বিজেপির ঘুম কেড়েছে এসপি-আরএলডির অভিনব আসন সমঝোতা, স্বপ্ন দেখা শুরু
বিজেপির ঘুম কেড়েছে এসপি-আরএলডির অভিনব আসন সমঝোতা, স্বপ্ন দেখা শুরু
উত্তরপ্রদেশে সামজবাদী পার্টি ও রাষ্ট্রীয় লোকদলের মধ্যে আসন সমঝোতা ফের নতুন করে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখানো শুরু করেছে। বিজেপির চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে সমাজবাদী পার্টি বা সপার সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব ও রাষ্ট্রীয় লোক দল তথা আরএলডি সুপ্রিমো জয়ন্ত চৌধুরীর জোট। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কৃষক-বিক্ষোভের ফায়দা তুলতে তারা হাত ধরেছে এবার।
বিজেপির কপালে ভাঁজ ফেলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট
বছর ঘুরলেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপির একাধিপত্যে এবার কোপ পড়েছে। যোগী সরকারের বিরুদ্ধে অ্যান্টি ইনকামবেন্সি ফ্যাক্টরকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের অবস্থান বেশ মজবুত করে তুলেছে সমাজবাদী পার্টি। এরপর আরএলডির সঙ্গে তাঁদের জোট বিজেপির কপালে ভাঁজ ফেলে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
সমঝোতা প্রক্রিয়ায় আবদ্ধ হয়েছেন অখিলেশ-জয়ন্ত
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে এবার এসপি কিছু আসনে তাদের প্রার্থী দিতে পারে আরএলডি প্রতীকে এবং আরএলডি মনোনীতরা একইভাবে তাদের প্রতীক ছেড়ে এসপির প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। নির্বাচনী সমঝোতা মসৃণ করতে এবং জোটের বন্ধন অটুট রাখতে অভিনব এই সমঝোতা প্রক্রিয়ায় আবদ্ধ হয়েছেন অখিলেশ যাদব ও জয়ন্ত চৌধুরীরা।
সপা ও আরএলডির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে কৃষক-বিক্ষোভ
কেন্দ্রের কৃষি আইনের প্রতিবাদে কৃষকদের বিক্ষোভ এখন শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি এবং রাষ্ট্রীয় লোক দল- উভয়ই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে কেন্দ্রের কৃষি আইনের উপর ক্ষোভকে কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর। কেন্দ্রের মোদী সরকারে কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিয়েও কৃষকদের ক্ষোভ রয়েই গিয়েছে। তাই সপা ও আরএলডির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে এই ক্ষোভের আগুন।
অখিলেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করতে প্রস্তুত জয়ন্ত
বিশেষত অখিলেশ যাদব এবং জয়ন্ত চৌধুরী যৌথ নির্বাচনী সমাবেশে আসন চুক্তি চূড়ান্ত করছে। এই চুক্তি অনুযায়ী আরএলডি ৪০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। উভয়েই যৌথ সমাবেশে সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থান নিয়েছেন। শুধু একে অপরের প্রতীকে লড়াই-ই নয়, তাদের জোট উত্তরপ্রদেশে জিতলে যেমন সপা উপ-মুখ্যমন্ত্রিত্বের অফার করেছে আরএলডিকে। আবার আরএলডি-র জাতীয় আহ্বায়ক জানিয়েছেন, তিনি অখিলেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
পশ্চম উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে জোট
প্রয়াত আরএলডি প্রধান অজিত সিং তাঁর পার্টিতে দুটি সম্প্রদায়ের পাশাপাশি এই অঞ্চলের উচ্চ এবং পশ্চাৎপদ বর্ণগোষ্ঠীর মধ্যে দূরত্ব দূর করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। এই প্রক্রিয়াটিকে সাহায্য করেছে কেন্দ্রের কৃষি আইন। কৃষকদের ক্ষোভের আগুন দুই সম্প্রদায় ও বর্ণগোষ্ঠীর মদ্যে বিভেদ ঘুচিয়ে দিয়েছে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে তারা এখন সঙ্ঘবদ্ধ, যা বিজেপির সম্ভাবনা অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
'কিসানো কা ইনকেলাব হোগা, ২০২২ মে বদলাও হোগা'
এছাড়া আরএলডি তাদের ইশতেহারে কর্মসংস্থানে মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ, এক কোটি যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান এবং কৃষকদের সমস্যাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রেখেছে। কেন্দ্র নতুন কৃষি আইন বাতিল করার পরে আরএলডি বলেছে যে এটি ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি)-এর মতো বিষয়গুলিতে চাপ বজায় রাখবে। এসপি-র সাথে সমাবেশে আরএলডি-র একটি স্লোগান ছিল 'কিসানো কা ইনকেলাব হোগা, ২০২২ মে বদলাও হোগা' (কৃষকের নেতৃত্বে বিপ্লব হবে, ২০২২ সালে পরিবর্তন হবে)। সমাজবাদী পার্টি শরিক হিসেবে আরএলডি-র এই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সহমত।
ছবি সৌ:ফেসবুক