সুপার স্প্রেডার ইভেন্টই দায়ী দেশে করোনা কেস বৃদ্ধিতে, মত বিশেষজ্ঞদের
জানুয়ারি মাস থেকে টিকাকরণ কর্মসূচী শুরু হোযার পর থেকে দেশ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হ্রাস পেতে শুরু করেছিল। তবে বিগত কয়েক দিন যাবৎ দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ফের আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সরকার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কেন্দ্র মনে করছে এই বৃদ্ধির পেছনে হয়ত সার্স–কোভ–২–এর নতুন প্রজাতি দায়ি থাকতে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞরা এই তত্ত্বকে মানতে নারাজ, তাঁরা বরং বলেছে এ সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
সুপার স্প্রেডার ইভেন্ট
যদিও করোনা ভাইরাসের আচরণ সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছে। এ রকম আবহে করোনা কেসের বৃদ্ধি দেখা দিয়েছে মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কেরল, ছত্তিশগড় এবং কর্নাটকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি নয়া ভাইরাস প্রজাতির সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নয়, বরং দেশের সুপার স্প্রেডার ইভেন্টগুলি এই বৃদ্ধির জন্য দায়ি। প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের প্রভাব কমার সঙ্গে সঙ্গে দেশে বিভিন্ন ধরনের উৎসব-সামাজিক অনুষ্ঠানের পালা চলা শুরু হয়ে যায়। তাতে করোনার কোনও বিধি সেভাবে মানা হয়নি আর তাই দেশে দ্বিতীয়বার সংক্রমণ শুরু হয়েছে।
লকডাউনের পর থেকে ছড়াচ্ছে ভাইরাস
নিমহানের নিউরোবায়োলজির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং কর্নাটক সরকারের সার্স-কোভ-২-এর জেনোমিক কনফার্মেশনের অফিসার ডাঃ রবি এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে সুপার স্প্রেডার ইভেন্টের কারণে করোনা ভাইরাস কেসগুলি দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এরপর ট্র্যাকিং, টেস্ট ও সংক্রমণ সনাক্ত করার প্রক্রিয়াতেই গাফিলতি করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমাদের নিজস্ব করোনা প্রজাতি রয়েছে যা অ্যামিনো অ্যাসিড প্রজাতির সঙ্গে মিশে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ বাড়াচ্ছে এ কথা সত্যি নয়। অন্যান্য জায়গাতেও এই বদলের সাক্ষী রয়েছি আমরা। আমরা নিমাহানে জেনোমিক সিক্যুয়েন্সিং করছি। আমরা ৪৪০ ও ৪৮৪ উভয় প্রজাতির ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছি যা লকডাউনের পর থেকেই দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।'
ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা
করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নতুন প্রজাতির ভাইরাসের ওপর প্রভাব ফেলবে কিনা সে প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে নতুন প্রজাতির ভাইরাসের ওপর ভ্যাকসিন কাজ করবে না ধরনের কোনও প্রমাণ এখনও তাঁদের হাতে আসেনি। ভারতে বাড়তে থাকা করোনা ভাইরাস কেসের জেরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে যে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিদ্যমান কোভিড-১৯ গাইডলাইন জারি থাকবে। এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে যে সক্রিয় এবং নতুন করোনা ভাইরাস কেস যথেষ্ট পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে, তবে মহামারিটি পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে নজরদারি, নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কতা বজায় রাখা দরকার।
চিন্তা মহারাষ্ট্র–কেরলকে নিয়ে
ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র ও কেরলে করোনা ভাইরাসের দৈনিক কেস বৃদ্ধি রাজ্য ও কেন্দ্র উভয় সরকারকেই চিন্তায় ফেলেছে। তবে মহারাষ্ট্রে সম্পূর্ণ লকডাউন জারি না করে কঠোর কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।