অভুক্তকে খাবার যোগাতে এই সাংবাদিক চালু করেছেন 'রোটি ব্যাঙ্ক', পড়ুন তাঁর কঠিন পথ চলার কাহিনি
'রুটি ব্য়াঙ্কের' খবর আগেও সংবাদের শিরোনামে এসেছে। এবার দেখে নেওয়া যাক কতটা কঠিন রাস্তা পেরিয়ে সাফল্যের সঙ্গে এই রুটি ব্যাঙ্ক থেকে মানুষকে খাওয়ার যোগান দিচ্ছেন তারা ও তাঁর সঙ্গীরা।
সরকার আর নাগরিক, দুয়ের একজোট হয়ে উন্নয়নের উদ্যোগেই একটি দেশের সমৃদ্ধির সার্থকতা। আর দেশের উন্নয়নে সমাজব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে যখন কে, কী খাবে তা নিয়ে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কালো মেঘ দেখা দিচ্ছে, আর মুখের গ্রাসকে কেন্দ্র করে চলছে হিংসা , হানা হানি, তখন উত্তর প্রদেশের এক ব্য়াক্তি নিরন্তর অভাবী মানুষের পেট ভরানোর জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ডের মাহবুবা শহরের এই ব্যাক্তি তারা পাটকর। পেশায় সাংবাদিক তারা এলাকার বুভুক্ষু মানুষের পেটে খাবার জোগানোর জন্য খুলে ফেলেছেন 'রুটি ব্যাঙ্ক'। 'রুটি ব্য়াঙ্কের' খবর আগেও সংবাদের শিরোনামে এসেছে। এবার দেখে নেওয়া যাক কতটা কঠিন রাস্তা পেরিয়ে সাফল্যের সঙ্গে এই রুটি ব্যাঙ্ক থেকে মানুষকে খাওয়ার যোগান দিচ্ছেন তারা ও তাঁর সঙ্গীরা।
[আরও পড়ুন:পরিবেশ বাঁচাতে হাজারের বেশি গাছ রোপন করে একা লড়ছেন দারিপল্লি, কেমন তাঁর লড়াই জেনে নিন]
রুটি ব্যাঙ্ক
'রুটি ব্যাঙ্ক'-এ হিন্দু, মুসলিম নির্বিশেষে য়ে কেউ এসে রান্না হওয়া অতিরিক্ত খাওয়ার দিতে পারেন। এই খাবার নিতে প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি যান তারা ও তাঁর সঙ্গীরা। প্রায় ৭০০ টির মতো বাড়ি থেকে তাঁরা খাবার নিয়ে আসেন। সেই খাবার জড়ো করে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০জন বুভুক্ষু ,অভাবী মানুষকে খাওয়ান তাঁরা। এখানে খাওয়ার নেওয়া ও বিতরণের সময় কোনও জাতি ধর্ম দেখা হয় না।
কীভাবে শুরু হল এই উদ্যোগ?
তারা পাটকর নিজেই বলেছেন, তিনি আরও ৫ থেকে ১০ জন সঙ্গীর সঙ্গ মিলে প্রথমে এই কাজ শুরু করেন। বেশ কিছু বাড়ি গিয়ে তাঁরা রুটি ও সবজি নিয়ে আসতেন,যা সেই পরিবারের অতিরিক্ত খাবার। দশ জনের শুরু করা সেই কাজে এখন সামিল প্রায় এক হাজার জন। তারার বক্তব্য, এই কাজের জন্য় তাঁদের অনেকই আর্থিক সাহায্য় করতে এগিয়ে আসেন। তবে তাঁদের অর্থন নয় খাবারের দরকার। তাঁদের উদ্দেশ্য এদেশে যেন কেউ অভুক্ত না থাকেন, পাশাপাশি খাবার যেন নষ্ট না হয়। সেই কাজের জ্ন্য কায়িক শ্রম আর ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট, অর্থ নয়।
তারা পাটকরের পরিচয়
দৈনিক জাগরণ, জনসত্তা এরকম বহু ধরনের নামি সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা করেছেন তারা পাটকর। পরবর্তীকালে তিনি পরিবেশ সংক্রান্ত বিভাগের সাংবাদিক হন। সেই কাজে বুন্দেলখণ্ড নিয়ে সংবাদ লেখার জন্যও তিনি পুরস্কৃত হন। সাংবাদিকতার কাজ করতে করতেই তাঁর সমাজেসেবার দিকে ঝোঁক বেড়ে যায়।
কাজের ক্ষেত্রে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তাঁরা ?
প্রথমের দিকে তারা পাটকর ও তাঁর সঙ্গীরা যখন ভিক্ষুকদের খাবার দিতে যেতেন ,তখন সেই খাবার সহজে নিতে চাইতেন না ভিখারিরা। অভাবী বহু মানুষই এরকম বিনামূল্যের খাবার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতেন। কিন্তু তাঁদের ঠাণ্ডা মাথায় বুঝিয়ে সেই খাবার দিতে হত তারা ও তাঁর সঙ্গীদের । ধিরে ধিরে সেই খাবার গ্রহণ করা শুরু হয়। উদ্দেশ্য সফল হয় তারাদের।
আর কী কী কাজ করেন তারা?
মহোবা জেলায় কোনও অভাবী মানুষ অসুস্থ হলে তাঁর চিকিৎসা ও ওষুধপত্রের ব্যবস্থাও করে থাকেন তারা পাটকর ও তাঁর সঙ্গীরা।