এনসিপি-র সমর্থনে মহারাষ্ট্রে শেষ অবধি সরকার গড়তে চলেছে শিবসেনা?
জট খোলার কোনও চিহ্ন নেই মহারাষ্ট্রে। বিজেপি-শিবসেনার মধ্যে চলতে থাকা ক্ষমতার রেষারেষির মধ্যেই জানা গেল শরদ পাওয়ারের এনসিপি-র সমর্থ নিয়ে সরকার ঘটন করার কথা ভাবছে শিবসেনা।
জট খোলার কোনও চিহ্ন নেই মহারাষ্ট্রে। বিজেপি-শিবসেনার মধ্যে চলতে থাকা ক্ষমতার রেষারেষির মধ্যেই জানা গেল শরদ পাওয়ারের এনসিপি-র সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করার কথা ভাবছে শিবসেনা। সোমবার এক সূত্র জানিয়েছে, কংগ্রেসও এই বিষয়ে এনসিপির পথে হাঁটতে চলেছে। এর ফলে সরকার গঠনের পথ মসৃণ হতে চলেছে সেনার।
কিংমেকার শরদ
ফলাফল প্রকাশের ১১ দিন পরেও সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি মহারাষ্ট্রে। মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে তরজার মাঝে বেড়ে ছলেছে রাজনৈতিক চাপানউতর। বিজেপির সঙ্গে ক্রমশই বাড়ছে শিবসেনার দূরত্ব। এই পরিস্থিতিতে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে সেনা শিবির। দিওয়ালির পর শরদের বাড়ি গিয়ছিলেন সেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। সেনা প্রধান উদ্ধবের সঙ্গেও শরদের ফোনে কথা হয় বলে জানা গিয়েছিল।
ঝোপ বুঝে কোপ এনসিপি-র
বিজেপি-সেনা মনোমালিন্যর মধ্যেই ময়দানে নামেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। এই পরিস্থিতে সোমবার দিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে সম্ভাব্য জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করেন পাওয়ার। পরিস্থিতি বুঝে, সেনাকে সমর্থ জানিয়ে সরকার গঠনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন তিনি। যদিও সেনার তরফে দাবি করা হয়েছে যে শরদ পাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী হবেন না। মুখ্যমন্ত্রী হবে তাদেরই দলের।
১৭০ বিধায়কের সমর্থন সেনার সঙ্গে
গতকাল শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত দাবি করেন যে তাদের সঙ্গে ১৭০ জন বিধায়কের সমর্থন আছে। সেই সংখ্যাটা ১৭৫-ও হয়ে যেতে পাড়ে। এই পরিস্থিতে মুখ্যমন্ত্রী তাদের দলের হবে বলেই দাবি করেন তিনি। এই সংখ্যা তিনি এনসিপি, কংগ্রেস ও নির্দল বিধায়কদের মিলিয়েই বলেন।
সরকার গঠনের সমীকরণ
সদ্যপ্রকাশিত মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছে ১০৫টি আসন, শিবসেনার ঝুলিতে এসেছে ৫৬টি আসন। ২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সরকার গড়তে প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। দুই দলের সম্মিলিত সংখ্যা খুব সহজেই ম্যাজিক ফিগার অতিক্রম করেছে। কিন্তু সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বাধ সেধেছে সেনার মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি। ফলপ্রকাশের পরেই সেনা ফিফটি-ফিফটি ফর্মুলা নিয়ে সরব হয়। তবে এই বিষয়ে প্রথমে উচ্চবাচ্য না করলেও বিজেপি ঘুর পথে বুঝিয়ে দেয় যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের কুর্সি ছাড়বে না তারা। এই রেষারেষির মধ্যেই ঘোষণা করা হয় দেবেন্দ্র ফড়নবিশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের দিন। এদিকে সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে ৪৪টি ও এনসিপি-র ঝুলিতে রয়েছে ৫৪টি। এদের সঙ্গে সেনার ৫৬টি আসন যোগ করলে খাতায় কলমে সরকার গঠন সম্ভব।
ফড়নবিশের মেয়াদ শেষ ৮ তারিখ
এই অঙ্কের মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ তারিখ হল ৮ নভেম্বর। কারণ বর্তমান সরকারের মেয়াদ ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। এর আগে ৭ নভেম্বরের মধ্যে স্থিতিশীল সরকার গঠন সম্ভব না হলে মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হবে বলে দাবি করেছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা সুধীর মুঙ্গান্তিওয়ার। এদিকে একে অপরের স্নায়ুর চাপ বাড়াতে ব্যস্ত রয়েছে সেনা-বিজেপি, দুই দলই। এর মাঝে ঝুলে রয়েছে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া।
ফের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বিজেপি
অপর দিকে তলে তলে ফের নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে বিজেপি। মহারাষ্ট্র নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে শিবসেনার আচরণে ক্ষুব্ধ বিজেপি। রবিবার সাংবাদিকদের এই কথাই জানান রাজ্যের বিজেপি মন্ত্রী জয় কুমার রাওয়াল। মহারাষ্ট্রের ধুলে থেকে নির্বাচিত বিধায়ক রাওয়াল দাবি করেন যে বিজেপি নেতা-কর্মীরা আবার নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত।
আরএসএস-এর হস্তক্ষেপের দাবি
আরএসএস কর্মীরা আবার মহারাষ্ট্রের এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপের দাবি তুলে চিঠি লিখেছেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবতকে। একই দাবি শোনা গিয়েছে নীতিন গড়করি ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত সেনা নেতা কিশোর তিওয়ারির গলায়।
তৃণমূলের মন্ত্রীদের যোগাযোগ! মমতাকে এড়িয়ে কোন পদ্ধতিতে কাজ, ফাঁস করলেন বিজেপির সায়ন্তন