চিন-পাকিস্তানকে সহজেই কাঁপাবে রাফাল! ভারতীয় বায়ুসোনার নয়া যুদ্ধবিমানের বিশদ একনজরে
ফ্রান্সে তৈরি রাফাল একটি বহুক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান৷ এটির নকশা ও যুদ্ধবিমানটি তৈরি করেছে ফরাসি সংস্থা দাসোঁ অ্যাভিয়েশন৷ অস্ত্রে ভরপুর এই রাফাল জল-স্থল-আকাশে যে কোনও অভিযানের জন্য প্রস্তুত৷ ২৯ জুলাই দেশে প্রথম দফায় পাঁচটি রাফাল এসে পৌঁছায়৷ ফ্রান্স থেকে রওনা দেওয়ার দু'দিন পর আম্বালা বিমানঘাঁটিতে এসে পৌঁছায় এই যুদ্ধবিমানগুলি৷

ভারতীয় বায়ুসেনা মোট ৩৬টি রাফাল অর্ডার দিয়েছিল
ভারতীয় বায়ুসেনা মোট ৩৬টি রাফাল অর্ডার দিয়েছিল৷ ২৮টি একক সিটের ও আটটি দুই সিটযুক্ত৷ সব ক'টি যুদ্ধবিমান ২০২১-এর মধ্যে ভারতকে হস্তান্তর করা হবে৷ ১০টি ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ যার মধ্যে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভারতে এসেছে ২৯ জুলাই৷ আর পাঁচটি ফ্রান্সে প্রশিক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে৷ ১৭ নম্বর স্কোয়াড্রন (গোল্ডেন অ্যারোজ)-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে রাফালকে৷ আম্বালা ছাড়াও পরবর্তীতে হাসিমারা বিমানঘাঁটিতে এই রাফালগুলি রাখার পরিকল্পনা রয়েছে৷

চিনের জে-২০-র সঙ্গে এর তুলনা
রাফাল প্রসঙ্গ উঠলেই অনেকই চিনের 'স্টেলথ এয়ার সুপিরিওরিটি ফাইটার' জে-২০-র সঙ্গে এর তুলনা টানা শুরু হতে থাকে। যদিও সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে রাফাল আসার পরে আকাশ-যুদ্ধের প্রযুক্তিতে চিনকে পিছনে ফেলে দিতে চলেছে ভারতীয় বায়ু-সেনা। পাশাপাশি উৎকর্ষের দিক থেকেও ভারতের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী পাকিস্তান বিমানবাহিনীও কার্যত তুলনাতেই আসবে না। রাফাল চলে আসায় এবার চিন ও পাকিস্তানের উপর একপ্রকার চাপ তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট
রাফালকে বলা হয়, মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট। অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা, মিসাইল নিক্ষেপ এমনকি পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতাও রয়েছে রাফালের। পাকিস্তান ও চিনের আগ্রাসন বন্ধ করতে রাফাল ফাইটার জেট বায়ুসেনার অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠবে বলেই মত বায়ুসেনার।

রাফাল 'প্লাগ অ্যান্ড প্লে' অবস্থায় নেমেছিল দেশে
এই রাফাল যুদ্ধবিমানগুলির বেশ কয়েকটি ইন্ডিয়া-স্পেসিফিক এনহ্যান্সমেন্ট রয়েছে। যার মধ্যে কিছু ছোটোখাটো জিনিস ভারতেই যুক্ত করা হয়েছে। তবে প্রতিটি যুদ্ধ বিমানই 'প্লাগ অ্যান্ড প্লে' অবস্থায় নেমেছিল দেশে। পাশাপাশি এর মধ্যেই এয়ার-টু-এয়ার এবং স্কাল্প ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।

এই যুদ্ধবিমানের সর্বোচ্চ গতি ২২২৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা
রাফালের বন্দুক থেকে ১২৫ রাউন্ড গুলি ছোড়া যায়। তাছাড়া ১x৩০ মিলিমিটার জিআইএটি ৩০/এম৭৯ অটোক্যানন রয়েছে এতে। এয়ার-টু-এয়ার, এয়ার-টু-গ্রাউন্ড, এয়ার-টু-সার্ফেস পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম এই যুদ্ধবিমান। তাছাড়া বেশি উচ্চতায় এই যুদ্ধবিমানের সর্বোচ্চ গতি ২২২৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। কম উচ্চতা এটি সর্বোচ্চ ১৩৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ছুটতে পারে।

কম্ব্যাট রেঞ্জ ১৮৫০ কিলোমিটার
ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসা রাফাল সুপারক্রুজ-ম্যাক ১.৪। এটির কম্ব্যাট রেঞ্জ ১৮৫০ কিলোমিটার। এটির ফেরি রেঞ্জ ৩৭০০ কিলোমিটার। তাছাড়া এই যুদ্ধবিমানের সার্ভিস সিলিং ১৫,৮৩৫ মিটার। জি লিমিট বা মহাকর্ষ সীমা +৯-৩.৬। আপৎকালীন সময়ে তা +১১। এছাড়া এই ফাইটার জেটের রেট অফ ক্লাইম্ব ৩০৪.৮ মিটার প্রতি সেকেন্ড। এবং উইং লোডিং ৩২৮ কিলোগ্রামপ্রতি বর্গমিটার।

বিমানের বাকি স্পেসিফিকেশন
এই বিমানটি লম্বায় ১৫.২৭ মিটার। এর উইং স্প্যান ১০.৯ মিটার। উচ্চতা ৫.৩৪ মিটার। উইং এরিয়া ৪৫.৭ বর্গমিটার। রাফাল যুদ্ধবিমান যখন খালি থাকে তখন তার ওজন ১০,৩০০ কেজি। টেক অফের সময় এর মোট ওজন হয় ২৪ হাজার ৫০০ কিলোগ্রাম। একক সিটের যুদ্ধবিমানের জ্বালানি ক্ষমতা ৪৭০০ কেজি। দুই সিটের যুদ্ধবিমানে তা ৪৪০০ কেজি।
চিনের প্যাংগং প্ল্যান : উত্তরে জারি গোপন নির্মাণ কাজ, দক্ষিণে মোতায়েন সেনা ও ট্যাঙ্ক