে একই রুমে কয়েকজনকে থাকতে হচ্ছিল৷ ফলে করোনা সম্পর্কিত সুরক্ষা বিধি মানা হচ্ছিল না। আজ এই শুনানি চলাকালীন সরকারের তরফের আইনজীবী ছিলেন সলিসিটর জেনেরাল তুষার মেহেতা৷ আবেদনকারীর আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী কেভি বিশ্বনাথন৷
বেতন না পেয়ে চিকিৎসকদের হুমকি
এর আগে বৃহস্পতিবার কস্তুরবা হাসপাতালের সুপারকে লেখা এক চিঠিতে চিকিৎসকরা বলেন, 'আমরা টাকা ছাড়া কাজ করতে পারব না। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে কাজ করছি। এর জন্য আমাদের সঠিক সময়ে বেতন দেওয়া উচিত। যদি ১৬ তারিখের মধ্যে বেতন না দেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতে সঠিক সময়ে বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা গণ ইস্তফা দিতে বাধ্য হব। আশা করা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং সময়ের মধ্যেই এই পরিস্থিতির সমাধান করবে।'
লকডাউন শিথিলেই করোনা বাড়ছে উদ্দাম গতিতে! বিভীষিকাময় রেকর্ডের আতঙ্ক তাড়া করছে ভারতকে