খুন করা হয়েছিল সুনন্দা পুস্করকে! রিপোর্ট প্রকাশ্যে, ৪ বছর পরেও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশ্ন
সুনন্দা পুস্করকে খুন করা হয়েছে। এই সম্পর্কে পুলিশের গোপন রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু গত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে বিষয়টি রহস্যজনক থেকে গিয়েছে।
সুনন্দা পুস্করকে খুন করা হয়েছে। এই সম্পর্কে পুলিশের গোপন রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু গত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে বিষয়টি রহস্যজনক থেকে গিয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃতি অনুযায়ী তদন্তকারীরা প্রথম থেকেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি দিল্লির ফাইভ স্টার লীলা প্যালেস হোটেলের ৩৪৫ নম্বর ঘর থেকে সুনন্দা পুস্করের দেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে হোটেলের ৩০৭ নম্বর ঘরে থাকলেও, পরে ৩৪৫ নম্বর ঘরে গিয়েছিলেন সুনন্দা।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির বসন্ত বিহারের সাব ডিভিশনার ম্যাজিস্ট্রেট অলোক শর্মা, যিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন-সহ ময়নাতদন্ত পরিচালনা করেছিলেন, তিনি প্রথম থেকেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলতে চাননি। পুলিশের তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার বিএস জয়সওয়াল রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ করেছিলেন।
অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট না হয়ে তৎকালীন এসডিএম সরোজিনী নগর থানার অফিসারকে ঘটনাটিকে খুনের ঘটনা হিসেবে তদন্ত করতে বলেছিলেন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
অটোপসি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন তৎকালীন এসডিএম। যাতে বলা হয়েছিল, মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়। পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে তিনি বলেছিলেন, আলপ্রাজোলামের বিষক্রিয়ার মৃত্যু হয়েছে সুনন্দা পুস্করের।
সুনন্দা পুস্করের দেহের বেশির ভাগ আঘাতই ছিল ভোঁতা কিছু দিয়ে করা। যেগুলির ফলে তাঁর মৃত্যু হয়নি। দেশের ১০ নম্বর আঘাতের চিহ্নটি ছিল একটি ইনজেকশনের। ১২ নম্বরটি ছিল দাঁতে কাটার। দেহে থাকা ১৫ টি আঘাতের চিহ্নের সব কটি ১২ ঘণ্টা থেকে ৪ দিনের মধ্যে করা হয়েছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
সবকটি মধ্যে ইনজেকশনের চিহ্নটি হয়েছিল সব থেকে পরে। দেহে ধস্তধস্তির চিহ্ন ছিল। সুনন্দা পুস্কর এবং তাঁর স্বামী শশী থারুরের পার্সোনাল অ্যাটেন্ড্যান্ট নারাইন সিং-এর দেওয়া বয়ান অনুযায়ী, দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছিল। তৎকালীন দিল্লি দক্ষিণের জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ বিবেক গরিয়াকে এই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। পার্সোনালি তাঁকেই কেসটি দেখতে বলা হয়েছিল। রিপোর্টটি পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠানো হয়।
গোপন রিপোর্টের সঙ্গে অনেকগুলি বিষয় সংযোজন করা হয়েছিল। পোস্ট মর্টেম, কেমিকেল, বায়োলজিক্যাল এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট সবকটি রিপোর্টেই ঘটনাটিকে হত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। রিপোর্টে দাঁতের কামড় এবং ইনজেকশনের দাগ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।