সোনিয়া গান্ধী 'আমদানি করা দৈত্য', কংগ্রেস নেতারা 'রাবণ, কংস', বলছেন রামদেব
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসেও সোনিয়া গান্ধীর বিদেশি যোগসূত্র নিয়ে তোপ দেগেছিলেন যোগগুরু। বলেছিলেন, "যা বিদেশ থেকে আসছে, তা সব সময় ভালো হবে, এমন কোনও কথা নেই। আমরা সব কিছু আমদানি করছি। কিন্তু দেশের জিনিসও ভালো।" পরিষ্কার, সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর তুল্যমূল্য বিচার করেছিলেন তিনি।
এবার তিনি বলেছেন, "দেশে দৈত্য আমদানি করা হয়েছে। সোনিয়া গান্ধী এ দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। উনি গণতন্ত্রের কলঙ্ক। বিদেশি পুত্রবধূ সোনিয়া নিজের শ্বশুরবাড়িকে লুঠে শেষ করে দিয়েছেন। এই সব বিদেশি অপশক্তিকে পরাজিত করতে হবে। যারা এদের মদত দিচ্ছেন, সেই কংগ্রেস নেতাদেরও পরাজিত করতে হবে। রাজনাথ সিং, নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ, আপনারা এই বিদেশি দৈত্য আর রাবণ, কংসের দলকে পরাজিত করুন।"
রামদেবের আরও পরামর্শ, রায়বরেলি লোকসভা আসনে সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করুক উমা ভারতীকে। যদিও এর আগে উমাকে এই প্রস্তাব দলের তরফে দেওয়া হলেও তিনি তাতে রাজি হননি। শুধু বলেছেন, উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি থেকেই লড়বেন।
বিদেশি পুত্রবধূ সোনিয়া নিজের শ্বশুরবাড়িকে লুঠে শেষ করে দিয়েছেন : বাবা রামদেব
বাবাজির দাবি, কংগ্রেস লোকসভা ভোটে মাত্র ৫০-৬০টি আসন পাবে। দেশে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এখন জনমত খুবই প্রতিকূল। কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে ছুড়ে ফেললে দেশের আখেরে উপকার হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুধু সোনিয়া গান্ধী নয়, কংগ্রেসের আধিপত্যবাদী রাজনীতিকে বিঁধতে গিয়ে কিছুদিন আগে তিনি ছাড়েননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকেও। সোনিয়া গান্ধী নরেন্দ্র মোদীকে 'মৃত্যুর সওদাগর' বলে বর্ণনা করেছিলেন। তার জবাবে রামদেব বলেছিলেন, "জওহরলাল নেহরুর সময় কত দাঙ্গা হয়েছিল, কী তাঁর ভূমিকা ছিল, সেগুলোও খতিয়ে দেখা উচিত। আমি বলব, জওহরলাল নেহরু ছিলেন মৃত্যুর মহা সওদাগর।" মনমোহন সিংকেও বিঁধেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, "শিখ দাঙ্গায় কত নিরীহ শিখকে মারা হয়েছিল। সে সব নিয়ে চুপ কেন আমাদের শিখ প্রধানমন্ত্রী? ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার কথাই শুধু ওঁর মনে থাকে!"
হিন্দুত্ববাদী রামদেবকে কাজে লাগানো হল বিজেপি-র একটি সুন্দর কৌশল। কারণ দলের একাংশ মনে করেন, বর্ণহিন্দু ভোটব্যাঙ্কের ওপর ভালো প্রভাব রয়েছে বাবা রামদেবের। তাঁর যোগ, প্রাণায়মের দ্বারা সাধারণ হিন্দুদের একটা অংশ যথেষ্ট প্রভাবিত। ফলে রামদেব বিজেপি-র সঙ্গে থাকছেন, এটা দেখে ভোটারদের অনেকে পদ্মফুলে ভোট দেবেন। এ জন্য নরেন্দ্র মোদী, রাজনাথ সিং প্রমুখ বিভিন্ন জনসভায় বাবাজির সঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। রামদেবও খোলাখুলি সমর্থন জানাচ্ছেন বিজেপি-কে ভোট দেওয়ার জন্য।
পাশাপাশি, রামদেবের পতঞ্জলি আশ্রমের আয়কর নিয়ে এক সময় পিছনে পড়ে গিয়েছিল ইউপিএ সরকার। দিল্লির রামলীলা ময়দানে আন্না হাজারে যখন দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়ে অবস্থান করছিলেন, সেই সময় পাশে ছিলেন রামদেব। তার পরই রামদেবের কাছে আয়কর ফাঁকির অভিযোগ নিয়ে হাজির হয় আয়কর দফতর। বিস্তর আইনি টালবাহানা চলে। একে রামদেব 'প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ' বলে বর্ণনা করেছিলেন। সেই থেকে তিনি বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর আরও কাছাকাছি চলে আসেন। বিজেপি-ও সুযোগ বুঝে তাঁকে কাছে টেনে নেয়।