রাজস্থান সংকটে সোনিয়া গান্ধীর কাছে রিপোর্ট, গেহলট-ঘনিষ্ঠ ৩ বিধায়ককে শোকজ
রাজস্থান কংগ্রেসের সংকটে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন কংগ্রেসে সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট-ঘনিষ্ঠ ৩ বিধায়ককে শোকজ করলেন তিনি।
রাজস্থান কংগ্রেসের সংকটে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন কংগ্রেসে সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট-ঘনিষ্ঠ ৩ বিধায়ককে শোকজ করলেন তিনি। তিনজন বিধায়কের শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
রাজস্থানে বেসুরো তিন বিধায়কের মধ্যে রয়েছে চিফ হুইপ মহেশ জোশী, আরটিডিসির চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র পাঠক এবং শান্তি ধারিওয়াল। তাঁরা বিধায়কদের সমান্তরাল বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে প্রস্তাব পাস করার জন্য। রাজ্সথানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট তাঁর অনুগত বিধায়কদের বিদ্রোহের জন্য কংগ্রেসের অনেক নেতার রোষানলে পড়েছেন। এরপর তাঁকে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের ইনচার্জ অজয় মাকেন রবিবার একপ্রস্থ নাটকের পর জয়পুরে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁর রিপোর্টে ওই তিন বিধায়ক চিফ হুইপ মহেশ জোশী, আরটিডিসির চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র পাঠক এবং শান্তি ধারিওয়ালের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর শচীন পাইলট যাতে মুখ্যমন্ত্রী হতে না পারেন, তার জন্য একটা প্রস্তাব নেওয়া হয়।
২০২০ সালে অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে শচীন পাইলটের বিদ্রোহের বিষয়টি উত্থাপন করেই অশোক গেহলট শিবির এবার কোমর বেঁধেছিল। তারা চেয়েছিল শচীনের পথ আটকাতে। অশোক গেহলটও ইন্ধন দিয়েছিলেন। তিনিও চেয়েছিলেন তাঁর শিবিরের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হন তাঁর ইস্থফার পর। ফলে কংগ্রেসে আ়ড়াআড়ি বিভাজন তৈরি হয় রাজ্যে।
এমনকী তাঁরা দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশ পর্যন্ত অমান্য করছিলেন। একের পর এক বৈঠকে বসতে অস্বীকার করেছিলেন তাঁরা। দলীয় প্রধান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আবেদনেও কান দেয়নি তাঁরা। বলা হয়েছিল কংগ্রেস সবাপকি নির্বাচিত হলে তাঁকে সেই স্বাধীনতা দেওয়া হবে। উল্লেখ্য অশোক গেহলট দলের সর্বভারতীয় সভাপতি হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। কিন্তু অশোক গেহলটের বর্তমান ভূমিকায় সোনিয়া গান্ধী বিরক্ত হয়েছিলেন। তার ফলশ্রুতিতে গেহলটকেও সভাপতির রেস থেকে সরে যেতে হল, তার অনুগত বিধায়করাও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দুষ্ট হলেন।
এর আগে রাজস্থানে অশোক গেহলট যখনই দ্বৈরথের মুখে পড়েছেন, তখনই কোনও অজানা শক্তিতে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। একের পর এক তাবড় নেতা তাঁর চালে মাত হয়ে গিয়েছে। ১৯৯৮ সালে রাজেশ পাইলটও ২০০৮ সালে সিপি জোশীর মতো হেভিওয়েটদের মাত দেওয়ার পর ২০১৮-য় তিনি বাজি জিতেছিলেন শচীন পাইলটের মতো জনপ্রিয় তরুণ তুর্কি নেতার বিরুদ্ধেও। এবারও তাঁকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
২০০৮ সালে গেহলট ও জোশীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শচীন পাইলটের উত্থান তাঁদেরকে ফের কাছাকাছি এনে দিয়েছে। এখন গেহলট যখন রাজস্থানের কুর্সি ছাড়তে চলেছেন, তখন শচীন যাতে তা দখল করতে না পারেন, তার জন্য একদা 'প্রতিদ্বন্দ্বী' বর্তমান মিত্র সিপি জোশীকে এগিয়ে দিচ্ছেন তিনি। শচীনের যাত্রভঙ্গ করতেই তাঁর এমন উদ্যোগ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের মাশুল দিতে গিয়ে ছিটকে যেতে হল লড়াই থেকে।