আপের মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন আমার কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা আদায় করেছিল, অভিযোগ কনম্যান চন্দ্রশেখরের
আপের মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন আমার কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা আদায়ক করেছিল, অভিযোগ কনম্যান চন্দ্রশেখরের
২০০ কোটি টাকা তোলাবাজির অভিযোগে দিল্লি পুলিশ সুকেশ চন্দ্রশেখরকে গ্রেফতার করেছিল। চন্দ্রশেখর দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে চিঠি দিয়ে জানান, আপের মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে তিনি সুরক্ষা অর্থ হিসেবে ১০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি চিঠিতে জানিয়েছেন, সত্যেন্দ্র জৈনকে তিনি ২০১৫ সাল থেকে চেনেন।
কী লেখা আছে চিঠিতে
দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনার কাছে চন্দ্রশেখর তাঁর আইনজীবী মারফত হাতে লেখা এই চিঠি পাঠান। চিঠিতে লেখা রয়েছে, '২০১৭ সালে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর থেকে আমি তিহার জেলে বন্দি ছিলাম। সেই দিল্লির কারাগার মন্ত্রী ছিলেন সত্যেন্দ্র জৈন। তিনি একাধিকবার আমার সঙ্গে সেই সময় দেখা করেছিলেন। ২০১৯ সালে ফের সত্যেন্দ্র জৈনের সঙ্গে আমার দেখা হয়। সত্যেন্দ্র জৈনের সেক্রেটারি আমাকে বলেছিলেন, প্রতি মাসে ২ কোটি টাকা দিতে হবে সুরক্ষার জন্য। এই অর্থের বিনিময়ে তিনি জেলে অনেক সুবিধা পাবেন।'
আপকে ৫০ কোটি টাকা দেওয়ার অভিযোগ
সুকেশ চন্দ্রশেখর চিঠিতে অভিযোগ করেন, আপ দক্ষিণ ভারতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য তাঁর কাছ থেকে দল ৫০ কোটি টাকা নিয়েছে। গত মাসে সিবিআইকে তিনি কারাগারে থাকার সময় সত্যেন্দ্র জৈনকে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। যদিও দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিত কোনও বিবৃতি দেননি। তিনি চন্দ্রশেখরের চিঠির কোনও উত্তর দেননি বলেই জানা গিয়েছে।
সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মে মাসে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা আপের প্রবীণ নেতা সত্যেন্দ্র জৈনকে ইডি গ্রেফতার করে। কলকাতা ভিত্তিক সংস্থাগুলোর হাওয়াওলা লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত একট্ আর্থিক দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ইডির তরফে জানানো হয়েছে, সংস্থাগুলো ২০১০ -২০১৪ সালের মধ্যে ১৬.৩৯ কোটি টাকা পাচার করেছে।
চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ
প্রাক্তন ফোর্টিস হেলথ কেয়ার প্রোমোটার শিবিন্দর মোহন সিং-এর স্ত্রী অদিতি সহ একাধিক ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে চন্দ্রশেখরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং বর্তমানে দিল্লির মান্ডোলি জেলে বন্দি রয়েছেন। একাধিকবার তিনি তিহার জেল থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন। তাঁকে চলতি বছরের অগাস্টে তিহার জেল থেকে দিল্লির মান্ডোলি জেলে স্থানান্তর করা হয়। তিনি দাবি করেন, তিহার জেলের ভিতর থেকে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তের নির্দেশ লেফটেন্যান্ট গভর্নরের
দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা সরাসরি চিঠির কোনও উত্তর না দিলেও কয়েকদিনের মধ্যেই দিল্লি পুলিশের অর্থনৈতিক শাখাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তিহার জেলে চন্দ্রশেখরের নেতৃত্বে যে সিন্ডিকেট চলত, সেই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে ২১৫ কোটি টাকা তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি তিনি তিহার জেলে থাকার সময়ও এই তোলাবাজির ব়্যাকেট চালিয়ে যেতেন। দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যে এই বিষয়ে তদন্তে করছে। এছাড়াও চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগের তদন্ত চলছে বলে জানা গিয়েছে।