ভাটিয়া পরিবারে আনাগোনা ছিল আরও ৪ আত্মার, বুরারি কাণ্ডে ডায়েরির নোট দিল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য
বুরারী মৃত্যুর মামলায় দিল্লি পুলিশ দাবি করেছে ভাটিয়া পরিবারে সম্ভবত এমন কেউ ছিল যে ডায়েরির নির্দেশ সঠিকভাবে অনুসরণ করত না।
বুরারির মৃত্য়ুর ঘটনায় ভাটিয়া পরিবারের কেউ সম্ভবত ললিত ভাটিয়ার তথা তাঁর 'মৃত পিতা'-র নির্দেশ নামতে নারাজ ছিলেন। বুধবার পুলিশ জানিয়েছে ডায়েরিতে বলা ছিল তার ভুলের কারণেই ভাটিয়া পরিবার তপস্যা করে কিছু অর্জন করতে পারছে না। তাতে শুধু ভাটিয়ার বাবা নয়, মুক্তি পাচ্ছে না আরও ৪ আত্মা।
এই মামলায় মুখ খোলার জন্য একজনও জীবিত নেই। পরিবারের ১১ জনেরই একসঙ্গে মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় ঘটনাক্রম তৈরিতে পুলিশের একমাত্র ভরসা ভাটিয়াদের বাড়ি থেকে পাওয়া বেশ কয়েকটি ডায়েরি। যেগুলির হাতের লেখা বাড়ির বড়ছেলে ললিত ভাটিয়ার বলে প্রমাণিত হয়েছে। ভাটিয়া পরিবার বিশ্বাস করত ললিতের উপর তাঁর মৃত পিতার আত্মা ভর করত এবং তার মাধ্যমেই ভাটিয়া পরিবারকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিত।
সেই ডায়েরির লেখা থেকেই আভাস পাওয়া গিয়েছে পরিবারের রেউ হয়ত এইসব আচার অনুষ্ঠান মানতে চাইতেন না। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে লেখা ছিল, পরিবারের কারর পুরনো দোষের কারণে দীপাবলিতে ভাটিয়া পরিবার কিছু অর্জন করতে পারেনি। একই সঙ্গে একথাও লেখা ছিল যে পরের দীপাবলি হয়তো তাদের আর দেখা হবে না।
ডায়েরিতে যেমন ললিতের পুত্র ধ্রুবের মোবাইল ফোনের নেশার মতো পার্থিব বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে, আছে বেশ কিছু অপার্থিব বিষয়ও। ডায়েরির নোটে বলছ, ললিতদের পিতার আত্মার সঙ্গে তাঁদের পরিবারের আরও ৪ জন মৃতের আত্মাও পৃথিবী থেকে মুক্তি পায়নি। এই ৪ জন হলেন ললিতের শ্বশুর সজ্জন সিং, ললিতের বোন প্রতিভার স্বামী হীরা, ও আরেক বোন সুজাতা নাগপালের শ্বশুরবাড়ির দিকের আত্মীয় দয়ানন্দ ও গঙ্গাদেবী।
২০১৫ সালে ওই নোট লেখা হয়েছিল। বলা হয়েছিল হরিদ্বারে ক্রিয়া-কর্ম সারলেই আত্মা মুক্তি পায় না। এই সময় থেকেই ভাটিয়া পরিবারে তন্ত্র সাধনার শুরু হয়েছিল বলে পুলিশের বিশ্বাস। তবে পরিবারের কেউ যে এই তন্ত্র মন্ত্র মানত না তার আরও সূত্র পেয়েছে পুলিশ। প্রিয়াঙ্কা ভাটিয়ার বিয়ের প্রসঙ্গেও বলা হয়েছে, কেউ যথাযথ নির্দেশ মানছেন না বলে তাঁর বিয়েতে মাঙ্গলিক দোষের প্রভাব পড়বে।
ডায়েরি থেকে যত তথ্য মিলছে ততই পুলিশ নিশ্চিত হচ্ছে এটি একটি গণ-আত্মহত্যার ঘটনা। তবে তদন্তে কোনও রকম ফাঁক রাখতে চাইছে না তারা। মঙ্গলবারও প্রায় ২০০ জনকে জেরা করেছে পুলিশ। আপাতত তারা আশা করছে ময়না তদন্তের চুড়ান্ত রিপোর্টে বিষয়টি অনেকটাই খোলসা হবে। পাশাপাশি মৃতদের মননকে জানতে চাইছে তদন্তকারীরা। সেই জন্য ভাটিয়াদের সাইকোলজিকাল অটোপসিও করা হবে বলে জানা গিয়েছে।