কিছুক্ষণ সূর্যের আলোয় রোদ পোহান, ভিটামিন ডি আপনাকে করোনা থেকে দূরে রাখবে
কিছুক্ষণ সূর্যের আলোয় রোদ পোহান, ভিটামিন ডি আপনাকে করোনা থেকে দূরে রাখবে
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে হলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে হবে। আর তার জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ার কথাই বলছেন চিকিৎসকরা নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নতুন সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে কোভিড–১৯ রোগে শরীরের প্রতিক্রিয়াতে ভিটামিন ডি স্তরগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ভিডামিন ডি–এর যোগ
গবেষকরা ১০ টি দেশের ডেটা বিশ্লেষণ করার পরে, হাইপারেক্টিভ ইমিউন সিস্টেম এবং ভিটামিন ডি এর অভাবের মধ্যে একটি যোগসূত্র লক্ষ্য করেছেন। এই গবেষণার প্রধান লেখক ভাদিম ব্যাকম্যান সতর্ক করে জানিয়েছেন যে শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব থাকলে মৃত্যুর হার বাড়তে পারে, কোভিড-১৯ রোগীর দেগে যদি ৫০ শতাংশ ভিটামিন ডি-এর অভাব দেখা দেয় তবে অবস্থা জটিল হতে পারে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে এই ভিটামিন ডি। অর্থাৎ করোনার যম ভিটামিন ডি।
ভিটামিন ডি–এর কাজ
কোভিড-১৯ ভাইরাস মানব শরীরে ঢুকলেই স্বমূর্তি ধারণ করে। কোষগুলো নির্বিচারে ধ্বংস করে দেয়। প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে ক্রমশ মৃত্যু হয়। এই মারাত্মক শত্রুর হাত থেকে নিস্তার পেতে নতুন পথ বাতলেছেন অধ্যাপক ভাদিম ব্যাকম্যান। অধ্যাপক ব্যাকম্যান ইতালি, চীন, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি কম তারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন করোনা ভাইরাসে। মৃত্যুও হচ্ছে নির্বিচারে। ঠিক উল্টো দিকে যাদের শরীরে তুলনামূলকভাবে ভিটামিন ডি বেশি, তারা দিব্য সুস্থ। ভিটামিন ডি একটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড, এর গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট অন্ত্রের শোষণ বৃদ্ধি করে। এটি অনাক্রম্যতা বাড়ায় এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থাটিকে অতিরিক্ত কমে যাওয়া থেকে বাধা দেয়, যা কোনও কোভিড-১৯ সংক্রমণের সময় মারাত্মক হতে পারে।
ভিটামিন ডি–করোনা মৃত্যুর যোগসূত্র
ব্যাকম্যান ও তাঁর দল ভিটামিন ডি-এ ভূমিকা খুঁজতে গিয়ে দেখেছেন যে বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর হারের পরিসংখ্যান ভিন্ন ভিন্ন। করোনায় মৃত্যুর হার বেশি ব্রিটেন, স্পেন ও ইতালিতে। যদিও কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, বয়সজনিত কারণ, টেস্টিংয়ের হার, স্বাস্থ্য পরিষেবার গুণগত মান এবং আলাদা ও করোনা ভাইরাসের জটিলতার কারণ এইসব দেশে মৃত্যু বেশি। যদিও ব্যাকম্যান সন্দেহ করছেন এর পেছনে কারণ অন্য। তিনি জানিয়েছেন, ভিটামিন ডি-এর অভাবেই এই তিন দেশে মৃত্যুর পরিমাণ এত বেশি। ব্যাকম্যান এবং তাঁর সহকর্মীদের পর্যবেক্ষণ হল, ভিটামিন ডি'র সঙ্গে মানবদেহে সাইটোকাইন ঝড়ের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ফুসফুস, শ্বাসনালিতে তীব্র প্রদাহ হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট তীব্র হয়। রক্ত জমাট বাঁধে। যাঁদের শরীরে ভিটামিন ডি থাকে তাঁদের এই সমস্যা হয় না। তাই শিশুদের রোদে কিছুক্ষণ রাখলে সর্দি-জ্বরের সমস্যা অনেকটাই কমে। ভিটামিন ডি কোষের শ্লেষ্মা নষ্ট করে।
ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে কোথা থেকে
ব্যাকম্যান ও তাঁর দল জানিয়েছেন, সূর্য থেকে যেমন ভিটামিন ডি পাওয়া যায় অনেক খাবারেও এই ভিটামিন ডি রয়েছে। করোনা সংক্রমণে ভিটামিন ডি এর ইতিবাচক ভূমিকা যেমনই হোক, সুস্থ হাড়ের জন্য এই পুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ। তাই শরীরে ভিটামিন ডি এর স্বাভাবিক মাত্রা নিশ্চিত করতে প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য রোদ পোহান, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান ও সাপ্লিমেন্ট সেবন করুন। বিভিন্ন মাছে রয়েছে ভিটামিন ডি। স্যালমন, সারদিনস, টুনা, ম্যাককেরেলে পাবেন ভিটামিন ডি। এছাড়া মাশরুমেও রয়েছে এই ভিটামিন ডি।
জুলাই নয় নভেম্বরেরই ঘটবে আর বড় বিপদ, দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নয়া দাবি আইসিএমআরের